নদিয়া: সাড়ে তিন শতাব্দী ধরে চলে আসছে নদিয়ার (Nadia) শান্তিপুরের (Shantipur) বড় গোস্বামী বাড়ির দেবী কাত্যায়নীর পুজো (Durga Puja 2025)। কথিত আছে, কাত্যায়নীর ব্রত করেই পরিবারের ইষ্টদেবতা রাধারমনকে পুনরুদ্ধার করেছিলেন গোস্বামী পরিবার। তারপর থেকেই এই বাড়িতে চিরাচরিত নিয়মে পূজিত হচ্ছেন দেবী কাত্যায়নী (District News)।
ইতিহাস বলছে, এক সময় গোস্বামী বাড়ির কুলদেবতা শ্রীশ্রী রাধারমন জিউ পূর্বে দোল গোবিন্দ রূপে পূজিত হতেন। মুঘল আক্রমণের সময় যশোর রাজপরিবার থেকে সেই বিগ্রহ রক্ষার দায়িত্ব পান মধুরেশ গোস্বামী। তিনি সুদূর যশোর থেকে বিগ্রহ নিয়ে আসেন শান্তিপুরে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই বিগ্রহ হারিয়ে যায়। পরে কাত্যায়নীর ব্রত পালনের মাধ্যমে দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে সেই বিগ্রহ উদ্ধার হয়। তখন থেকেই গোস্বামী বাড়িতে কাত্যায়নীর পূজা শুরু হয়, যা আজও অটুট।
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদের ডোমকলের পুজোয় এবছরের থিম ‘আলিপুর মিউজিয়াম’
দেবী কাত্যায়নীর মূর্তি অনন্য বৈশিষ্ট্যে ভরপুর আট হাতবিশিষ্ট, কন্যারূপী, এক হাতে ত্রিশূল নিয়ে মহিষাসুর বধের প্রতীকী চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। দেবীর সাজে ব্যবহার হয় মাটি, কার্তিক ও গণেশকে রাখা হয় বিপরীতে। ষষ্ঠী থেকে শুরু হয় বোধন, অষ্টমীতে হয় সন্ধিপুজো, আর প্রতিদিনই নিবেদন করা হয় বাল্যভোগ ও ৩৬ পদ ভোগ। বৈষ্ণব মতে এখানে বলির প্রথা নেই, সমাজের মঙ্গল কামনায় অনুষ্ঠিত হয় মঙ্গল আরতি।
প্রচলিত নিয়মে নারীদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি দেবীর সমস্ত ভোগ রান্না করেন পরিবারের গৃহবধূরা। ৩৫০ বছরের এই প্রাচীন পুজোতে নেই কোনো আড়ম্বর, তবে ঐতিহ্য ও ভক্তির ছোঁয়া রয়েছে প্রতিটি পর্বে।
শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবের পাশাপাশি এবারও গোস্বামী বাড়ির কাত্যায়নী ব্রতে অংশ নিতে ভিড় জমাবেন অসংখ্য ভক্ত ও ব্রতী।
দেখুন আরও খবর: