Tuesday, November 11, 2025
HomeScrollপ্রায় দু’ বছর পর মায়ের কোলে ফিরল ‘মৃত’ ঘোষণা করা নবজাতক
Purba Medinipur

প্রায় দু’ বছর পর মায়ের কোলে ফিরল ‘মৃত’ ঘোষণা করা নবজাতক

দু’ লক্ষ টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করে দেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ

তমলুক: অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি! প্রায় দু’ বছর আগে মৃত বলে ঘোষিত নবজাতক সন্তানকে অবশেষে ফিরে পেলেন মা। জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে অবসান হল দীর্ঘ আইনি জটিলতার। সন্তানকে কোলে নিয়ে আনন্দে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) পটাশপুর থানার আড়গোয়াল গ্রামের প্রতিমা পাল (District news)।

২০২৩ সালের আগস্টে প্রতিমা পাল বাচ্চা প্রসবের জন্য এগরার এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। ২৪ আগস্ট সকালে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ পরিবারকে জানায়, নবজাতক জন্মের পরপরই মারা গেছে এবং মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয়েছে। শোকগ্রস্ত পরিবার আর প্রশ্ন তোলেনি।

আরও পড়ুন: ‘প্রতি ৪ জনে ১ জনের দরজায় এখনও পৌঁছায়নি BLO’, আজই শেষ দিন—উদ্বেগ ভোটারদের মধ্যে

কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ, নার্সিংহোমের মালিক এক দালালের মাধ্যমে রামনগরের এক মহিলার হাতে প্রায় দু’ লক্ষ টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করে দেন। চার দিন পর, ২৮ আগস্ট, ওই মহিলা টিকা দিতে শিশুটিকে নিয়ে দীঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র চাইলে তিনি তা দিতে না পারায় সন্দেহ হয়, এবং পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

তদন্তে জানা যায়, ওই মহিলা টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে নার্সিংহোম থেকে কিনেছেন। পুলিশ নার্সিংহোমের মালিক, তাঁর স্ত্রী, দালাল ও ক্রেতা মহিলাকে গ্রেফতার করে। পরে ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়, প্রতিমা পালই শিশুটির জন্মদাত্রী। তবে আদালতের নির্দেশে শিশুটিকে কাঁথির এক হোমে রাখা হয়, যেখানে কেটে যায় প্রায় দু’ বছর।

অবশেষে চলতি মাসের ৩ তারিখে প্রতিমা পাল জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের দফতরে যোগাযোগ করেন। সচিব সুদীপা ব্যানার্জির নেতৃত্বে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আদালত, থানা ও হাসপাতালের প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করে মাত্র দশ দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ হয় আইনি প্রক্রিয়া। সোমবার বিকেলে নিমতৌড়ির চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির অফিস থেকে প্রতিমা পালের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁর শিশুপুত্রকে।

আবেগভরা গলায় প্রতিমা বলেন, “যেদিন নার্সিংহোমে আমার ছেলে জন্মেছিল, সেদিনই বলা হয়েছিল সে মারা গেছে। পরে জানতে পারি, আমার সন্তান জীবিত এবং অন্যের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আজ তাকে ফিরে পেয়ে মনে হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ পেলাম।”

জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব সুদীপা ব্যানার্জি জানান, “দিন কয়েক আগে প্রতিমা দেবী আমাদের দপ্তরে এসেছিলেন। আমরা সমস্ত নথি যাচাই করে আদালত ও প্রশাসনের সহায়তায় মাত্র দশ দিনের মধ্যে শিশুটিকে মায়ের হাতে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি।”

দেখুন আরও খবর:

Read More

Latest News