ওয়েব ডেক্স: ভারতের উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) প্রয়াগরাজে (Prayagraj) শুরু হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব মহাকুম্ভ মেলা। প্রতি ১২ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হওয়া এই মেলা লাখ লাখ তীর্থযাত্রীর ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে। হিন্দু ধর্মের অন্যতম পবিত্র এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা ভিড় জমাচ্ছেন। গঙ্গা, যমুনা এবং পৌরাণিক সরস্বতী নদীর সঙ্গমস্থলে স্নান করে পাপমোচন এবং মোক্ষ লাভের আশায় উৎসবস্থলে তীর্থযাত্রীদের ঢল নেমেছে।
মহাকুম্ভ মেলা ৪৫ দিনব্যাপী আয়োজিত হয়, যা শুরু হয়েছে ১৩ জানুয়ারি এবং শেষ হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি। মেলার সময়ে নির্ধারিত ছয়টি বিশেষ শুভ দিনে তীর্থযাত্রীরা স্নান করবেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দিনগুলো হলো মকর সংক্রান্তি, মৌনী অমাবস্যা এবং মহা শিবরাত্রি। এসব দিনে লাখ লাখ ভক্ত নদীতে ডুব দিয়ে পাপ মোচনের জন্য স্নান করবেন। এবারের মেলায় প্রায় ৪০ কোটি মানুষের উপস্থিতি প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে মেলার নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৪ হাজার হেক্টর এলাকাজুড়ে তীর্থযাত্রীদের জন্য তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, ৪০ হাজার পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মী, ১৫ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। ৬৭ হাজার ল্যাম্পপোস্ট, দেড় লাখ টয়লেট, ৩০টি ভাসমান সেতু, এবং বিশাল পার্কিং লটসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।
হিন্দু পুরাণ অনুসারে, সমুদ্র মন্থন থেকে প্রাপ্ত অমৃতের জন্য দেবতা ও অসুরদের লড়াইয়ের সময় কিছু অমৃতের ফোঁটা প্রয়াগরাজসহ চারটি স্থানে পড়েছিল। সেই থেকে প্রতি ১২ বছর অন্তর এই স্থানগুলোতে কুম্ভ মেলার আয়োজন করা হয়। এবার মেলার বিশেষত্ব হলো, বর্তমান গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান সেই সময়কার অবস্থানের সঙ্গে মিলে গেছে, যা ১৪৪ বছরে একবার ঘটে। এ কারণে এবারের মেলাকে ‘মহাকুম্ভ’ বলা হচ্ছে।
মেলার শেষ দিন, মহা শিবরাত্রি উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে সর্বাধিক মানুষের উপস্থিতি প্রত্যাশা করা হচ্ছে। জ্যোতিষীদের মতে, এই দিনটি তীর্থযাত্রীদের জন্য অত্যন্ত পুণ্যময়। এদিন গঙ্গার পবিত্র জলে স্নান করার মাধ্যমে তীর্থযাত্রীরা পাপমুক্তির পাশাপাশি মোক্ষ লাভের আশা করবেন। এই মহাকুম্ভ মেলা জাতিসংঘের ইউনেসকো কর্তৃক মানবতার অমূর্ত ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত, যা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনন্য উদাহরণ।
দেখুন আরও খবর: