Sunday, September 14, 2025
বাঙালি কাউন্টডাউন
HomeScrollবর্ণ বিদ্বেষ আজ ইতিহাস! সাগরদ্বীপের দুর্গোৎসবে দুই বর্ণ মিলেমিশে একাকার
Sagardwip Durga Puja

বর্ণ বিদ্বেষ আজ ইতিহাস! সাগরদ্বীপের দুর্গোৎসবে দুই বর্ণ মিলেমিশে একাকার

গঙ্গাসাগর: বর্ণ বিদ্বেষের জেরে ভেঙে দু’ভাগ হয়ে গিয়েছিল সাগরদ্বীপের আদি দুর্গোৎসব কমিটি। এমনকি জাতিগত বিবাদকে কেন্দ্র করে অষ্টমীর দিন গুলিগোলা পর্যন্ত চলেছিল। আজও সেই ইতিহাস সাগরদ্বীপবাসীর মুখে শোনা যায়। ১৩৩২ সালে ১৩টি পরিবার মিলে শুরু করেছিল হরিণবাড়ি উত্তরপাড়া দুর্গোৎসব। তৎকালীন সময়ে যুধিষ্ঠির মণ্ডল নিজ উদ্যোগে সাগরদ্বীপে প্রথম দুর্গোৎসবের আয়োজন করেছিলেন। পরে প্রহ্লাদ মণ্ডল মন্দির তৈরির জন্য জমি দান করেন। সেই সময়ে টালির ছাউনি দেওয়া মাটির দেওয়ালের মন্দিরে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হত।

তবে শোনা যায়, এই মন্দিরে নিচু বর্ণের মানুষদের প্রবেশের অনুমতি ছিল না। এমনকি তাঁদের পুষ্পাঞ্জলি পর্যন্ত দিতে দেওয়া হত না। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে জাতিগত এই বিবাদ চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সেই বিবাদ চরম পর্যায়ে ওঠে। ১৩৩৮ সালে উঁচু ও নিচু দুই বর্ণের মধ্যে তুমুল গন্ডগোল বাঁধে। এমনকি গুলিগোলা পর্যন্ত চলে। সেই সময় এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। এরপর ১৩৩৯ সালে ওই মন্দির থেকে কিছুটা দূরে শুরু হয় নতুন দুর্গাপুজো।

আরও পড়ুন: বিভূতিভূষণের ‘ধুনির ঘরের পুজো’য় আজও নেই ধর্মীয় ভেদাভেদ

সেদিন স্বাধীনতা সংগ্রামী কানাই মিত্র, বিপিন বেরা, অধর চন্দ্র দাস, পঞ্চানন দাস ও বিজয় চক্রবর্তীর উদ্যোগে এই পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। নাম দেওয়া হয় সাগর থানা সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। সেই সময় পুজো মন্ডপে সকল বর্ণের মানুষ এসে পুজো দিতেন। আর সেই থেকে সাগরদ্বীপে শুরু হল প্রথম সার্বজনীন দুর্গোৎসব।

তবে এখন আর বর্ণ বিদ্বেষ নেই। এখন দুটি মন্ডপে এসে সকল বর্ণের মানুষ পুজো দিতে পারেন। এবিষয়ে হরিণবাড়ি উত্তরপাড়া দুর্গোৎসব কমিটির সম্পাদক অশোক মণ্ডল বলেন, “পূর্ব পুরুষদের মুখে শুনেছি তৎকালীন সময়ে বর্ণ বিদ্বেষের কারণে এই পুজো ভাগ হয়ে গিয়েছিল। তবে এখন আর সেই সমস্যা নেই। সকল বর্ণের মানুষ এখন এই মন্দিরে এসে পুষ্পাঞ্জলি দেন। গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় গত প্রায় ১০ বছর আগে স্থায়ী মন্দির তৈরি করা হয়েছে।”

সাগর থানা সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির এক কর্মকর্তা দেশপ্রদীপ মাইতি বলেন, “এই পুজো মন্ডপে দুই বর্ণের ব্রাহ্মণকে দিয়ে পুজো করানো হয়। একজন হলেন উঁচু ও অন্যজন নিচু বর্ণের ব্রাহ্মণ। বংশ পরম্পরায় তাঁরা পুজো করে আসছেন। মূলত সমাজ থেকে বর্ণ বিদ্বেষকে মুছে ফেলার জন্য এই ভাবনা।”

দেখুন অন্য খবর

Read More

Latest News