ওয়েব ডেস্ক: যে পথে মা দুর্গা কৈলাসে গেলেন, সেই পথে ধরেই বাংলায় ফিরছেন দেবী লক্ষ্মী। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর (Laxmi Puja) ঢাক ইতিমধ্যে বাজতে শুরু করেছে বাংলার আনাচে-কানাচে। দেবী লক্ষ্মীর আরাধনার কথা উঠলেই আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলার হ্যামিল্টনগঞ্জের (Hamiltonganj Saha Barir Laxmi Puja) কথা উঠে আসে। প্রতি বছর লক্ষ্মী পুজোর সময় প্রাণ ফিরে পায় এক সেখানের ঐতিহ্যবাহী সাহা বাড়ি। আজও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পূর্বপুরুষের স্মৃতি ও সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে আগলে রেখেছে হ্যামিল্টনগঞ্জের শতবর্ষ প্রাচীন এই পারিবারিক উৎসব।
জানা যায়, উত্তরবঙ্গের এই বনেদি লক্ষ্মীপুজোর সূচনা হয়েছিল বাংলাদেশের ঢাকায়। সেখান থেকে দেশভাগের পর কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর সেই ধারা চলে আসে হ্যামিল্টনগঞ্জের শ্যামাপ্রসাদ কলোনির সাহা বাড়িতে। সেই থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রতিবছর ধুমধাম করে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই পুজো।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ মাতল দেবী ভান্ডানি দুর্গার আগমনে
একসময় এই পুজোকে ঘিরে সাত দিন ধরে চলত কবিগান ও পালাগান। দূরদূরান্ত থেকে আসতেন শিল্পী ও দর্শনার্থীরা। যদিও বর্তমানে সেই কবিগানের আসর আর হয় না, তবু ঐতিহ্যের আবহ বজায় রেখে আজও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পুজোর পরিবেশকে জীবন্ত রাখেন সাহা পরিবারের সদস্যরা। ষাটের দশকে এই পুজোকে ঘিরে অনুষ্ঠিত হত আরতি প্রতিযোগিতা, যেখানে বিজয়ীদের দেওয়া হত সোনার পদক। এখনও সেই প্রতিযোগিতা হয়, তবে পুরস্কার বদলে গিয়েছে সময়ের সঙ্গে।
তবে পুরানো রীতি অনুযায়ী, আজও লক্ষ্মী প্রতিমার সাজে ব্যবহৃত হয় সোনার গয়না ও রত্নখচিত বিভিন্ন অলংকার। প্রতিমার উচ্চতা প্রায় ১১ ফুট। প্রতিমার সামনে থাকে সোনার পদ্মফুল, ধানের শীষ, এমনকি পুজোয় ব্যবহৃত অনেক উপকরণও সোনার তৈরি। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে পুজোর প্রসাদে থাকে ৫০ প্রকারের খাদ্যসামগ্রী।
হ্যামিল্টনগঞ্জে টানা ৮১ বছর ধরে হয়ে আসছে এই পুজো। এখন সেখানে পুজোর প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। সময়ের পরিবর্তনে কিছু জৌলুশ হয়তো ম্লান হয়েছে, কিন্তু ভক্তি, উদ্দীপনা ও পারিবারিক বন্ধনের উজ্জ্বলতায় আজও অটুট সাহা বাড়ির দেবী আরাধনা।
দেখুন আরও খবর: