ওয়েব ডেস্ক: প্রকৃতির রুদ্র রূপে বিপর্যস্ত পাহাড়। একটানা ভারীবৃষ্টিতে বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে পাহাড়ি নদী। ধসের জেরে ভয়াবহ পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গে (North Bengal Heavy Rain)। প্রায় নিশ্চিহ্ন মিরিকের আস্ত গ্রাম। বাড়ি ঘর ধসের তলায়। এখনও নিখোঁজ অনেকে। বোল্ডার পড়ে অবরুদ্ধ রাস্তা। তলিয়ে গেল ব্রিজ। ভেঙে পড়ল একাধিক বাড়ি। পাহাড় থেকে বিচ্ছিন্ন হল সমতলের শিলিগুড়ি। উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি এদিন হাসিমারা হয়ে যাবেন নাগরাকাটা। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখার চেষ্টা করবেন। পাশাপাশি মঙ্গলবার তিনি যাওয়ার চেষ্টা করবেন মিরিকে। যদিও আগের থেকে কমেছে বৃষ্টি। এ দিন পরিস্থিতির অনেকেটাই উন্নতি হয়েছে। খুলে গিয়েছে দার্জিলিঙের রাস্তা। এখন অনায়াসে সেখানে যাতায়াত করা যাবে বলে জানা গিয়েছে। যার ফলে পর্যটকরা অনেকেই পাহাড় থেকে নেমে আসছেন।
ধীরে ধীরে আবহাওয়ার উন্নতি হতে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গে (North Bengal)। একনাগাড়ে ভারী বৃষ্টি আর ভূমিধসে কার্যত লণ্ডভণ্ড উত্তরবঙ্গ। সোমবার নতুন করে বৃষ্টির দাপট না বাড়ায়, রোদের দেখা মিলেছে পাহাড়ে। তবে এখনও চারপাশ জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে প্রকৃতির ধ্বংসলীলার নমুনা। ক্ষতির মুখে পড়েছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান (Jaldapara National Park)। জলে ভাসছে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের গোটা এলাকা। তাই পর্যটকদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান (Jaldapara National Park)। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বন্ধ রাখা হয়েছে দার্জিলিঙের একাধিক ট্যুরিস্ট স্পট। সেই তালিকায় রক গার্ডেন থেকে শুরু করে টাইগার হিল, চিড়িয়াখানা রয়েছে। নবান্নের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে হেল্পলাইন। সেখানে যোগাযোগের ফোন নম্বরগুলি হল- ০০৯১-২২১৪-৩৫২৬/০০৯১- ২২৫৩-৫১৮৫, টোল ফ্রি নম্বর -৯১-৮৬৯৭৯-৮১০৭০।
আরও পড়ুন: ম্যান মেড পরিকল্পিত বন্যা! বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী, কী কী পদক্ষেপ?
এদিন খুলে গিয়েছে দার্জিলিঙের রাস্তা। এখন অনায়াসে সেখানে যাতায়াত করা যাবে বলে জানা গিয়েছে। দার্জিলিং থেকে শিলিগুড়ি (Darjeeling-Siliguri Road Open ) যোগাযোগের জন্য মোটামুটি ব্যবহৃত হয় হিলকার্ট রোড এবং রোহিণী রোড। আর এই দুটি রোডেই কাল ধস নামে। যার ফলে যান চলাচল ছিল বন্ধ। তবে আজ পরিস্থিতির অনেকটাই বদলে গিয়েছে। খুলে দেওয়া হয়েছে হিলকার্ট রোড এবং রোহিণী রোড। পর্যটকেরা এই রাস্তা ধরেই আপাতত শিলিগুড়ি পৌঁছাচ্ছেন।ধসের জন্য সব রাস্তা বন্ধ হলেও খোলা ছিল পাঙ্খাবাড়ি রোড। সেখান থেকে বহু পর্যটক নীচে নেমে এসেছেন। ধসের জেরে বন্ধ হয়েছিল জোরেবাংলো থেকে ঘুম যাওয়ার রাস্তা। তবে সেই রাস্তাতেও মেরামতির কাজ চলে। যার ফলে এখন খুলে দেওয়া হয়েছে সেই রাস্তা।
এদিন উত্তরবঙ্গে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নাগরাকাটা, মিরিক, জোড়বাংলো, কালিম্পং। সেখানে বহু সংখ্যক পর্যটক গিয়েছিলেন। তাদের উদ্ধার করেছি। পুলিশ তাদের নিরাপদে উদ্ধার করেছে। কেবলমাত্র ডায়মন্ড হারবারের একজন নিখোঁজ। তবে ৫০০ জনকে সোমবারই নীচে নামানো হচ্ছে। ৪৫টি ভলভো বাসে নামানো হচ্ছে তাদের। ২৫০ জনকে শিলিগুড়িতে রাখার ব্যবস্থা করেছি।’দার্জিলিঙের ধসে মৃত পরিবারের জন্য চাকরি ও আর্থিক সাহায্যেরও ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতির জন্য ফের ভুটান থেকে ছাড়া জলকে দায়ী করেছেন তিনি। মাইথন, পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ায় এক হাত নিয়েছেন ডিভিসিকেও। উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতিকে তিনি ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
অন্য খবর দেখুন