ওয়েব ডেস্ক : কন্যা সন্তান হওয়ায় মাত্র কয়েক দিনের এক নবজাতককে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করেছিল ঠাকুমা। লিঙ্গ বৈষম্যের এমন নির্মম ঘটনা ফের নাড়িয়ে দিল ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলার মানবিক চেতনা। সমাজে এখনও কন্যা সন্তান নিয়ে মানসিকতার পশ্চাৎপদতা যে কতটা গভীরে প্রোথিত, এই ঘটনাই যেন তার জ্বলন্ত প্রমাণ। বিশ্ব ক্রিকেটে যখন ভারতীয় মহিলা দল দাপটের সঙ্গে বিশ্বজয় করছে, তখন সমাজের এক কোণে এখনও কন্যা সন্তান জন্ম নেওয়াকে ‘অভিশাপ’ বলে মনে করা হচ্ছে। এই বৈপরীত্যই জেলা প্রশাসনকে নড়িয়ে দিয়েছে। সেই কারণেই গোপীবল্লভপুর (Gopiballabpur) দুই ব্লকের ওই গ্রামটিকেই প্রশাসন বেছে নিয়েছে সচেতনতার পাঠদানের কেন্দ্র হিসেবে।
শনিবার জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা যাবেন ঘটনাস্থলে। তবে তার আগেই, শুক্রবার গোপীবল্লভপুর (Gopiballabpur) দুই ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির যৌথ উদ্যোগে কন্যাশ্রীদের নিয়ে একটি সচেতনতামূলক পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালানো হয় কন্যা সন্তান রক্ষা, কিশোরী গর্ভাবস্থা ও বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে।
আরও খবর : জন্মদিনে বড় ঘোষণা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের! সুবিধা পাবেন অনেকে
এই পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন গোপীবল্লভপুর (Gopiballabpur) ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শর্বরী অধিকারী, পুর্ত কর্মাধ্যক্ষ টিঙ্কু পাল, পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অনুপম মল্লিক, ব্লকের সহকারী বিডিও রাজীব মুর্মু সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামে গিয়ে মহিলাদের বোঝানো হয়— কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণ মা ও শিশুর উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।
পাশাপাশি, কন্যা সন্তান রক্ষার গুরুত্বও বিশেষভাবে তুলে ধরা হয় এই সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে। এদিন সকালেই গোপীবল্লভপুর দুই ব্লকের ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক রাহুল বিশ্বাস ওই গ্রামের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং গ্রামীণ মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেন। সেই সঙ্গে ছোট ছোট বাচ্চাদের হাতে তুলে দেন চকলেট। ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক রাহুল বিশ্বাসকে কাছে পেয়ে খুশি এলাকার মানুষজন থেকে শুরু করে ক্ষুদে পড়ুয়ারা।
উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগেই ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে ওই এলাকায় টানা দু’দিন ধরে সচেতনতামূলক শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছিল।প্রসঙ্গত,গত শনিবার বেলিয়াবেড়া থানার একটি গ্রামে আটদিনের এক কন্যা শিশুকে দুধে কিটনাশক মিশিয়ে খাওয়ানোর অভিযোগে ঠাকুমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।ওই ঘটনার পরই জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে এবং এই গ্রামকে থেকেই শুরু হয় নতুন করে “বেটি বাঁচাও, সমাজ বাঁচাও” প্রচারের পথচলা।
দেখুন অন্য খবর :







