Thursday, August 28, 2025
HomeScrollভালোবাসার রঙ লাল, কিন্তু ইতিহাস রক্তাক্ত! ভ্যালেন্টাইনস ডে-র প্রেম, মৃত্যু আর বিদ্রোহের...

ভালোবাসার রঙ লাল, কিন্তু ইতিহাস রক্তাক্ত! ভ্যালেন্টাইনস ডে-র প্রেম, মৃত্যু আর বিদ্রোহের কাব্য

ওয়েব ডেস্ক: সরস্বতী পুজো (Saraswati Puja) সবে শেষ, বাতাসে এখন বসন্তের গন্ধ। তবে প্রেমের মরসুম কিন্তু শেষ হয়নি! গোটা ফেব্রুয়ারি জুড়েই ভালোবাসার আবহ, আর তার মধ্যমণি ১৪ ফেব্রুয়ারি—বিশ্বের সবচেয়ে রোমান্টিক দিন, ভ্যালেন্টাইনস ডে। প্রেমিক-প্রেমিকারা একে অপরকে ফুল, চকলেট, উপহার দিয়ে বিশেষ সময় কাটান, কিন্তু জানেন কি এই প্রেমের দিনের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক ভয়াবহ কাহিনি? যে দিনটিকে এখন ভালোবাসার উদযাপন হিসেবে দেখা হয়, একসময় সেটাই ছিল নিষেধাজ্ঞা ভাঙার প্রতীক, ভালোবাসার জন্য আত্মত্যাগের দিন!

পঞ্চম শতাব্দীর শেষে পোপ গেলাসিয়াস ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইনস ডে হিসেবে ঘোষণা করেন, তবে ইতিহাস বলে এর শেকড় অনেক গভীরে। প্রাচীন রোমে ১৫ ফেব্রুয়ারিতে পালিত হত লুপারকালিয়া উৎসব, যেখানে উর্বরতা আর প্রজননের আনন্দে মাতত রোমানরা। পশু বলিদান, ভাগ্য নির্ধারণের খেলা—সব মিলিয়ে এক অন্যরকম উদযাপন চলত। কিন্তু খ্রিস্টধর্মের প্রভাবে এই পৌত্তলিক রীতিগুলো ধীরে ধীরে নিষিদ্ধ হতে থাকে। শেষমেশ পোপ গেলাসিয়াস লুপারকালিয়াকে বাতিল করে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইনের নামে উৎসর্গ করেন, যদিও এর সঙ্গে সত্যিকারের কোনো ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

আরও পড়ুন: কবে থেকে শুরু প্রেমের সপ্তাহ?

অন্য এক কিংবদন্তি বলে, রোমের এক পুরোহিত সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ভালোবাসার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন। সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াসের রাজত্বকালে প্রেম ও বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল, কারণ তার বিশ্বাস ছিল, অবিবাহিত পুরুষরাই শ্রেষ্ঠ সৈনিক। কিন্তু ভালোবাসার শক্তিকে কে-ই বা রুখতে পারে? সেন্ট ভ্যালেন্টাইন গোপনে প্রেমিক-প্রেমিকাদের বিয়ে দিতেন। এই অপরাধের শাস্তি ছিল মৃত্যু! কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় তিনি এক রক্ষীর মেয়েকে সুস্থ করেছিলেন, আর প্রেমে পড়ে তাকে একটি চিঠি লেখেন, যেখানে লেখা ছিল—‘লাভ ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন’। সেই শেষ প্রেমপত্রই আজকের ভ্যালেন্টাইনস ডে-র প্রেরণা!

তবে ভ্যালেন্টাইনস ডে-কে ভালোবাসার দিন হিসেবে পরিচিত করেছিলেন ১৪শ শতাব্দীর বিখ্যাত কবি জিওফ্রে চসার। তার ‘দ্য পার্লামেন্ট অফ ফাউলস’ কবিতায় বলা হয়েছিল, এই দিনে পাখিরা তাদের সঙ্গী বেছে নেয়। সেই কবিতাই ভালোবাসার এই দিনের জন্ম দেয়, ধীরে ধীরে সেটি ইউরোপ থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। আর বাংলায়? রবীন্দ্রনাথের ‘রক্তকরবী’-র রঞ্জন যেন সেই বিদ্রোহী প্রেমিক, যে ভালোবাসার জন্য স্বেচ্ছায় আত্মত্যাগ করে। তাই বাঙালির ভালোবাসার রঙ শুধু লাল গোলাপে নয়, রয়েছে সাহিত্যের পাতায়, বিদ্রোহের চেতনায়!

প্রেম কি শুধুই উপহার আর গোলাপে সীমাবদ্ধ? না, প্রেম মানে প্রতিবাদ, প্রেম মানে বাধা ভাঙার সাহস! রোমের কারাগার থেকে বাংলা সাহিত্যের পাতা—ভালোবাসা সবসময়ই ছিল বিদ্রোহীদের হাতিয়ার। আজও প্রেমিক-প্রেমিকারা যখন সমাজের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে একে অপরের হাত ধরে, তখন তারা সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের উত্তরসূরি! প্রেম যে সহজ পথ নয়, তা জানেন রঞ্জন-নন্দিনীও! তাই ১৪ ফেব্রুয়ারি শুধু একটি তারিখ নয়, এটি ভালোবাসার জন্য লড়াইয়ের দিন, প্রেমের জন্য বেঁচে থাকার শপথ

দেখুন আরও খবর:

Read More

Latest News