কলকাতা: গ্রেফতার হওয়ার পরেও কোনও হেলদোল ছিল না আরজি কর কাণ্ডে (RGKar Case) ধৃত সঞ্জয় রায়ের (Sanjay Roy)। উলটে পুলিশকে সে বলেছিল ‘আমাকে ফাঁসি দিয়ে দিন’। ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে হয়ে গিয়েছিল এক হাড়হিম করা ঘটনা।
তদন্তে (Investigation) নেমেই পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে (Civic Volunteer Sanjay Roy)গ্রেফতার করে। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পরে অনুশোচনা তো দূরের কথা হাবভাব ছিল রীতিমতো বেপরোয়া। ফাঁসি দিয়ে বলেছিল সে। আজ ১৬৪ দিন পর সেই নারকীয় কাণ্ডের সাজা ঘোষণা। সেই সঞ্জয়ের এখন দাবি সে নির্দোষ। বিচারককে শনিবার সেই আচরণ নিয়ে জানিয়েছে, আপনি বুঝতে পারছেন,আমি নির্দোষ, আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘শুধু সঞ্জয় নয়, যুক্ত আরও অনেকেই’, বিস্ফোরক দাবি নির্যাতিতার বাবা-মায়ের
আরজি কর কাণ্ডের সেই অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের মানসিক সমস্যা আছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ ৷ এই সঞ্জয় কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার হলেও নাকি নিজেকে কলকাতা পুলিশেরই স্বশস্ত্র বাহিনীর এএসআই বলে পরিচয় দিত ।
জানা গিয়েছে, শম্ভুনাথ পন্ডিত রোডে যেখানে সঞ্জয়ের বাড়ি সেখানেই নাকি এক ব্যক্তিকে সে সরকারি চাকরি করিয়ে দেবে বলে তাঁর কাছ থেকে কয়েক হাজার টাকা নিয়ে কিছুদিনের জন্য ফেরার হয়ে গিয়েছিল। পরে সেই টাকা ওই ব্যক্তি ফেরত দিতে বললে সঞ্জয় বলে সে কলকাতা পুলিশের উঁচু পদে রয়েছে । ফলে তার সঙ্গে ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ নেই। এমনকি মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করারও একাধিক অভিযোগ আছে তার নামে। অন্য থানার মহিলা পুলিশ কর্মী থেকে শুরু করে মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারদের রীতিমতো উক্তক্ত্য করত করত সঞ্জয় ।
কিন্তু আজ সেই বেপরোয়া মনোভাব নেই। আজ রায় ঘোষণার আগে থেকেই চুপচাপ সঞ্জয়। গলা দিয়ে নামেনি রাতের খাবারও। শনিবার থেকেই বাড়তি পাহারা রয়েছে তার সেলে। সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে সেই সেল। ওয়ার্ডের নজরদারি ছাড়াও তাঁর উপরে বাড়তি নজর রাখা হয়েছে।
শনিবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক সঞ্জয়কে দোষী ঘোষণা করে রায় দেওয়ার পর থেকেই জেল কর্তৃপক্ষের তৎপরতা তুঙ্গে। নিয়মমাফিক শনিবার রাতে ডাক্তার তার শারীরিক পরীক্ষা করে গিয়েছেন। রবিবার সকালেও হয়েছে স্বাস্থ্যপরীক্ষা। জানা গিয়েছে, রাতে একটু বাড়লেও পরের দিকে সঞ্জয়ের রক্তচাপ স্বাভাবিকই ছিল। হৃদস্পন্দন ওঠানামা করছে। উদ্বেগ চোখে মুখে। শনিবার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর সে কাঠগড়া আঁকড়ে ছিল। পুলিশকর্মীরা জোর করায় ধস্তাধস্তি শুরু হয়। রবিবার অবশ্য দিনভর নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেছে সঞ্জয়।
দেখুন অন্য খবর: