ঝাড়গ্রাম: জেলা পরিষদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেফতার সিভিক ভলেন্টিয়ার, জাল নথি–ভুয়ো নিয়োগপত্রে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। সরকারি নথি জাল করে জেলা পরিষদে গ্রুপ–ডি পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে দেড় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন জাম্বনী থানার সিভিক ভলেন্টিয়ার দিপেন্দু পাল। শনিবার রাতে ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে জামবনি থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। রবিবার দুপুরে তাঁকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে মহামান্য বিচারক চার দিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, ডেবরা থানার লোয়াদা গ্রামের মানখণ্ড এলাকার বাসিন্দা অমিত কল পথশ্রী প্রকল্পে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করতে মার্চ মাসে জামবনি থানার মুড়াকাটি গ্রামে আসেন। সেখানে নীলকান্ত পালের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি। বাড়িওয়ালার ছেলে দিপেন্দু পাল, যিনি জামবনি থানার সিভিক ভলেন্টিয়ার। তিনি অমিতকে জানান যে তাঁর স্ত্রী পিঙ্কি মিদ্যা কলকে জেলা পরিষদে গ্রুপ–ডি পদে চাকরি পাইয়ে দিতে পারবেন।অভিযোগ, দিপেন্দু ও তার সহযোগীরা প্রথমে সরকারি “কানেকশন” ও বিভিন্ন জাল নথি দেখিয়ে চাকরি নিশ্চিত হওয়ার আশ্বাস দেয়। এরপর দেড় লক্ষ টাকা দাবি করে। ১৪ মার্চ কল দম্পতি দিপেন্দুকে এক লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকা দেন। শীর্ষ সরকারি দফতরের নামে জাল করা বিভিন্ন কাগজ দেখিয়ে আরও বিশ্বাস অর্জন করে প্রতারক চক্র। তারপর পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সরকারি মেল আইডি নকল করে পিঙ্কি মিদ্যা কলের ব্যক্তিগত মেলে পাঠানো হয় ইন্টারভিউ কল লেটার। ২০ মার্চ দিপেন্দু সহ কয়েকজন দম্পতিকে নিয়ে যায় পাবলিক সার্ভিস কমিশনের দফতরে। সেখানে ঘোরাঘুরি করিয়ে সরকারি লোগো ও দফতরের প্যাডে ছাপা ভুয়ো নিয়োগপত্র দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত কাজের চাপ! অসুস্থ বিএল, চিকিৎসাধীন হাসপাতালে
এরপর আরও টাকা দাবি করলে ২৭ মার্চ সাবিনা বিশ্বাস নামে এক সহযোগীর অ্যাকাউন্টে আরও ১৩ হাজার টাকা পাঠাতে বাধ্য হন কল দম্পতি। সবশেষে ওই ভুয়ো নথি নিয়ে মেদিনীপুর জেলা পরিষদে হাজির হলে বিস্ময়ে হতবাক হন তাঁরা। সরকারি দফতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই ধরনের নিয়োগপত্র সম্পূর্ণ জাল এবং কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়াই চলছিল না। এরপরই জামবনি থানায় লিখিত অভিযোগে সিভিক ভলেন্টিয়ার কে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দিপেন্দু পালের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জাল নথি তৈরি এবং সরকারি সংস্থার পরিচয় ভুয়োভাবে ব্যবহার করার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। রবিবার অর্থাৎ আজ ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হয় অভিযুক্তকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিপেন্দু পাল দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্রের সঙ্গে যুক্ত। একাধিক জায়গায় ভুয়ো নিয়োগপত্র, নকল সিল–স্ট্যাম্প এবং সরকারি লোগো ব্যবহার করে প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এই চক্রে আর কারা জড়িত, তা জানতে দিপেন্দুকে জেরা করছে তদন্তকারী দল। সম্ভাব্য অন্যান্য সহযোগীদের খোঁজে অভিযানও শুরু হয়েছে।
দেখুন খবর







