কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা বা গুরুত্বপূর্ণ কাউকে নিয়ে সেমিনার, মিটিং করা যাবে না। বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। চলতি মাসের শুরুতেই ওয়েবকুপার বৈঠককে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়। আক্রান্ত হন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও উপাচার্য। দুই ছাত্রনেতাও জখম হন। সেই ঘটনার জল গড়ায় আদালতে। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। আদালত জানাল, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা গুরুত্বপূর্ণ কোনও ব্যক্তিকে নিয়ে কোনও সেমিনার বা মিটিং করা যাবে না। প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, যাদবপুরের পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক ছিল না। সেটা জানার পরও রাজনৈতিক নেতারা সেখানে যাওয়ার আমন্ত্রণ গ্রহণ কেন করলেন। এর বিরাট প্রভাব পড়তে পারে জেনেও তিনি কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন ?” বিষয়টি স্পষ্ট নয় আদালতের কাছে বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি।
বৃহস্পতিবার যাদবপুরের অশান্তি নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যাদবপুরে গুণ্ডারাজ চলছে। যাদবপুরে সমস্যা দীর্ঘদিনের। এর আগেও বহুবার সমস্যা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ ২০১৪ সালে পর্যাপ্ত সিসিটিভি লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা ওসির থেকে অনেক সিসিটিভি নিয়ে নেয়। সমাজ বিরোধীদের বিচরণ ক্ষেত্র ওটা । অবাধে ওখানে ঘোরাফেরা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ কিছু না করলে, রাজ্যকে না ডাকলে কিছু করার নেই। রাজ্য কিছু করতে পারবে না। কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা নিরুপায়। এরপরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিশ্ববিদ্যালয় কী কী পদক্ষেপ করেছে, তা হলফনামা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি।
কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী সোহম দাস মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যাপ্ত সিসিটিভি লাগানো ও পুলিশ পিকেট বসানোর আবেদন জানিয়েছিলেন। আবেদনকারীর তরফে আইনজীবী বিশ্বরুপ ভট্টাচার্য এদিন আদালতে বলেন, একজন আইনজীবী হিসাবে তিনি আবেদন জানিয়েছেন যাদবপুরে পর্যাপ্ত সিসিটিভি লাগানো হোক।ভিতরে পুলিশ পিকেট বসানো হোক।
আরও পড়ুন: পার্থই মাস্টারমাইন্ড! আদালতে বিস্ফোরক দাবি সিবিআই-এর
আদালতের প্রশ্ন, বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের কোনও ক্ষমতা থাকে না। বিশ্ববিদ্যালয় গেটে যারা থাকে তারা গেট পাশের বাইরে তাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোন প্রশিক্ষণ আছে? নেই।তারা কোন এজেন্সির। কেন রাজ্য পুলিশের সাহায্য নিচ্ছেন না। এরপরই বিশ্ববিদ্য়ালয়ের তরফে আইনজীবী বলেন, “আমরা চিঠি লিখেছি। উচ্চ শিক্ষা দফতরকে টাকার কথা জানানো হয়েছে। প্রায় দুকোটি টাকা রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে চিঠি লিখে চাওয়া হয়েছে জানুয়ারি মাসে, যাতে আরাও নিরাপত্তা ব্যাবস্থা আঁটোসাটো করা যায় সেজন্য।
এরপরই বিচারপতি বলেন, বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করুন। রাজনৈতিক রং বাদ দিয়ে কেন এই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছিল, সেটায় নজর দিন। ভাইস চ্যান্সেলর-সহ বাকিদের ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। তাঁরা চাইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন রাজনৈতিক নেতা বা ব্যাক্তিত্ত্বকে নিয়ে আপাতত কোন মিটিং মিছিল করা যাবেনা নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বেরিয়েছে। তারপরও সেখানে তারা থাকছে কিনা সেটা দেখতে হবে। প্রথমে যারা ছাত্র নয় তাদের বের করতে হবে।
অন্য খবর দেখুন