জলপাইগুড়ি: দাদুর হাতের ম্যাজিকেই বদলেছে এই গ্রাম! জানেন কে এই দাদু? দাদুর আবার মিষ্টি একখান নামও আছে বটে! ইনি হলেন টুকুরবাড়ির (TukurBari) ‘ব্যাগ দাদু’ (Bag Dadu)!
ময়নাগুড়ি (Maynaguri) ব্লকের চুরাভাণ্ডার এলাকার টুকুরবাড়ি। এখানকার মহিলাদের হাতের নাগালে এসেছে নতুন রোজগারের পথ, বদলে যাচ্ছে পরিবারের অর্থনীতি। আর এই বদলের নেপথ্যে দাঁড়িয়ে একজন মানুষ। ৭৫ বছরের সাচান সরকার, যাঁকে গ্রামবাসীরা স্নেহে ডাকেন ‘ব্যাগ দাদু’ বলেই।
প্রায় ৪৫ বছর ধরে সাচানবাবু বাজার থেকে সংগ্রহ করা ব্যবহৃত প্লাস্টিকের চালের বস্তা দিয়ে হাতে তৈরি ব্যাগ বানান। টেকসই এই ব্যাগ পাইকারি বাজারে বিক্রি হয় ১০ টাকা দরে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার এই কাজ একদিন তিনি ভাগ করে নিতে চাইলেন গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে ,আর সেই সিদ্ধান্তই বদলে দিল টুকুরবাড়ির দিনবদলের গল্প।

দাদুর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে একে একে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠেন গ্রামের বহু মহিলা। কেউ বাড়ির উঠোনে বসে ব্যাগ বানান, কেউ আবার দল বেঁধে কাজ করেন। এখন পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিজেরাই গ্রামে আসেন ব্যাগ কিনতে। শুধু টুকুরবাড়ি নয়, এই গ্রামের হাতের তৈরি ব্যাগ পৌঁছে গিয়েছে জলপাইগুড়ি শহর ছাড়িয়ে ধূপগুড়ির বাজারেও।
ব্যাগ বিক্রি থেকে প্রতি মাসে বাড়তি টাকা আসছে মহিলাদের হাতে। কারও সংসারের খরচ হালকা হচ্ছে, কারও ছেলের পড়াশোনার খরচ জোগাচ্ছে এই আয়। আর সবচেয়ে বড় কথা…মুখে ফুটে উঠছে আত্মবিশ্বাসের হাসি।
আরও পড়ুন- জাঁকিয়ে শীত কবে থেকে? কী জানাল আবহাওয়া দফতর?
গ্রামেরই সুচতুর বর্মন বললেন, “দাদুর শেখানো কাজ না হলে আমরা এখনও বাড়ির চার দেয়ালের মধ্যেই আটকে থাকতাম। এখন নিজের আয়ের টাকায় নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারি।”
স্বল্প পুঁজির মধ্যে গ্রামকে স্বনির্ভরতার পথে নিয়ে যাওয়ার এই অনন্য উদ্যোগ এখন টুকুরবাড়িকে সাজাচ্ছে নতুন আশার আলোয়। ‘ব্যাগ দাদু’ তাই শুধু একজন শিল্পী তো বটেই সঙ্গে একটি গোটা গ্রামের পরিবর্তনের মুখ!
দেখুন আরও খবর-







