শান্তিপুর: নদিয়ার (Nadia) শান্তিপুরের (Shantipur) প্রাচীন কালীপুজোগুলির (Kali Puja 2025) মধ্যে অন্যতম কাঁসারীপাড়ার দে পরিবারের ‘বুড়িমা কালীপুজো’। প্রায় ৩৮২ বছরের ঐতিহ্য বহন করছে এই পুজো। প্রয়াত বিধায়ক ও প্রাক্তন পৌরপ্রধান অজয় দে এবং তাঁর ভাই, প্রাক্তন বিধায়ক অধ্যাপক অসমঞ্জ দে–র হাত ধরে এই পুজো আরও খ্যাতি পায়। রাজ্যের বহু মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও বিশিষ্ট ব্যক্তি এই পুজোতে উপস্থিত থেকেছেন অতীতে।
বাড়ির প্রবীণ সদস্য অনিমেষ দে জানান, বাংলা ১০৫১ সালে পুষ্পমণি দাস নামে এক ভদ্রমহিলা স্বপ্নাদেশে মাটির নিচে একটি পাথর পান। দেবী তাঁকে সেই পাথরের পূজা করার নির্দেশ দেন। সেই থেকেই শুরু হয় এই পুজো, যা পরবর্তীতে বংশানুক্রমে স্থায়ী ঐতিহ্যে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: ভিক্টোরিয়া চত্বরে দূষণ তুঙ্গে, হাওয়া সবচেয়ে খারাপ হাওড়া-কলকাতায়
পরবর্তীকালে পুষ্পমণির বংশধর শক্তিপ্রসাদ দে পুজোর ব্যাপ্তি আরও বাড়ান। এরপর তাঁর উত্তরসূরি অসমঞ্জ দে ও অজয় দে মন্দিরের সংস্কার করেন এবং পুজোকে বৃহত্তর পরিসরে ছড়িয়ে দেন।
আজও এই পুজোয় ডগর ঢাক, সানাই ও তিন প্রকার বাজনা বাজে নিয়ম করে, যেমন ছিল বহু বছর আগে। বুড়িমা পুজোর নিজস্ব কিছু রীতি আজও অক্ষুণ্ণ। দশমীতে পাটে সিঁদুর পড়ানোর পর শুরু হয় খড় বাঁধা ও মায়ের সাজ। দেবীকে ‘ডাকের সাজে’ সজ্জিত করা হয়, যা দর্শনার্থীদের কাছে এক অপরূপ দৃশ্য। দেবীর গলায় পরানো মোমের মালা এই পুজোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
বুড়িমাকে এখানে দক্ষিণা কালী রূপে পুজো করা হয়। পুজো শেষে দেবীর একই আসনে বিসর্জন দেওয়া হয়। আগে পশুবলির প্রথা থাকলেও বর্তমানে আখ ও কুমড়ো বলি দেওয়া হয়।
পুজোর দিন দূর-দূরান্তের আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় মানুষ ভিড় জমান দে বাড়িতে। পুজো ঘিরে থাকে আবেগ ও স্মৃতির আবহ। তবে সবার মনে এখন এক শূন্যতা, প্রয়াত অসমঞ্জ দে এবং অজয় দে-র অনুপস্থিতি। তাঁদের হাত ধরেই এক সময় এই পুজো পৌঁছে গিয়েছিল রাজ্যের মন্ত্রী থেকে জেলা নেতৃত্ব পর্যন্ত।
দেখুন আরও খবর: