ওয়েব ডেস্ক: আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) ও কোচবিহারের বিভিন্ন প্রান্তে ফের বাড়ছে হাতির আনাগোনা। চা বাগান থেকে শুরু করে গ্রাম অঞ্চলের ফসলের জমি, এমনকী জনবসতিতেও প্রায়ই দেখা যাচ্ছে বন্য হাতির দলকে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসল, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে ঘরবাড়ির। এবার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে বনদফতর। আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকাতে রাতভর পেট্রোলিং থেকে শুরু করে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারিতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে জলদাপাড়া বনদফতর।
বনদফতর সূত্রের খবর, হাতির চলাচলের সম্ভাব্য এলাকাগুলিতে রাতভর টহল চালানো হচ্ছে। আলিপুরদুয়ার, মাদারিহাট, জলদাপাড়া, শালকুমার, কালচিনি, লতাবাড়ি, মেন্দাবাড়ী, সাতালি সহ একাধিক সংবেদনশীল অঞ্চলগুলিতে বিশেষ পেট্রলিং টিম মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি, ফসলের ক্ষতি রোধে চালু হয়েছে ড্রোন নজরদারি ব্যবস্থা। আকাশপথে নজর রেখে হাতির অবস্থান ও চলাচল রিয়েল টাইমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, যাতে দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
আরও পড়ুন: এলিফ্যান্ট করিডরে রেলের গার্ডরেল! আপত্তি বনদফতরের, শুরু বিতর্ক
হাতির করিডরগুলিতে বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা, সাইনেজ বোর্ড ও সাইরেন সিস্টেম, যাতে স্থানীয় মানুষ ও গাড়িচালকেরা আগেভাগেই সতর্ক হতে পারেন। রেল ও ন্যাশনাল হাইওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বনদফতরের সমন্বয় বৈঠকও শুরু হয়েছে, যাতে ট্রেন বা যান চলাচলের সময় হাতিদের নিরাপদে পারাপারের ব্যবস্থা রাখা যায়।
গ্রামবাসীদের সচেতন করতে প্রতিটি হাতি প্রবণ অঞ্চলে চালু হয়েছে ‘সেফটি ড্রিল’ প্রশিক্ষণ। কীভাবে হাতির কাছাকাছি এলাকায় আচরণ করতে হবে, কীভাবে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হবে, এসব শেখানো হচ্ছে স্থানীয়দের। স্কুল পর্যায়েও চলছে অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্প, যাতে শিশুদের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও সহাবস্থানের বার্তা পৌঁছে যায়।
বনদফর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই একটি Standard Operating Procedure (SOP) তৈরি করা হয়েছে। তাতে হাতির গতিবিধি ট্র্যাকিং, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ, জরুরি উদ্ধার ও বনকর্মীদের দায়িত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারিত। বন আধিকারিকদের বক্তব্য, “হাতিরা আমাদের প্রতিবেশেরই অংশ। সচেতনতা, প্রযুক্তি ও দ্রুত পদক্ষেপ এই তিন মিলেই মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সহাবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব।” এই সর্বাত্মক উদ্যোগে আশা করা হচ্ছে, আগামি দিনে আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার অঞ্চলে হাতি সংক্রান্ত দুর্ঘটনা ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমবে।
দেখুন ভিডিও
