নয়াদিল্লি: ওয়াকফ আইনের উপরে আংশিক স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের (Waqf Act) কিছু ব্যবস্থায় স্থগিতাদেশ দিলেও ওয়াকফ (Supreme Court Partially Stays on Waqf Act) নথিভুক্তিকরণে সায় সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court)। ওয়াকফে সম্পত্তি দান করার জন্য ৫ বছর ইসলাম ধর্মাচরণ করার যে শর্ত দেওয়া হয়েছিল ওয়াকফ সংশোধনী আইনে, তার উপরে স্থগিতাদেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি বি আর গভাই এবং বিচারপতি এ জি মসিহ।
ওয়াকফ সংশোধনী আইন ২০২৫ এর বেশ কিছু ধারাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টে মামলা দায়ের হয়। প্রধান বিচারপতি বি আর গভাই ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসির বেঞ্চে হয় ৩ দিন ধরে শুনানি। ২২ মে শুনানির পর রায়দান স্থগিত রাখে আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের রায় পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশ। এতদিন জেলাশাসক কোনও জমি বা সম্পত্তি জরিপ করে তা ওয়াকফের কি না, বলার অধিকারী ছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নয়া নির্দেশ অনুযায়ী, এখন জেলাশাসকদের হাতে আপতত এই অধিকার থাকছে না। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, জেলাশাসক সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। এদিন ওয়াকফে সম্পত্তি দান করতে হলে পাঁচ বছর ইসলাম পালনের নিয়মে স্থগিতাদেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বিআর গাভাইয়ের বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: ভিক্ষুক আবাসনে মানবিক ব্যবস্থা কায়েম করতে সুপ্রিম নির্দেশ
আদালতের রায় অনুযায়ী, ওয়াকফ সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধে জেলা শাসকের কোনও ভূমিকা থাকবে না। এই অধিকার এখন কেবলমাত্র ওয়াকফ ট্রাইব্যুনাল বা হাইকোর্টের হাতে থাকবে। পাশাপাশি, রাজস্ব রেকর্ড সম্পর্কিত বিধানও স্থগিত করা হয়েছে। আদালত বলেছে, মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনও তৃতীয় পক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তির উপর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না।
হাইকোর্টে আপিল হওয়াকালীন সেই সম্পত্তিতে তৃতীয় পক্ষের কোন অধিকার তৈরি হতে পারে না। অভিমত আদালতের। ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম ব্যক্তির নমিনেশনে স্থগিতাদেশ নয়। তবে বোর্ডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে যথাসম্ভব মুসলিম ব্যক্তি থাকাই প্রয়োজন। সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিলে চার জনের বেশি অমুসলিম ব্যক্তি থাকা নিষ্প্রয়োজন। স্টেট ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষেত্রে তিন জনের বেশি অমুসলিম ব্যক্তির অস্তিত্ব থাকার দরকার নেই। অভিমত আদালতের। ২০ জনের সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিলে ৯ ধারা অনুযায়ী চার জন অমুসলিম ব্যক্তি থাকবেন। ধারা ১৪ অনুযায়ী রাজ্যের বোর্ডে ১১ জনে তিন জন অমুসলিম থাকতে পারবেন। ২৩ ধারায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে না। তবে বোর্ডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে যথাসম্ভব মুসলিম সমাজের ব্যক্তিকেই নিয়োগ করতে হবে। নির্দেশ আদালতের। ওয়াকফ বাধ্যতামূলকভাবে নথিভুক্তিকরণ ব্যবস্থায় কোন স্থগিতাদেশ নয়। কারণ ১৯৯৫ এবং ২০১৩ সালের সংশ্লিষ্ট আইনেই এই ব্যবস্থা ছিল। তবে নথিভুক্তিকরনের জন্য সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যদিও চূড়ান্ত রায় প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত তা জানা যাচ্ছে না। উল্লেখ্য, তিন দিনের শুনানি শেষে ২২ মে সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত ছিল।
অন্য খবর দেখুন