Monday, November 24, 2025
HomeScrollবাজার দখল ভেজাল নলেন গুড়ের, লোকসানে খাঁটি গুড়ের শিউলিরা
Nadia

বাজার দখল ভেজাল নলেন গুড়ের, লোকসানে খাঁটি গুড়ের শিউলিরা

সেই প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না খাঁটি গুড়ের কারিগররা

কলকাতা: শীতের (Winter) শুরু মানেই নলেন গুড়ের (Nolengur) বাজারে বাড়তি চাহিদা। কিন্তু নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় খেজুরের খাঁটি নলেন গুড় তৈরি করেন যে শিউলিরা, তাঁদের মুখে এখন হতাশার সুর। আগে শীত পড়তেই যে গুড়ের বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠত, এবার তা তলানিতে। কারণ একটাই — বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে ভেজাল নলেন গুড়, আর সেই প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না খাঁটি গুড়ের কারিগররা।

বর্ষা বিদায় নিয়েই শিউলিদের শুরু হয় গাছ ঝোড়া ও রস সংগ্রহের কাজ। অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত লিজ নেওয়া গাছ থেকে সপ্তাহে দু’-তিন দিন রস ওঠে। সেই রস জ্বাল দিতে প্রয়োজন পড়ে শ্রম, সময় ও জ্বালানির। ফলে ২০টি গাছ থেকে রস জাল দিয়েও মাত্র দুই–তিন কেজি গুড় হয়, যার দাম বাজারে ২০০ টাকা কেজি। কিন্তু সেই দামে বিক্রি করেও লাভ হচ্ছে না অনেকের। তাই নতুন প্রজন্ম আর এই পেশায় আসতে চাইছে না।

আরও পড়ুন: BLO -দের কমিশন অভিযান, এসআইআর চাপে অসুস্থ অনেকে, কী দাবি?

সমস্যার বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে ভেজাল গুড়। নলেন গুড়ের ব্যস্ত চাহিদা দেখে অনেকেই রসে চিনি মিশিয়ে গুড় তৈরি করছেন। তুলনায় কম রস, কম জ্বালানি খরচ আর দ্রুত প্রস্তুতির ফলে তাঁরা বাজারে গুড় বেচছেন ৮০–৯০ টাকা কেজি দরে। এই ভেজাল গুড়ই বাজার দখল করে ফেলায় খাঁটি নলেন গুড়ের ব্যবসা বিপর্যস্ত। স্থানীয় ব্যবসায়ী মাধব ঘোষ জানিয়েছেন, “যারা ৮০–৯০ টাকা কেজিতে কিনছে, তারা কলকাতায় বিক্রি করছে ১২০–১৩০ টাকায়। খাঁটি গুড় বিক্রি করে লোকসান ছাড়া কিছুই হচ্ছে না।”

মাজদিয়া বাজার একসময় নলেন গুড়ের জন্য রাজ্য জুড়ে পরিচিত ছিল। এখন সেখানেও ভেজাল গুড়ের দাপট। পাইকারি ব্যবসায়ী অমিত ঘোষের অভিযোগ, “সবাই চিনি মিশিয়ে গুড় করছে। গুড়ের গন্ধই আর থাকে না। আমরাও বাধ্য হয়ে একই গুড় কিনে বিক্রি করছি।” বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ১০০ কেজি চিনিতে সামান্য খেজুর রস মিশিয়ে গুড় বানানো হচ্ছে। তাতে খরচ কম, লাভ দ্বিগুণ — ফলে বাজারে ভেজাল গুড়ের দাপট বাড়ছে। আর এর ফলেই হারাচ্ছে খাঁটি নলেন গুড়ের স্বাদ, ঐতিহ্য ও কদর।

দেখুন আরও খবর:

Read More

Latest News