পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান মেডিকেল কলেজে আদিবাসী রোগিনীর মেয়েকে শ্লীলতাহানি! ঘটনার গ্রেফতার হাসপাতালেরই ওয়ার্ডবয়। এই ঘটনার পর থেকে ফের সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রোগিনীর মেয়েকে শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগে এক ওয়ার্ডবয়কে গ্রেফতার করেছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পের পুলিশ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। সরকারি হাসপাতালে রোগী ও তাঁদের পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। জানা গিয়েছে, ধৃত ওয়ার্ডবয়ের নাম বিশ্বজিৎ দে ওরফে বাপ্পা (বয়স ৪৮)। বাড়ি বর্ধমান শহরের বাবুরবাগ কালীতলা এলাকায়। গত ২১ বছর ধরে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ার্ডবয়ের কাজ করছে সে। সোমবার ভোররাতে তাকে গ্রেফতার করে বর্ধমান মহিলা থানার পুলিশ। পরে তাকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে তোলা হলে আদালত দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বর্ধমান মেডিকেল কলেজে শ্লীলতাহানির অভিযোগ! বিক্ষোভ কংগ্রেসের
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ওয়ার্ডবয় হাসপাতালের নিউ বিল্ডিংয়ের ফিমেল চেস্ট ওয়ার্ডে কর্মরত। ওই ওয়ার্ডেই চিকিৎসাধীন ছিলেন এক আদিবাসী রোগিনী। তাঁর মেয়েই অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ, শনিবার থেকে মায়ের সঙ্গে ওয়ার্ডে ছিলেন ওই মহিলা। তিনি হাসপাতালে আসার পর থেকেই বিশ্বজিৎ তাঁকে কুপ্রস্তাব দিত। রবিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বিশ্বজিৎ ওয়ার্ডে ঢুকে আচমকা ঘরের আলো নিভিয়ে দিয়ে তাঁকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেন। মহিলার চিৎকারে সে তাঁর মুখ চেপে ধরে, এমনকি কিল, চড় ও ঘুষিও মারে। পরে কোনোরকমে নিজেকে ছাড়িয়ে ওই মহিলা জোরে চিৎকার করলে আশেপাশের মানুষ ছুটে এসে লাইট জ্বালিয়ে দেন। তখনই অভিযুক্ত ওয়ার্ডবয় সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
এরপরই নির্যাতিতা মহিলা বর্ধমান মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১২৬(২), ১১৫(২), ৭৪, ৭৫(২), ৭৬ ও ৭৯ ধারায় মামলা রুজু করে। তদন্তে নেমে পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এবং ওয়ার্ডের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। সেই ফুটেজে অভিযুক্তের উপস্থিতি ও ঘটনাক্রম নিশ্চিত হওয়ার পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উঠেছে তীব্র প্রশ্ন। রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের দাবি — ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী ও সিসিটিভি নজরদারি নিশ্চিত করা হোক যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
দেখুন খবর:






