ওয়েব ডেস্ক: রবিবার মধ্যরাতে আগ্রার একটি হোটেল থেকে স্বঘোষিত ‘বাবা’ স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দিল্লির শ্রীশারদা ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের ১৭ জন ছাত্রী সাধু চৈতন্যানন্দের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা ও অশ্লীল ভাষা প্রয়োগের অভিযোগ এনেছিলেন। আর এবার ‘বাবার’ এক নতুন কীর্তি ফাঁস হল! পুলিশের চোখে ধুলো দিতে এই স্বঘোষিত ধর্মগুরু ৫০ দিনে ১৫টি হোটেল বদল করেছিলেন। যাতে তাঁর নাগাল সহজে না পায় পুলিশ। এমনকি সিসিটিভি না থাকা নিম্নমানের হোটেলগুলিকেই দিনযাপনের জন্য টার্গেট করেছিলেন তিনি। আর এই হোটেল বাছাই করতেন তাকে সাহায্য করেছিলেন তাঁর সহযোগীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার তাকে গ্রেফতারের পর তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি সহযোগিতা করছেন না। তিনি মুখে কুলুপ আঁটায় তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে তদন্তকারী অফিসারদের। তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন চৈতন্যানন্দ। এমনকি ভুলে গিয়েছি বলে অজুহাত দিয়ে তার নিজস্ব ফোন নম্বর ও অন্য ডিভাইসের পাসওয়ার্ড এখনও পর্যন্ত দেননি। যদিও তার ৩টি ফোন ও একটি আইপ্যাড ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কারুরে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪১
উল্লেখ্য, দিল্লির (Delhi) এক অভিজাত এলাকা বসন্ত কুঞ্জে (Basant Kunje) একটি আশ্রমের অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন এই স্বঘোষিত ‘বাবা’। এই আশ্রমের অধীনে একটি ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট রয়েছে। ইনস্টিটিউটির নাম শ্রীশারদা ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্ট। সেই ইনস্টিটিউটের ১৭ জন ছাত্রী সাধু চৈতন্যানন্দের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা ও অশ্লীল ভাষা প্রয়োগের অভিযোগ এনেছিলেন। কখনও ‘বেবি’, আবার কখনও ‘আই লভ ইউ’, বা কখনও ‘আই অ্যাডোর ইউ’- ছাত্রীদেরকে এই ধরণের মেসেজ পাঠাতেন স্বঘোষিত ‘বাবা’ স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতী (Swami Chaitanyananda Saraswasti ) ওরফে পার্থসারথি। সেই খবর তার কানে যেতেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন স্বামী চৈতন্যানন্দ।
শ্রী শৃঙ্গেরি মঠ প্রশাসনেরও ডিরেক্টর পদে ছিলেন এই স্বঘোষিত ধর্মগুরু। সেই ট্রাস্টের টাকা অপব্যবহারের অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। পালানোর আগে তিনি ব্যাঙ্ক থেকে ৫৫ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন। সাধুবাবার এই কুকীর্তি প্রকাশ্যে আসার পরেই আশ্রম কর্তৃপক্ষ স্বামী চৈতন্যানন্দকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করে। এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে। এক ছাত্রী এফআইআর করে বলেছিলেন, দিল্লির (Delhi) বসন্ত কুঞ্জে অবস্থিত আশ্রমের অধীনে একটি ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন ওই তিনি। তার পরে দীপাবলীর সময় তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন স্বামী চৈতন্যানন্দ (Swami Chaitanyananda Saraswasti )। আর সেই সময় তাঁর দিকে নাকি অদ্ভুত ভাবে তাকিয়েছিলেন স্বঘোষিত ‘বাবা’। যা তার ভালো লাগেনি বলে অভিযোগ পত্রে জানিয়েছেন ওই ছাত্রী। এমনকী জোর করে কয়েকজনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা হয় বলেও অভিযোগ করেছিলেন ছাত্রীরা। বহুদিন পালানোর পর রবিবার তাকে গ্রেফতার কওরে পুলিশ।
দেখুন অন্য খবর