ওয়েবডেস্ক: আমার হাতেখড়ি ছাত্র পরিষদ (Student council) থেকেই। যোগমায়া দেবী কলেজের (Yogmaya Devi College) ছাত্র পরিষদের স্রষ্টা ছিলাম আমি। আর তারপর টানা তিন বছর আমি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হই। তাঁর বিরুদ্ধে কেউ প্রার্থী দিতে পারত না, লড়াই করে তিনি ডিএসও-কে ভেঙে দিয়েছিলেন। আজ তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস থেকে রাজ্যবাসীর কাছে ফের একবার নিজের সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরলেন তৃণমূল সুপ্রিমো (Mamata Banerjee)।
সেইসময়ের কথা তুলে ধরে মমতা আরও বলেন, আমাদের থেকে সিনিয়র তখন পার্থ দা, অশোক দা ছিলেন, মনে আছে ওদের কথা। কারণ সুব্রত দার নেতৃত্বে আমরা কাজ করতাম। মেয়েদের মধ্যে বক্তৃতা দেওয়ার কেউ ছিল না, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তো তখন ছিল না, তখন আমাকে সব প্রোগ্রামে বক্তৃতা দিতে নিয়ে যেত। বাইরেও যেতে হয়েছে। আমার মতো দেশটাকে ভালো করে কেউ চেনে না’।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানান, বহু অত্যাচারের পরও তিনি লড়েছেন, মানুষের পাশে থেকেছেন। আগামীতেও এইভাবে লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি।
বাংলা ও বাঙালির হেনস্থা প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলার মনীষিরা যারা বাংলার স্বাধীনতার আনার জন্য লড়াই করে গিয়েছেন, তাদের তিনি কোনওদিন ভুলবেন না। সংস্কৃতিতে সেরা বাংলা।” বিরোধীদের নিশানা গর্জে উঠে তিনি বলে, “যাঁরা ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বড় বড় কথা বলে। নিয়োগে বাধা দেয়। ভর্তিতে বাধা দেয়। আমি দুঃখিত, জয়েন্টের ফল প্রকাশে একটু দেরি হয়েছে। জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল বেরোতে দেরি হয়েছে, কেস করেছে বলে। এরা সব দু’নম্বরি, একদিকে কেস করে, অন্যদিকে আমাদের নামে কুৎসা করে, লড়াই করো রাজনৈতিকভাবে, পিছনের দরজা দিয়ে লড়াই করে তোমরা সব কিছু আটকে রাখ আর বড় বড় কথা বলো।”
আরও পড়ুন- ১০০ দিনের কাজে ‘১ নম্বর’ ছিলাম, মেয়ো রোড থেকে সুর চড়ালেন মমতা
বিজেপি শাসিত রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমোর হুঙ্কার, ২২ লক্ষ মানুষকে ডেকে নিয়ে গিয়ে এখন অত্যাচার করা হচ্ছে। তারা দক্ষ বলেই তো তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাহলে তাদের উপর কেন অত্যাচার করা হচ্ছে? আমাদের পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার হলে, তখন মুখে বোল ফোটে না। পরশুদিনও হাবড়ায় একজন মারা গিয়েছেন। তাঁকে মহারাষ্ট্রে মারা হয়েছিল।” কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গুলির সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর তোপ নির্বাচন আসলেই দাদাগিরি। একটা একেন্সি নয়। আগে কখনও কেন্দ্রীয় এজেন্সি বিজেপি করত না। কোনও রাজনৈতিক দল করত না।”
বৃহস্পতিবারের এই সভা থেকেও ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ১০০ দিনের কাজ পর পর ৪-৫ বছর আমরা ১ নম্বরে ছিলাম। রাস্তা নির্মাণে আমরা এক নম্বরে ছিলাম। বেশ কিছু কেন্দ্রীয় প্রকল্পে আমরা এক নম্বরে ছিলাম। গ্রামীণ আবাস যোজনা, রাস্তা তৈরিতে এক নম্বরে ছিলাম। নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এদিন বলেন, “নির্বাচন কমিশনের চেয়ারকে আমি সম্মান করি। কিন্তু জানেন তো, বাচ্চারা ললিপপ খেলে মানায়। কিন্তু বড়রা যদি কোনও পার্টির হয়ে ললিপপ খায়, সেটা মানায় না।”
সদ্য ট্রেলার মুক্তি পাওয়া এক বিতর্কিত ছবিকে নিশানা করে মমতা বলেন, “রিসেন্ট কথা বলুন। ১৯৪৬ সালের কথা বলছেন কেন? তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? তখন তো মায়ের পেটেও ছিলেন না। আমিও ছিলাম না। এত জ্ঞান কোথা থেকে এল? জ্ঞানভান্ডারী, জ্ঞানবৃক্ষ সব জ্ঞানবৃক্ষ নয়, এরা হচ্ছে মগজে মরুভূমি। এরা কোনও দিনও বৃক্ষ হতে পারে না। বাংলার ইতিহাস ভুলে গেছেন? এখন আবার সিনেমা বানাচ্ছে টাকা দিয়ে দিয়ে। বাংলার বদনাম করার জন্য, বাংলাকে অপমান করার জন্য।” সম্প্রতি একটি হিন্দি ছবিতে ক্ষুদিরাম বসুকে ক্ষুদিরাম সিং নামে দেখানো হয়, সেই নিয়েই ম্যারাথন তোপ দাগেন তিনি।
দেখুন আরও খবর-