ওয়েবডেস্ক- বিজয় মালিয়া (Vijay Mallya) , নীরব মোদিদের (Nirav Modi) দ্রুত দেশে ফেরাতে চায় ভারত সরকার। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে (Central Agency) ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নির্দেশের পরে প্রশ্ন উঠেছে, কতটা তাড়াতাড়ি এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি!
বিজয় মালিয়া একজন ঋণ খেলাপি। ৯ হাজার কোটির বেশি জালিয়াতি ও অর্থ পাচারে অভিযুক্ত প্রাক্তন কিংফিশার কর্মকর্তা। ভারতে ছেড়ে ব্রিটেনে পলাতক।
নীরব মোদি একজন পলাতক হীরা ব্যবসায়ী। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) জালিয়াতি মামলায় মোদির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ভারত সরকার ২০১৮ সালের অগাস্টে পিএনবি জালিয়াতি মামলায় তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, জালিয়াতি, আত্মসাত, চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ আনে।
মেহুল চোকসির (Mehul Choksi) প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া চলছে। তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ১৩ হাজার কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি দেশছাড়া।
২০২০ থেকে এখনও পর্যন্ত ১৩৭জন এমন অভিযুক্তকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৭ জন দেশের ফেরানো সম্ভব হয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক মনে করছে অভিযুক্তদের দেশে ফেরানোর এই গতি খুবই মন্থর। এই পরিস্থিতিতে সিবিআই (CBI) সহ কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ‘ডেডলাইন’ বেঁধে প্রত্যপর্ণের প্রক্রিয়া দ্রুত করার নির্দেশ দিয়েছে অমিত শাহ। বলা হয়েছে- আইবি (ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ) এবং এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি)-র সঙ্গে জোট বেঁধে নির্দিষ্ট এসওপি তৈরি করে প্রত্যর্পণ অভিযানে এগোতে হবে সিবিআইকে। সম্প্রতি গোয়েন্দা কর্তাদের সঙ্গে এই পর্যালোচনা বৈঠকে এই নির্দেশ দিয়েছেন অমিত শাহ।
আরও পড়ুন- ধর্ম নয়, কর্মের ভিত্তিতে নিকেশ, মরক্কো থেকে সরব রাজনাথ সিং
বিদেশে পলাতক ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে তিনটি স্তর আছে। প্রথমে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংগঠন ইন্টারপোলকে সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ জারির জন্য লিখিত অনুরোধ জানায় সিবিআই। কারণ, তারা ভারতে ইন্টারপোলের নোডাল এজেন্সি। এই অনুরোধের পরে সংশ্লিষ্ট পলাতকের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করে ইন্টারপোল। এবার সেই নোটিশ ইন্টারপোলের সদস্য বিশ্বের ১৯৫টি দেশের সঙ্গে শেয়ার করা হয়। যাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সেই সব দেশে ঢোকা-বেরোনোর চেষ্টা করলেই ধরা পড়ে যান। যে দেশে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি লুকিয়ে রয়েছেন, সেই দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা করে ভারত সরকার। চলে আইনি প্রক্রিয়া। এই স্তরগুলি সম্পন্ন হলেই বিদেশ থেকে দেশে ফেরানোর কাজ শুরু হবে। এদিকে সিবিআই সূত্রের অভিযোগ, তাদের লিখিত অনুরোধ পাওয়ার পরেও অনেক ক্ষেত্রে রেড কর্নার নোটিস জারি করতে প্রচুর সময় নেয় ইন্টারপোল। তবে কেন্দ্রের উদ্যোগে ভারতপোল পোর্টাল চালু করেছে সিবিআই।
অমিত শাহ চাইছেন প্রত্যপর্ণের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ডসিয়ের’ তৈরির কাজ দ্রুত সম্পন্ন হোক।
একটি ডসিয়ার হল কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত নথিপত্র ও তথ্যের একটি বিস্তারিত তথ্য। এটি একটি নির্দিষ্ট ঘটনা বা ব্যক্তির উপর গভীর তথ্য প্রদান করে এবং সাধারণত একটি ফাইলের মধ্যে গুছিয়ে রাখা হয়। আদালত বা কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার জন্য কোনও ব্যক্তি বা ঘটনার বিস্তারিত তথ্য, যেমন প্রমাণপত্র বা অন্যান্য নথি নিয়ে একটি ডসিয়ার তৈরি করা হয়।
দেখুন আরও খবর-