Tuesday, June 10, 2025
HomeScrollFourth Pillar | মোদিজির রাজত্বে গরিবরা হঠাৎ বড়লোক হয়ে যাচ্ছেন
Fourth Pillar

Fourth Pillar | মোদিজির রাজত্বে গরিবরা হঠাৎ বড়লোক হয়ে যাচ্ছেন

সংবাদমাধ্যমও এই ‘গরিব কল্যাণের’ এই মরীচিকার রঙিন ছবি ছাপিয়ে জয়জয়কার রব তুলেছে

Follow Us :

নিশিকান্ত কামার সক্কালে উঠে দেখলেন তিনি বড়লোক হয়ে গেছেন কী কাণ্ড! তারপর খোঁজ নিয়ে দেখলেন যে কেবল তিনিই নন, মোদি সাম্রাজ্যের ১৭ কোটি মানুষ আর দরিদ্র নেই, তাঁরা রাত পোয়াতেই দারিদ্র সীমার উপরে উঠে গেছেন। রাতে ঘুমোতে গিয়েছিলেন এক পেট খিদে নিয়ে, সকালে উঠে সে খিদে আবার চাগাড় দিচ্ছে, কিন্তু তিনি আর এখন দরিদ্র নয় জানার পরে চিন্তা, ওই যে ৮০ কোটি মানুষ তো রেশন পেতেন, তাঁর মধ্যে তো তিনিও আছেন, এখন আর আছেন কি? না থাকলে খাবার জুটবে কোত্থেকে? ক’দিন আগেই বিশ্ব ব্যাঙ্কের এক রিপোর্টের ভিত্তিতে মোদি সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, দেশে “অতি দারিদ্রের হার মানে সিভিয়ার পভার্টি রেট ২০১১-এ ১৬.২ শতাংশ থেকে কমে ২০২৩-এ ২.৩ শতাংশে এসে ঠেকেছে। মানে ১৪ শতাংশ অতি দরিদ্র এখন কেবল দরিদ্র, তারা অতি দারিদ্রের শৃঙ্খলমুক্ত। এবং অঙ্কের হিসেবে ভারতের প্রায় ১৭ কোটি মানুষ নাকি এখন ‘অতি দারিদ্রের’ থেকে মুক্ত। নিম্ন মধ্যবিত্তদের মধ্যেও দারিদ্রের প্রবণতা নাকি এই সময়কালে অন্তত অর্ধেকের কমে নেমে গিয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের এই রিপোর্ট ধরেই যথারীতি ‘বিকাশিত ভারতের’ ঝাঁ চকচকে ছবি প্রচারে নেমে পড়েছে গোদি মিডিয়া। সেই বিজ্ঞাপন এমনকী বিপ্লবী পত্রিকা গণশক্তিতেও। বিভিন্ন মূলস্রোতের সংবাদমাধ্যমও এই ‘গরিব কল্যাণের’ এই মরীচিকার রঙিন ছবি ছাপিয়ে জয়জয়কার রব তুলেছে, নেহরু যা পারেননি, সেটা করে দেখালেন মোদিজি।

এদিকে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের এক বিরাট অংশের দাবি, তথ্য কারচুপি এবং ইচ্ছা করে গবেষণার পদ্ধতি পালটেই সরকারের একেবারে মন মতো তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। মূলত ২০১১-১২র ‘কনজাম্পশান এক্সপেন্ডিচার সার্ভে ও 2022-23র ‘হাউজহোল্ড কনসাম্পশান এক্সপেন্ডিচার সার্ভে’-র ভিত্তিতে বিশ্ব ব্যাঙ্ক দারিদ্র হ্রাসের এই দাবি করেছে। এই দুই সমীক্ষাই গড়পরতা যে কোনও পরিবার খাবারের পিছনে কত খরচ করে, তা যাচাই করতে করা হয়। দিনে ১৮৫ টাকার বেশি খরচের সামর্থ্য নেই দেশের ১৩ কোটি মানুষের। কিন্তু তারা খাবারে আগের তুলনায় বেশি খরচ করলেই নাকি আর ‘গরিব’ নয়! ব্যয় বেড়েছে লাফিয়ে তবে মজুরিতে বৃদ্ধি কোথায়? মজুরির গ্যারান্টি কোথায়?  নেই। দেশের ১ শতাংশ মানুষ ৫৪ শতাংশ সম্পদের মালিক, আন্তর্জাতিক বৈষম্য সূচকে ১০৮ নম্বরে ভারত, আমার দেশ। দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ পরিষ্কার পানীয় জল পান না, দেশের ২০ শতাংশ মানুষ পর্যাপ্ত নিকাশি ও স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত, সরকারি প্রকল্পে বরাদ্দ হলেও মানুষ তার সুযোগ পাচ্ছে না কিন্তু ঘোষণা এল, দারিদ্র ভ্যানিশ।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন দুটো সমীক্ষার রিপোর্ট কোনও ভাবেই একে অপরের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। মানে গোয়ালের গরু আর পুকুরের মাছেদের সংখ্যাবৃদ্ধির তুলনা করলে যেমন হয়, এটা ঠিক সেই পদ্ধতি মেনে করা হয়েছে। সমীক্ষায় যাদের মতামতকে তথ্যের আকারে তুলে ধরা হয়েছে, তাদের দুটো ক্ষেত্রে একেবারে ভিন্ন বা সম্পর্কই নেই, তেমন প্রশ্ন করা হয়েছে। আর সেটা করা হয়েছে এই সমীক্ষাকে সরকারি ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচারের জন্য, আসলে মূল তথ্য গোপন করা হয়েছে, নির্লজ্জভাবে প্রভাবিত করা হয়েছে। যে কোনও সমীক্ষা করতে গেলে গবেষকরা আপামর জনসংখ্যার মধ্যে থেকে এক দল লোককে নির্বাচিত করেন। রাশিবিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘নমুনা’ বা স্যাম্পেল বলে। সমীক্ষার ফলাফল যাতে সঠিক ভাবে পাওয়া যায়, তার জন্য এই ‘নমুনার’ মধ্যে যত ভিন্ন শ্রেণি, জাত, লিঙ্গ, সম্প্রদায় ও অঞ্চলের মানুষ রাখা যায়, সমীক্ষকরা সেই চেষ্টাই করে থাকেন। কিন্তু ২০২২-২৩র সমীক্ষায় তথ্য যাতে সরকারি প্রচারের দাবির সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে, মানে তাঁদের বলা হয়েছিল, দরিদ্র সংখ্যা কমাতে হবে, ওনারা কমিয়েছেন। আর সেটারই প্রাণপণ চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | সিঁদুর বেচা প্রধানমন্ত্রী

প্রথমত, ইচ্ছে করে এমন ‘নমুনা’ হিসেবে এমন ব্যক্তিদের রাখা হয়, যাদের থেকে মনমতো উত্তর পাওয়া যাবে। দ্বিতীয়ত, সমীক্ষার জন্য এমন স্থান নির্বাচন করা হয়েছে, যেখানকার অবস্থা ততটা খারাপ নয়। তৃতীয়ত, সমীক্ষায় ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ‘নমুনা’- দের এমন প্রশ্ন করা হয়েছে যার উত্তর সরকারি প্রচারের অনুকূল হয়। যোজনা কমিশন তুলে দিয়ে মোদি সরকার যে ‘নীতি আয়োগ’ তৈরি করে, সেই সংস্থাই এই গোটা তথ্য কারচুপি প্রকল্প তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিল। খোদ বিশ্ব ব্যাঙ্কের এই রিপোর্টই জানিয়েছে, নতুন সমীক্ষায় পদ্ধতিগত কৌশলে বদল আনা হয়েছে। একটু বুঝিয়ে বলি, ধরা যাক ২০১১-র সমীক্ষায় মহারাষ্ট্রের কোনও এক ‘নমুনা’-কে তাঁর পরিবারের মাসিক খাওয়ার খরচ জানতে চাওয়া হয়। ধরা যাক সেই ব্যক্তি গ্রামের বাসিন্দা। সে হয়তো বলল ৫০০ টাকা। বাংলার গ্রামে আর এক জনকে একই প্রশ্ন করা হল, সেও বলল ৫০০ টাকা। এই উত্তরের ভিত্তিতে কাকে ‘অতি দরিদ্র’ বলে চিহ্নিত করা হবে? কারণ দুই রাজ্যে জীবনযাত্রার খরচ তো আলাদা। এদিকে ২০২২-র সমীক্ষার ক্ষেত্রে প্রথমেই খাবারকে ‘পচনশীল’ (দুধ, শাক, সবজি) ও ‘পচনশীল নয়’ ( চাল, আটা, ডাল) এমন দু’টি ভাগে বিভক্ত করা হয়। সেই আগের ব্যক্তিকেই যদি তাঁর পরিবারের মাসে সবজির পিছনে কত টাকা খরচ হয় তা জিজ্ঞাসা করা হয়, সে হয়তো বলছে এক হাজার টাকা।

সরকারের রিপোর্টে যেহেতু এই শ্রেণির ব্যক্তিদের বিনামূল্যে রেশন ‘বরাদ্দ’ করার কথা বলা হয়েছে, তাই আগে থেকেই ধরে নেওয়া হয়েছে চাল, আটা বা ডালের পিছনে তাঁর কোনও খরচ হয় না। তবে বিনামূল্যে রেশন যেহেতু বরাদ্দ হলেও প্রাপ্য নয়, তাই তাতে অন্তত ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা তাতে খরচ করতে হচ্ছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে এই ‘নমুনা’ হিসেবে নির্বাচিত ব্যক্তির পরিবারে খাওয়ার খরচ প্রায় দেড় হাজার টাকার কাছাকাছি। সরকারি সমীক্ষকরা প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ধরে নিচ্ছেন, ২০১১-এ ‘অতি দরিদ্র’ হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তি ২০২২-এ খাবারের পিছনে অন্তত দ্বিগুণ বেশি খরচ করতে পারছেন। ফলে তাঁর ক্রয় ক্ষমতায় ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। ফলে তাঁকে আর অতিদরিদ্র’ বলা যায় না। উলটোদিকে বিশেষজ্ঞদের মত, জনসংখ্যার বড় অংশকে আগের তুলনায় খাবারের পিছনে বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে মানে এই নয় যে তাদের আর দারিদ্র নেই। বরং খাদ্যে বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধির জেরে গরিব মানুষ কী ব্যাপক সমস্যার মুখোমুখি, তা আরও বেশি করে প্রমাণ হচ্ছে। যদি খাবারের খরচ এবং মজুরি সমান তালে বাড়ত, তবে হয়তো দারিদ্র্য কমেছে বলে দাবি করা বিজ্ঞানসম্মত হত। তবে গত দশ বছরে মজুরিতে তেমন কোনও পরিবর্তন তো দেখা যায়নি। ২০১১ থেকে ২০২৫-র মধ্যে খাবারের দাম গড় বৃদ্ধির হার ১৬৬ শতাংশ। কিন্তু মজুরিতে গড় বৃদ্ধি ৯২ শতাংশ। অর্থাৎ যে কোনও ব্যক্তি তাঁর আয়ের যতটুকু অংশ খাবারের পিছনে খরচ করে থাকেন, তা অনেকটা বেড়েছে।

গড়ে হিসেব করলে, যে কোনও ব্যক্তি আগে তাঁর বেতনের ৩৩ শতাংশ খাবারে খরচ করতেন। এখন তিনি অন্তত ৫০ শতাংশ খরচ করতে বাধ্য হচ্ছেন। গরিব মানুষ, দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের জন্য তা আরও বেশি। এই অংশের মানুষের আয় প্রায় বাড়েনি বললেই চলে, তবে খাবারের খরচ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অনেক সময় আয়ের প্রায় ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত তাঁদের খাবারের পিছনে খরচ করতে হচ্ছে। পাশাপাশি দারিদ্র মাপার আর এক মাধ্যম নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৪-এ ‘মাল্টি ডাইমেনশনাল পভার্টি ইন্ডেক্স’, বহুমাত্রিক দারিদ্র সূচকের ভিত্তিতে দেশে দারিদ্র কমেছে বলে মোদি সরকারের নীতি আয়োগ এক রিপোর্ট প্রকাশ করে। এখানেও বেশ কয়েক জন অর্থনীতিবিদ এই রিপোর্টে তথ্য কারচুপির অভিযোগ করেছেন। এই ক্ষেত্রেও একই কায়দায় খরচে বৃদ্ধির সূচক ধরেই পরিস্থিতিতে উন্নতির বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তথ্য গোপন, কারচুপি থেকে জনগণনায় টালবাহানা করেই ‘গরিব কল্যাণের’ মিথ্যের ফানুসে মোদি সরকার হাওয়া জুগিয়ে চলেছে।

নানা জায়গায় মোদি সরকার দাবি করেছে, ৪ কোটি পরিবারকে নাকি পাকা বাড়ি দেওয়া হয়েছে, ৮১ কোটি মানুষকে প্রতি মাসে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হয়েছে, ৫৫ কোটি মানুষকে নাকি ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এটাই আপাতত মোদি শাসনের বিজ্ঞাপন। এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি প্রচারে ‘বরাদ্দ’ এবং ‘প্রাপ্তির’ ফারাক মুছে দেওয়ার জঘন্য চেষ্টা চলছে। এই বিজ্ঞাপনী কারসাজিতে জনগণকে বোকা বানানো হচ্ছে। সরকারি রিপোর্টে এসব ‘বরাদ্দ’ করার কথা বলা হয়েছে ঠিকই, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা এখনও কে যে পাচ্ছেন তা জানা যাচ্ছে না। অর্থাৎ ৪ কোটি পরিবারের পাকা বাড়ি পাওয়ার কথা ঠিকই, কিন্তু সেই বাড়িগুলো এখনও তৈরি হয়নি। ৮১ কোটি মানুষের বিনামূল্যে রেশন পাওয়ার কথা, কিন্তু সেই সংক্রান্ত কাগজপত্র এখনও পাড়ার রেশনের দোকানে এসে পৌঁছায়নি। ৫৫ কোটি মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়ার কথা, কিন্তু তাঁদের কাছে ‘আয়ুষ্মান ভারত কার্ড’-ই এসে পৌঁছয়নি। আসলে কাগজে কলমে এক উন্নতির খতিয়ান দেখিয়ে মোদি সরকার মানুষের কাছে ভোট প্রচারে নেমেছে। কিন্তু একটা সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। সেই কথা শুরুর নিশিকান্ত কামার, খাতায় কলমে তাকে অতি দরিদ্র থেকে দরিদ্র তালিকায় পাঠিয়ে মোদিজি সংখ্যাতত্ত্বের ম্যাজিক দেখালেন বটে, কিন্তু পেটের খিদে? হ্যাঁ সেখান থেকেই উঠে আসছে, উঠে আসবে প্রতিবাদ।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Rekha Patra | BJP | খবরের জেরে গতকাল সুস্থ, আজ অসুস্থ? রেখাকে নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা তুঙ্গে
00:00
Video thumbnail
Rekha Patra | BJP | সোমবার কী বললেন রেখা পাত্র? দেখুন কলকাতা টিভি EXCLUSIVE
00:00
Video thumbnail
Rekha Patra | BJP | সন্দেশ আ/টকে শুভেন্দুর গলায়, হাসপাতালে রেখা, দেখুন কলকাতা টিভি EXCLUSIVE
00:00
Video thumbnail
Rekha Patra | BJP | রবিবার রেখা পাত্রর স্বামী কলকাতা টিভিকে কী বলেছিলেন? দেখুন EXCLUSIVE ভিডিও
00:00
Video thumbnail
বাংলা বলছে (Bangla Bolche) | শেষ মুহূর্তে G-7-এ আমন্ত্রণ, বিপাকে বিশ্বগুরু?
00:00
Video thumbnail
CESC | Nabanna | স্মার্ট মিটারে ভুরি ভুরি অভিযোগ, বড় সিদ্ধান্ত বিদ্যুৎ দফতরের
00:00
Video thumbnail
Anubrata Mondal | Suvendu Adhikari | অনুব্রতর গড়ে শুভেন্দুর মিছিল, কী অবস্থা? দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
NATO | Vladimir Putin | NATO বনাম রাশিয়া, তৃতীয় বিশ্বযু/দ্ধ সময়ের অপেক্ষা? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
00:00
Video thumbnail
Bihar Election | NDA | বিহারে ভাঙল NDA জোট? চিরাগ লড়বেন একা, NDA সরকারের পতন সময়ের অপেক্ষা
00:00
Video thumbnail
Dilip Ghosh | BJP | ২৬-এর ভোটে বিজেপির প্রার্থী হবেন দিলীপ ঘোষ? দেখুন কলকাতা টিভি EXCLUSIVE
00:00