কলকাতা: এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়ায় কোনও যোগ্য ভোটারের নাম বাদ গেলে তা মেনে নেবে না, এ কথা আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। শুক্রবার দিল্লিতে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (Election Commission) জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকে সেই অবস্থান ফের স্পষ্ট করল তৃণমূল (TMC)।
ডেরেক ও’ ব্রায়েন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র ও শতাব্দী রায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের দশ সদস্যের প্রতিনিধি দল এদিন প্রায় দুই ঘণ্টা কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে ডেরেক জানান, এসআইআর ইস্যুতে কমিশনের কাছে পাঁচটি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, যার সন্তোষজনক উত্তর কমিশন দিতে পারেনি। পাশাপাশি তৃণমূল দাবি করেছে—এসআইআর প্রক্রিয়া তাড়াহুড়ো করে নয়, আপাতত তা স্থগিত রাখা হোক।
আরও পড়ুন: ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে বিরাট নির্দেশ রাজ্যের! কী করতে হবে? দেখে নিন
তৃণমূলের প্রশ্ন,
• এসআইআর-এর প্রকৃত উদ্দেশ্য কী — ভুয়ো ভোটার শনাক্তকরণ, নাকি অনুপ্রবেশ রোধ?
• যদি তাই হয়, তবে সীমান্তবর্তী অন্যান্য রাজ্যে একই প্রক্রিয়া কেন নয়?
• কেন বিশেষভাবে বাংলাকেই টার্গেট করা হচ্ছে?
প্রতিনিধি দলের দাবি, এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর কাজের চাপ ও আতঙ্কে এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে—এর মধ্যে ৩৫ জন সাধারণ নাগরিক ও পাঁচজন বুথ লেভেল অফিসার। বহু কর্মী অতিরিক্ত কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে কর্মীদের ওপর মানসিক চাপ ও চাকরি হারানোর ভয় দেখানোর অভিযোগও কমিশনের সামনে তুলে ধরা হয়েছে।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্র বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন—যদি বর্তমান ভোটার তালিকাই ভুয়ো হয়, তবে নির্বাচিত সরকার ও সাংসদদের বৈধতা নিয়েও কি প্রশ্ন উঠবে না? তা সত্ত্বেও কেন বেছে বেছে বাংলাকেই নিশানা করা হচ্ছে? তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি যা বলছে, পরের দিন কমিশনের বক্তব্যও তার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে—যা কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
বাংলায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে ভিনরাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগ নিয়েও এসআইআর প্রক্রিয়ার যোগসূত্র জানতে চায় তৃণমূল। ডেরেকের দাবি—এসআইআর বাস্তবায়নে কমিশনের ওপর রাজনৈতিক চাপ স্পষ্ট।
কমিশনকে তৃণমূলের সাফ বার্তা—একজন প্রকৃত ভোটারেরও নাম বাদ গেলে রাজ্য জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আগে কমিশন চার জনের বেশি প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করতে চাইলে রাজি ছিল না। তারই প্রতিবাদে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে কমিশনকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। শেষে চাপের মুখে কমিশন ১০ সদস্যের দলের সঙ্গে বৈঠকে সম্মত হয়।
তৃণমূলের দাবি অনুযায়ী কমিশন কি অবস্থান পরিবর্তন করবে, নাকি আগের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকবে—তা নিয়েই এখন রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা।
দেখুন আরও খবর:







