Thursday, September 4, 2025
HomeScrollতদন্তে অসন্তুষ্টি! খেজুরি মামলায় ‘কেস ডাইরি’ তলব হাইকোর্টের

তদন্তে অসন্তুষ্টি! খেজুরি মামলায় ‘কেস ডাইরি’ তলব হাইকোর্টের

জমা দিতে হবে পুলিশ অফিসার, প্রথম ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার, মেলা কমিটির সদস্য সহ মোট ১৭ জনের কল রেকর্ড

ওয়েব ডেস্ক: খেজুরিতে দুই বিজেপি কর্মীর রহস্যমৃত্যুর (Khejuri BJP Worker Death Case) তদন্ত নতুন মোড় নিল। কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) স্পষ্ট জানাল, সিআইডি এবং পুলিশের জমা দেওয়া রিপোর্টে আদালত সন্তুষ্ট নয়। তদন্তে (Investigation) একাধিক অসংগতি ও প্রশ্ন চিহ্ন উঠে আসায় বিচারপতি দেবাংশু বসাকের বেঞ্চ ফের রিপোর্ট তলব করেছে তদন্তকারী সংস্থার কাছে। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে মামলার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ অফিসার, প্রথম ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার, মেলা কমিটির সদস্য সহ মোট ১৭ জনের কল রেকর্ড হাইকোর্টে জমা দিতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে ৮ সেপ্টেম্বর।

পর্যবেক্ষণে আদালত একাধিক প্রশ্ন করে। তদন্তকারী সংস্থার কাছে বিচারপতি জানতে চান- যদি সত্যিই হ্যালোজেন লাইট পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু ঘটে, তবে মৃতদেহে আঘাতের চিহ্ন মিলল কেন? পুলিশের দাবি, স্থানীয়রা বাঁশ ও লাঠি দিয়ে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এর কোনও প্রত্যক্ষ সাক্ষী নেই কেন? এত বড় ঘটনার একজনও প্রত্যক্ষদর্শী সামনে এল না কেন? প্রথম ময়নাতদন্তে আঘাতের চিহ্ন ধরা পড়েনি, অথচ দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে তা ধরা পড়ল কেন?

আরও পড়ুন: বাদ অযোগ্যরা, একধাক্কায় কমে গেল SSC-র আবেদনকারীর সংখ্যা

বিচারপতির মন্তব্য, “প্রথম ও দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এমন ফারাক থাকলে সাধারণ মানুষ গোটা সিস্টেমের উপর থেকে আস্থা হারাবে। মেলার মতো ভিড়ের জায়গায় এত বড় ঘটনা ঘটে গেল অথচ কোনও প্রত্যক্ষদর্শী নেই! এর মানে মানুষ ভয় পাচ্ছে। আগে তাদের সেই ভয় কাটাতে হবে, সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিতে হবে, তাহলেই সত্য প্রকাশ পাবে।”

উল্লেখ্য, খেজুরির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দুই বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়। প্রথমে পুলিশের রিপোর্টে বলা হয় হ্যালোজেন লাইট ভেঙে শর্ট সার্কিট থেকে দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু মৃতদের পরিবার অভিযোগ তোলে, ঘটনাটি আসলে পরিকল্পিত হামলা। সিঙ্গেল বেঞ্চ সিআইডিকে তদন্তভার দিলেও, সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় পরিবার। অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে জানান, “ওটা একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল। বড় হ্যালোজেন লাইট থেকে শর্ট সার্কিট হয়। প্রথম ময়নাতদন্তে কোনও আঘাতের চিহ্ন ধরা পড়েনি। কিন্তু পরিবারের আবেদনে দ্বিতীয় পোস্টমর্টেম হলে সেখানে সুজিত দাসের পিঠে আঘাতের দাগ পাওয়া যায়।”

বিচারপতির প্রশ্ন, “যদি সত্যিই শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকে, তবে প্রথম ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার তা দেখলেন না কেন? পুলিশের ডায়েরিতে লেখা আছে স্থানীয়রা বাঁশ ও লাঠি দিয়ে মৃতদের ছাড়াতে গিয়েছিল। কিন্তু সেই ঘটনার একজনও সাক্ষী নেই কেন?” আদালতের কড়া পর্যবেক্ষণের জেরে খেজুরীর রহস্যমৃত্যুর তদন্ত ঘিরে চাপ বাড়ল সিআইডি ও পুলিশের উপর। আগামী রিপোর্টেই হয়তো মিলবে এই মামলার নতুন দিশা।

দেখুন আরও খবর: 

Read More

Latest News