Sunday, August 17, 2025
HomeScrollঅদিতির সঙ্গে সাদা কালো | মহাকুম্ভের আর্তনাদ
Aditir Songe Sada Kalo

অদিতির সঙ্গে সাদা কালো | মহাকুম্ভের আর্তনাদ

বিশাল দাদলানি, গায়ক, বলেছেন তাহলে যোগীজি এই জল খেয়ে দেখান

Follow Us :

নমস্কার আমি অদিতি, শুরু করছি কলকাতা টিভির নতুন অনুষ্ঠান সাদা কালো। যেমনটা রোজ করে থাকি, একটা বিষয়ের অবতারণা আর সেই বিষয়কে নিয়ে অন্তত দুটো ভিন্ন মতামতকে এনে হাজির করা, যাতে করে আপনারা আপনার মতটাকে শানিয়ে নিতেই পারেন আবার আপনার বিরুদ্ধ মতটাকেও শুনে নিতে পারেন।

সে এক বিষম মন্থনের পরে উঠে এল অমৃতকুম্ভ, ১৪৪ বছর পরে সে পূর্ণ হবে, ঝরে পড়বে মানব সভ্যতার উপরে, সে ক্রমে অর্ধ হবে, সিকি হবে, আবার পূর্ণতা পাবে। খানিক আমাদের চাঁদের মতো, একদিনই পূর্ণিমা, তারপর ক্ষয়, তারপর গাঢ় অন্ধকার, এবং ক্রমশ আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে। তফাৎ হল পূর্ণিমার আলো তো দেখা যায়, সেই কুম্ভ, সেই কলসিভরা অমৃত কোথায় প্রভু? সেই কলসি নাকি উপুড় হয়ে পড়বে ওই সঙ্গমে, প্রয়াগরাজের সঙ্গমে, এলাহাবাদের সঙ্গমে, গঙ্গা-যমুনার সঙ্গমে। আর তাই লক্ষ কোটি মানুষের আকুলি বিকুলি ভিড়, যদি সেই অমৃতের এক ফোঁটাও নসিব হয়। আমাদের হিন্দুধর্মের এক মজা আছে, সেখানে রেলের দুই লাইনের মতো সমান্তরাল দূরত্বে চলতে থাকে দুই মতবাদ। এক হল কর্মের, যেমন কর্ম তেমন ফল, এই জন্মে যা যা করবে তাই ফেরত পাবে আগামী জন্মে। পুরুষার্থ আর কর্মফলের যোগফল হল এই জন্ম, পরের জন্মে তার হিসেব নিকেশ। অন্য ধারা হল অদৃষ্টবাদ, যা হওয়ার তা হবেই হবে, সব কিছু পূর্ব নির্ধারিত, সবকিছু, প্রত্যেক প্রাপ্তি, প্রত্যেক লাভ লোকসান, আনন্দ এবং দুঃখ বহু আগে থেকেই পূর্ব নির্ধারিত। খেয়াল করে দেখুন দুটো দর্শন একে অন্যের বিপরীত, একে অন্যকে অস্বীকার করেই চলতে থাকে, কিন্তু দুইই হিন্দু ধর্ম। আপনি ঘড়া ঘড়া অমৃত খেয়েও আপনার ভাগ্য, আপনার ডেসটিনিকে বদলাতে পারবেন না। এমনটা যাঁরা বলেন তাঁরা কিন্তু গেছেন ওই কুম্ভ মেলায়, যাঁরা বিশ্বাস করেন কর্মই এনে দেবে ফল, তাঁরাও গেছেন। শেখ নিসার হুসেনের ছেলে জনার্দন সিং হয়ে পাঁপড়, ভুজিয়ার দোকান দিয়েছে, পুনম দুবে পাটনাতে পকেটমার গ্যাংয়ের চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড়, সে তার গ্যাং নিয়ে মহাকুম্ভে হাজির বড় ইভেন্টের থেকে বড় আয় করার জন্য। দীপক পরাঞ্জপে তুলোচাষি, বাবা সুইসাইড করেছিল, তারপরের বছরেই বৃষ্টি ভালো হয়েছে, তুলোর দাম পেয়েছে, পিতৃপুরুষের মুক্তির জন্য সেও কুম্ভ মেলায়। মহাকুম্ভের জনারণ্যে হাজির ছিল মুম্বই থেকে টাকাপয়সা নয়ছয় করে পালিয়ে যাওয়া ৫৮ বছর বয়সি লল্লন সিং, ধরা পড়ে গেছে, ।চোর, ডাকাত, আস্তিক, নাস্তিক, লেখক, কবি, শিল্পী, নায়িকা, নায়ক, গায়ক, হুদো হুদো রাজনৈতিক নেতারা হাজির হয়েছে নদী সঙ্গমে, যদি পাওয়া যায় সেই এক ফোঁটা অমৃত।

আরও পড়ুন: অদিতির সঙ্গে সাদা কালো | দিল্লির রাজনীতি আর কেজরিওয়ালের কিসসা

এদিকে অন্যদিকটাও দেখুন, একবস্ত্রে যখন ভারতের গ্রাম, শহরের বস্তি থেকে পোঁটলাতে শুকনো রুটি আর ক’টা টাকা সম্বল, তাই নিয়েই মানুষ রওনা দিয়েছেন পুণ্যস্নানে, ঠিক তখন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় কমবেশি হাজার ৪০ টাকা খরচ করে জলপথেই চলে গেছেন ডুব দিতে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন বিশাল সুরক্ষা বাহিনী, তাঁর এই পুণ্যস্নানে কিছু না হলেও লাখ তিরিশ তো খরচ হবেই। দেশের প্রধানমন্ত্রীও সেই এক ফোঁটা অমৃতের জন্যই গেছেন, যাঁর প্রতিদিন সুরক্ষার জন্য একদিনেই প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ হয়, এখানে খানিক বেশিই খরচ হয়েছে, আমি নিশ্চিত। সারা দেশের বিভিন্ন দলের, বিভিন্ন মতের এমএলএ, এমপি, মন্ত্রীসান্ত্রীরা গেছেন, তাঁদের মোট খরচের পরিমাণ কোনওভাবেই দশ কোটির কম হতেই পারে না। যে জলে নাকি ভাসছে মানুষের বর্জ্য পদার্থ, তাও আবার স্বাভাবিক মাত্রার থেকে অনেক বেশি, এ রিপোর্ট উত্তরপ্রদেশ সরকারের পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের, যা শোনার পরেই যোগীজি সাফ জানিয়েছেন, চান করা কেন, এ জল পান করার ক্ষেত্রেও কোনও অসুবিধে নেই। প্রখ্যাত গ্যাস্ট্রোএন্ট্রলজিস্ট ডাঃ সত্যপ্রিয় দে সরকার বলেছেন যে মাত্রায় কলিফর্ম আছে তা চান করার জন্যও ব্যবহার করা উচিত নয়। বিশাল দাদলানি, গায়ক, বলেছেন তাহলে যোগীজি এই জল খেয়ে দেখান। তো এখনও তিনি সেই অবাক জলপান করেননি। কিন্তু সম্ভবত সেই জল যথাসম্ভব কম গায়ে লাগানোর জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী জল নিরোধক জ্যাকেট পরে চান করেছেন, সে জ্যাকেট ক’জনই বা কিনতে পারেন। তবে অমন জ্যাকেট পরে মহাকুম্ভের জলে ডুব দেওয়া বেশ রগড়ের, তা বলা বাহুল্য। এবং ছবি ও খবরে প্রকাশ আমাদের দেশের আসলি মালিক মুকেশ আম্বানির পুত্রবধূ এক সালোয়ার কামিজ পরে চান করতে গিয়েছিলেন, সেই সালোয়ার কামিজের দাম নাকি এক লক্ষ ন’ হাজার টাকা। মানে খুব পরিষ্কার যা বলতে চাইছি, পূর্ণকুম্ভ হলেও সে কুম্ভের সবটুকু অমৃত বহু আগেই সাঁটিয়ে বসে আছেন এই সব লোকজনেরা, আম আদমিদের জন্য এক ফোঁটাও পড়েই নেই। তবুও সেই এক ফোঁটা পুণ্যের লোভে মানুষ যান, যাবেন এই তীর্থক্ষেত্রে, কুম্ভে মহাকুম্ভে, চার ধামে, কৈলাসে, মানস সরোবরে। যত বেশি অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তা মানুষকে ঘিরে ধরবে, তত বেশি সেই দুর্দিন কাটানোর এই সহজ উপায়ের কাছে মানুষ আত্মসমর্পণ করবেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Election Commission | ভোট চুরি নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে ধুয়ে দিলেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য
00:00
Video thumbnail
West Bengal | Election Commission | পশ্চিমবঙ্গে কবে SIR? কী জানাল নির্বাচন কমিশন? দেখুন বিগ আপডেট
04:04:55
Video thumbnail
Rahul Gandhi | দেশজুড়ে SIR বি/ত/র্ক, এই আবহে রাহুলের পদযাত্রা, নির্বাচন কমিশনের প্রেস কনফারেন্স
04:54:51
Video thumbnail
Rahul Gandhi | ভোট অধিকার যাত্রা, কী বলছেন রাহুল গান্ধী? দেখুন সরাসরি
08:57
Video thumbnail
Election Commission | ৬ মাসে ২২ লক্ষ ভোটার মৃ/ত, কী ব্যাখ্যা কমিশনের?
06:42
Video thumbnail
Rahul Gandhi | Bihar | রাহুলের বিহার যাত্রার আগে কি অবস্থা নির্বাচন কমিশনের? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
10:43:50
Video thumbnail
Rahul Gandhi | Election Commission | সাত দিনের ডেডলাইন রাহুল vs কমিশন, কী হবে এবার?
06:05
Video thumbnail
Election Commission | বিহারে SIR-এর পর নির্বাচন কমিশনের প্রথম সাংবাদিক বৈঠক, দেখুন সরাসরি
04:05:11
Video thumbnail
EC | Rahul Gandhi | 'ক্ষমা চান দেশবাসীর কাছে', নির্বাচন কমিশনের নি/শা/নায় রাহুল গান্ধী
06:03
Video thumbnail
Election Commission | West Bengal | বাংলায় কবে SIR? কী বলল ইলেকশন কমিশন? জেনে নিন এই ভিডিয়োয়
11:01