ওয়েব ডেস্ক: পকসো (POCSO) আইনের অধীনে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করার রায় বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই সম্পর্ক কামনার ফল নয়, বরং প্রেমের ফল। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বেঞ্জামিন কার্ডোজো-র বেঞ্চ এই মামলায় বিশেষ সহানুভূতির সঙ্গে রায় প্রদান করেন এবং সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে অভিযুক্তকে মুক্তি দেন।
মামলার পটভূমি অনুযায়ী, ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীর সঙ্গে বারংবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন অভিযুক্ত। পরবর্তীকালে কিশোরী সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়লে অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয় এবং পকসো আইনের অধীনে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান।
আরও পড়ুন: দেশের রাজধানীর নাম ‘দিল্লি’ নয়, ‘ইন্দ্রপ্রস্থ’ হোক! দাবি BJP সাংসদের
সেই মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত মন্তব্য করেন, “আইনের কাছে সবচেয়ে গুরুতর অপরাধীরাও আদালত থেকে সহানুভূতির মাধ্যমে ন্যায়বিচার পায়। এই মামলায় আইনকে ন্যায়বিচারের পক্ষে নতিস্বীকার করতে হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তের স্ত্রী, অর্থাৎ ভিকটিম, স্বেচ্ছায় একটি হলফনামা জমা দিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তাঁদের একটি শিশু সন্তানও রয়েছে। তাই পরিবারিক ও মানবিক দিক বিবেচনা করে আদালত বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে দোষমুক্তির নির্দেশ দেয়।
এদিকে বিচারপতি বেঞ্জামিন কার্ডোজো মন্তব্য করেন, “আইনের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য সমাজের কল্যাণ। এখানে অপরাধটি লালসা থেকে নয়, প্রেমের আবেগ থেকেই জন্ম নিয়েছে।”
এই মামলায় আদালত যে রায় দিয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আবেদনকারী স্ত্রী ও সন্তানকে ত্যাগ করতে পারবেন না, তাঁদের মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন নিশ্চিত করতে হবে। আদালত আরও জানিয়েছে যে, এই শর্ত লঙ্ঘন হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে— এই রায় একান্তভাবে ‘বিশেষ পরিস্থিতিতে’ দেওয়া হয়েছে, অন্য কোনও মামলায় এটি নজির হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে, পকসো আইনের অধীনে ‘সম্মতির বয়স’ ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ বছর করা নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে। আদালতের মতে, এতে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সম্মতিপূর্ণ প্রেমের সম্পর্ককে অযথা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করার প্রবণতা রোধ করা যাবে।
দেখুন আরও খবর:







