কলকাতা: এক সময় শুধুই সমুদ্রসৈকতকে ঘিরে পর্যটনে বুঁদ থাকত দিঘা (Digha)। কিন্তু গত ছ’মাসে ছবিটা পুরো বদলে গিয়েছে। দিঘা এখন শুধু অবকাশযাপন কেন্দ্র নয়, বরং এক জনপ্রিয় তীর্থস্থান। কারণ দিঘার নতুন আকর্ষণ ‘জগন্নাথ ধাম’ (Jagannathan Dham)। মন্দিরে ভক্ত সমাগম এমনই নজরকাড়া যে, অনেকের মতে দিঘা এখন ‘আত্মনির্ভর’ তীর্থভূমি।
গত ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) হাতে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটনের পর থেকেই ভক্তদের ঢল নামতে শুরু করে। গড় হিসেব অনুযায়ী প্রতি দিন প্রায় ৫০ হাজার ভক্ত মন্দিরে প্রণাম করতে আসছেন। মন্দিরের অছি পরিষদের সদস্য রাধারমণ দাস জানান, দ্বারোদ্ঘাটনের পর মাত্র ছ’মাসে ৯০ লক্ষেরও বেশি মানুষের আগমন ঘটেছে। তাঁর কথায়, ‘‘জগন্নাথ মন্দির এখন দেশের সবচেয়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়া তীর্থক্ষেত্রগুলির মধ্যে একটি।’’
আরও পড়ুন: নিম্নচাপ কাটলেই নামবে পারদ! ডিসেম্বরের আগেই জাঁকিয়ে শীত বঙ্গে?
ভক্ত সমাগমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মন্দিরের আয়। মন্দির কর্তৃপক্ষের হিসাবে, দৈনিক প্রায় ৪ লক্ষ টাকা জমা পড়ে মন্দিরের তহবিলে যার মধ্যে হুন্ডিতে আসে প্রায় ১ লক্ষ, অনুদান ও উপহার থেকে আরও প্রায় ১ লক্ষ এবং ভোগ প্রসাদসহ অন্যান্য প্রসাদ বিক্রি থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকা। ফলে অল্প দিনের মধ্যেই মন্দির আর্থিক দিক থেকে সম্পূর্ণ আত্মনির্ভর হয়ে উঠেছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
জগন্নাথ ধামকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বড়সড় কর্মসংস্থানও। মন্দিরে সেবা, নিরাপত্তা, সাফাইকর্মী ও হাউসকিপিং মিলিয়ে প্রায় ১৭০ জন কর্মী নিযুক্ত রয়েছেন। পাশাপাশি মন্দির ঘিরে ফুল, ধূপ, প্রসাদের দোকান, পরিবহন, ভাড়াবাড়ি, হোটেল ও বিভিন্ন সার্ভিসের উপর নির্ভর করে অসংখ্য মানুষের জীবিকা চলছে। বড় উৎসবের সময়ে ভক্তদের ভিড়ে যেমন মন্দিরে আয় বাড়ে, ঠিক তেমনই উপচে পড়ে ব্যবসা।
সম্প্রতি রাসপূর্ণিমা উপলক্ষে ভয়াবহ ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনকে। শুধু বাংলাই নয়, ভিন্ রাজ্য থেকেও প্রতিদিন বহু ভক্ত জগন্নাথকে দর্শন করতে আসছেন। তাঁদের একাংশের দাবি, পুরীর আদলে তৈরি হলেও দিঘার জগন্নাথ ধাম খুব অল্প সময়েই নিজস্ব স্বতন্ত্র পরিচিতি তৈরি করেছে। মন্দির কর্তৃপক্ষের আশা, আগামী রথযাত্রা-সহ বড় উৎসবগুলোয় ভক্ত সমাগম নতুন রেকর্ড গড়বে।
দেখুন আরও খবর:







