চন্দননগর: চন্দননগরের (Chandannagar) রাস্তায় এখন যেন জনজোয়ার। আলোয় মোড়া শহর, প্রতিমায় বৈচিত্র্য, আর প্রতিদিনের দর্শনার্থীর ঢল। সব মিলিয়ে জগদ্ধাত্রী পুজোর (Jagaddhatri 2025) কেন্দ্র যেন এই চন্দননগরই! কিন্তু যাঁরা ভিড়কে ভয় পান, তাঁদের জন্যও রয়েছে একদম অন্য বিকল্প। খাস কলকাতার (Kolkata) বুকেই এমন কিছু বনেদি বাড়ির পুজো, যা ঐতিহ্য, শিল্প আর শান্তির এক অনন্য মেলবন্ধন।
বৌবাজারের জগদ্ধাত্রী পুজো: শহরের বুকে এক গোপন রত্ন। বৌবাজারের সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের কাছেই রয়েছে এক বনেদি বাড়ির পুজো, যা বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যায় না। কিন্তু ভিতরে পা রাখলেই দেখা মিলবে দেবী জগদ্ধাত্রীর মন্দিরের। একদিনের জন্য হলেও এই পুজোয় দেখা মেলে ঐতিহ্যের রেশ, ধুনো পোড়ানোর গন্ধ আর পরম ভক্তির আবহে মিশে থাকা উৎসবের ছোঁয়া।
আরও পড়ুন: গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে তোলপাড় হবে বাংলা! কবে থেকে শুরু দুর্যোগ?
শোভাবাজার রায়বাড়ি: বিন্ধ্যবাসিনী জগদ্ধাত্রীর আসন রায়বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজো একেবারে আলাদা। এখানে দেবী বিরাজ করেন বিন্ধ্যবাসিনী জগদ্ধাত্রী রূপে। ময়ূরের নাচ, ধুনোর গন্ধ আর দেবীরূপী নারীদের আশীর্বাদ। এই সব মিলিয়ে তৈরি হয় এক পবিত্র পরিবেশ, যা এখনও টিকে আছে শতাব্দীর ঐতিহ্য বহন করে।
ঐতিহ্যের ধারায় দে বাড়ি থেকে মৈত্র বাটি
কলকাতার বিভিন্ন বনেদি বাড়িতে আজও বজায় আছে এই পুজোর রীতি। দে বাড়ি, মৈত্র বাটি, বা কর্মকার পরিবারের মন্দির। মন্দিরময় ইতিহাসের ছাপ। শোনা যায়, ১২৯৮ বঙ্গাব্দে কেদারনাথ কর্মকার প্রথম এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এখনও তাঁর বংশধরেরাই এই পুজোর দায়িত্ব সামলান নিষ্ঠার সঙ্গে। একতলা এই মন্দিরের উঠোন ঘিরে রয়েছে থামযুক্ত বারান্দা ও ঘর। উঠোনের পূর্ব দিকে বারান্দা, আর পিছনের গর্ভগৃহে, ঘোটকমুখী সিংহের উপরে উপবিষ্টা দেবী। সকাল ও সন্ধ্যায় দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে দরজা। দিনের বাকি সময়ে চলে প্রস্তুতি, ফুল সাজানো, প্রদীপ জ্বালানো আর ভক্তদের আগমনের অপেক্ষা।
চন্দননগরের থিম, আলো আর শিল্পকলার খ্যাতি থাকলেও, কলকাতার বনেদি বাড়িগুলির জগদ্ধাত্রী পুজো শান্ত সৌন্দর্যে অনন্য। এখানে নেই ভিড়ের হুড়োহুড়ি, আছে মন্ত্রোচ্চারণ, আর প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে টিকে থাকা আস্থা।
দেখুন আরও খবর:







