ওয়েবডেস্ক: উত্তপ্ত নেপাল (Nepal)। প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের (Former King Gyanendra Shah) সমর্থনে রাজতন্ত্র (Monarchy) ফেরানোর দাবিতে ফের হিংসাত্মক চেহারা নিয়েছে এই রাজ্যটি। বিক্ষোভ মিছিলকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার কাঠমাণ্ডুতে (Kathmandu) সংঘটিত হিংসায় দুজন নিহত ও ১১২ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। একাধিক পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাঁধে। রাজতন্ত্রপন্থী রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি (RPP) এবং অন্যান্য গোষ্ঠীগুলি প্রতিবাদে যোগ দেয়।
সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, পুড়িয়ে দেওয়া হয় যানবাহন। দোকানপাঠে লুটতরাজ চলে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার গ্যাস, জলকামান, রাবার বুলেট এবং ফাঁকা গুলি চালায়। অভিযোগকারীরা ১৪ টি ভবন ও ৯ টি সরকারি ভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়। এর মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়িক কমপ্লেক্স, একটি শপিং মল, একটি রাজনৈতিক দলের সদর দফতর, মিডিয়া হাউস।
আরও পড়ুন: শুক্রে মায়ানমার, শনিতে ভূমিকম্প আফগানিস্তানে
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন চিত্র সাংবাদিক সহ একজন বিক্ষোভকারী। মৃত সাংবাদিকের নাম সুরেশ রজক। তিনকুনে এলাকায় ঘটনার ভিডিও নেওয়ার সময় তার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। পরে তার পোড়া দেহ উদ্ধার হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে সংঘটিত এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বেষ্টনী লঙ্ঘন করে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছুঁড়তে থাকে। তখনই পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
হিংসাত্মক বিক্ষোভের পর নেপাল সরকার সেনা মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কাঠমাণ্ডুর বেশ কিছু এলাকায় কার্ফু (Cerfew) জারি করা হয়েছে। তিনকুনে, সিনামঙ্গল এবং কোটেশ্বর এলাকায় কার্ফু জারি আছে।
ঘটনায় জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি (Prime Minister KP Sharma Oli) । সেনা মোতায়েন (Army deployment) করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজতন্ত্র ও হিন্দু রাজ্যের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের দাবিতে নেপালের নিরাপত্তা বাহিনী এবং রাজতন্ত্রপন্থী কর্মীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ দানা বাঁধে।
নেপালের জাতীয় পতাকা উত্তোলনকারী এবং প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের ছবি ধারণকারী হাজার হাজার রাজতন্ত্রবাদী তিনকুনে এলাকায় জড়ো হয়েছিলেন। “রাজা আউ, দেশ বাঁচাও” (দেশ বাঁচাতে রাজাকে আসতে দিন), “দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার নিপাত যাক” এবং “আমরা রাজতন্ত্র ফিরে চাই” স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে একটি সংসদীয় ঘোষণার মাধ্যমে নেপাল তার ২৪০ বছরের পুরনো রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে, যা প্রাক্তন হিন্দু রাজ্যকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ, ফেডারেল, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত করে।
১৯ ফেব্রুয়ারি গণতন্ত্র দিবসে সম্প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় প্রাক্তন রাজা জনসাধারণের সমর্থনের আবেদন জানানোর পর রাজতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান করার পরেই ফের জোরালো হয়।
দেখুন অন্য খবর-