ওয়েব ডেস্ক: দীর্ঘ রোগভোগের পর প্রয়াত হলেন বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি (BNP) নেত্রী খালেদা জিয়া (Khaleda Jiya)। বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ঢাকার (Dhaka) একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কয়েক দিন ধরেই তাঁর শারীরিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত সঙ্কটজনক। করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রেখে চিকিৎসা চলছিল।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন বিএনপি নেত্রী। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ফুসফুসে সংক্রমণ ও নিউমোনিয়ার কথা জানা যায়। বয়সজনিত নানা জটিলতা এবং একাধিক অসুখ একসঙ্গে থাকায় চিকিৎসা অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছিল। কিডনির কার্যকারিতাও অনেকটাই কমে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। নিয়মিত ডায়ালিসিস চলছিল এবং শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা! মৃত্যু হল ১৩ জনের, আহত বহু
সোমবারই খালেদার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়েছিল, তাঁর অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। সেই রাতে হাসপাতালে যান তাঁর পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার আগে দলের দফতরের সামনে থেকে মায়ের আরোগ্য কামনায় দেশবাসীর কাছে প্রার্থনার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার উত্থান কোনও নাটকের চেয়ে কম নয়। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করলেও স্বামীর মৃত্যুর পর নিজেই শক্ত হাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টির নেতৃত্ব দেন তিনি। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন খালেদা। পরে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান।
বাংলাদেশের নারীশিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে তাঁর সরকারের ভূমিকার কথা স্বীকার করেন অনেকে। তবে তাঁর শাসনকালে সামনে এসেছে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। চলতি বছরের শুরুতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হলেও শারীরিক অস্থিরতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। খালেদা জিয়ার প্রয়াণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শেষ হল।






