Friday, August 22, 2025
HomeScrollপাথরপ্রতিমায় বিষাদের সুর!

পাথরপ্রতিমায় বিষাদের সুর!

পাথরপ্রতিমা: সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাটে ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ! দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে বেআইনি বাজি মজুত করা ছিল বণিক পরিবারে। সেই বাজি এবং গ্যাস সিলিন্ডার দুইয়ের বিস্ফোরণ ঘটে। আর সেই ঘটনায় স্পটেই মৃত্যু হয় ৭ জনের, পরেরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮। ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় একই পরিবারের চার শিশু সহ মৃত্যু হয় আরও বেশ কয়েকজনের।

আর এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে পাথরপ্রতিমার (Patharpratima) বণিক পরিবারে। আর এক মাস পরেই বণিক পরিবারের খুদে সদস্যদের অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তার আগেই সব শেষ।

একমাস পর যেই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল, সেই মত চলছিল বণিক পরিবারে বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা। ছিল সাজো সাজো রব। পরিবারের দুই খুদে সদস্যের অন্নপ্রাশ্নের অনুষ্ঠানে আত্মীয়স্বজন থেকে প্রতিবেশী সকলকে নিমন্ত্রণ করার ভাবনাও ছিল। আগেই চন্দ্রকান্তের ৬ মাস বয়সী মেয়ে অস্মিতার অন্নপ্রাশন হয়েছিল ঘরোয়া ভাবে। সেই সময় ঘরোয়া ভাবে অন্নপ্রাশন হয় কারণ তার একমাসের মাথাতেই চন্দ্রকান্তের ছোট ভাই তুষারের পাঁচ মাসের ছেলে অঙ্কিত পা রাখবে ছয়ে। তখনই ভাই ও বোনকে একসঙ্গে নিয়ে গিয়ে বড় কাছারির মন্দিরে পুজো দেওয়ার কথা ছিল।

আরও পড়ুন: পাথরপ্রতিমার ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া মমতার

জানা যাচ্ছে, অনুস্থানের জন্য গাড়ি ভাড়াও হয়ে গিয়েছিল। বড় কাছারি মন্দিরে পুজো দিয়ে ফেরার পরেই ধুমধাম করে দুই শিশুর অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা নিয়েছিল বণিক পরিবার। কিন্তু সেই পরিকল্পনা রয়ে গেল পরিকল্পনাতেই। বাস্তবে প্রতিফোলন করল না সেই ভাবনা। তার আগেই আগুনের লেলিহান শিখায় সব শেষ হয়ে গেল।

আগুনের গ্রাসে পরিবারের বাকি ছয় জনের সঙ্গে প্রাণ হারায় দুই ভাই বোনও। সোমবার রাতে পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাট থানার দক্ষিণ রায়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃতীয় ঘেরিতে বাজি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় আট জনের। এঁরা প্রত্যেকেই একই পরিবারের সদস্য।

গোটা ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা গ্রামজুড়ে। দুই শিশু অস্মিতা ও অঙ্কিতের কথা গ্রামবাসী কোনভাবেই ভুলতে পারছেন না। প্রশ্ন করলেই অঝোরে কেঁদে ফেলছেন গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দারা। এ বিষয়ে গ্রামের এক প্রবীণ নাগরিক যোগেন্দ্র গায়েন বলেন, “দুই শিশুই খুব ফুটফুটে ছিল। খুব একটা কান্নাকাটি করত না। সবারই কোলে যেতো। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গ্রামের মহিলাদেরই কোলে কোলে তারা ঘুরে বেড়াত। এমনকি বাড়ির বাইরে তাদেরকে দেখলেই প্রতিবেশীরা কোলে নেওয়ার জন্য টানাটানি শুরু করে দিতেন। আর একমাস পরই ভাই ও বোনের একসঙ্গে অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। কেবলমাত্র ঠাকুরের প্রসাদ ও পায়েস মুখে দিয়ে অস্মিতার অন্নপ্রাশন সারা হয়েছিল। অঙ্কিতের ছয় মাস পূরণ হলেই ঘটা করে অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নিমেষের মধ্যেই সেই পরিকল্পনা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গিয়েছে। এখন গ্রামবাসীরা মোবাইলে দুই শিশুর ছবি দেখলেই কেঁদে উঠছেন।”

দেখুন অন্য খবর

Read More

Latest News