Wednesday, November 26, 2025
HomeScrollAajke | এবার সেম সাইড গোলের পালা শুরু বিজেপিতে, জাস্টিস গাঙ্গুলীর পরে...
Aajke

Aajke | এবার সেম সাইড গোলের পালা শুরু বিজেপিতে, জাস্টিস গাঙ্গুলীর পরে দিলীপ ঘোষ

বঙ্গের নির্বাচনী সার্কাসে বিজেপি পক্ষের জোকারেরা নেমে পড়েছেন

Written By
অনিকেত চট্টোপাধ্যায়

‘এত ভঙ্গ বঙ্গদেশ, তবু রঙ্গভরা’- ঈশ্বর গুপ্তের লেখা। হ্যাঁ, সেদিনেও ছিল, আজও আছে। বঙ্গে রঙ্গের অভাব নেই। বিপ্লবী নায়ক, পরিচালকেরা কামান লইয়া রওনা দিলেন সদর দরজায় কামান দাগবেন বলে, কিন্তু ক’দিনের মধ্যে একে একে সেই বিপ্লবীরা সদর দরজা দিয়েই সেঁদিয়ে গেলেন ক্ষমতার পেটে। মুর্শিদাবাদের হুমাউন কবীর এ বঙ্গের আসাউদ্দিন ওয়েইসি হতে চান, এবারে তাঁর ছ’নম্বর দল বদলের অপেক্ষায়, কিন্তু তারও আগে তিনি কীর্তি স্থাপন করতে চান, এই বঙ্গে বাবরি মসজিদ তৈরি করে। না, প্রকৃত মুসলমান না ইতিহাস পড়েছেন, সবটাই বদহজম হয়ে গিয়েছে, উনি মীর বাঁকি হতে চান। ওদিকে আমাদের শান্তিকুঞ্জের মেজ খোকা প্রায় প্রতিদিন সাত সকালে উঠেই খবর নিচ্ছেন, রোহিঙ্গা কতগুলি ধরা পড়িল বটে? এখনও এক পিস রোহিঙ্গার খবর নাই। সব মিলে রঙ্গের কমতি নেই। যেটুকু বাকি ছিল বিজেপির নেতারা তা পুষিয়ে দিচ্ছেন।

আগে বিচারালয়ে গেলেই ‘মি লর্ড’, ‘মাই বাপ’ শুনতে অভ্যস্থ জাস্টিস গাঙ্গুলী বারান্দাতেও বেরোবার রিস্ক নিতে পারছেন না, অশ্রাব্য ভাষায় নাকি গালিগালাজ উড়ে আসছে। আসবেই তো, তিনি আইটি সেল তো তত অ্যাকটিভ নয়, কিন্তু তাদের ক্যাডারেরা পাড়ায় মহল্লায় খুব অ্যাকটিভ। তো সেই তিনি বলেছিলেন, “সবই গট আপ গেম চলছে”, কার সঙ্গে কার গট আপ? বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের, তাই নাকি সিবিআই, ইডি কিছুই করিতেছে না। অবশ্য এসব উনি বললেন না, ওনাকে দিয়ে বলানো হল, সেই কেসটাই এখন ব্যোমকেশ বক্সি দেখছেন। এরই মধ্যে দিলু ঘোষ, যিনি এখনও এই বাংলাতে ঠিক কোন দায়িত্বে আছেন, তা কেউ জানে না, তো তিনি বলেছেন, অনুপ্রবেশ তো হচ্ছে, কিন্তু তার জন্য দায়ী তো বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স। হ্যাঁ, এটাই বিষয় আজকে, এবার সেম সাইড গোলের পালা শুরু বিজেপিতে, জাস্টিস গাঙ্গুলীর পরে দিলীপ ঘোষ।

আরও পড়ুন: Aajke । প্রকাশ্যে বিজেপির মিথ্যাচার মতুয়া গড়ে, মমতার প্রবল চাপে বিজেপি? ২৬- এ কে করবে বাজিমাত?

আসলে এক দল সেই কবে ২০২১ সালে ছায়া মন্ত্রিসভাই তৈরি করে ফেলেছিল, সেই দল এখন নিজেরাই জানে, যত হুঙ্কারই দেওয়া হোক না কেন, এবারে আগের ৭৭টা আসন দখলে রাখাই অসম্ভব। এটা যত দিন যাচ্ছে, তত ছড়াচ্ছে। সেটা একধরণের অস্বস্তি তৈরি করছে দলে। কাজেই শুভেন্দু তাঁর বকলমে জাস্টিস গাঙ্গুলীকে দিয়ে বলিয়েই রাখলেন, কেন্দ্রীয় সরকারি এজেন্সিগুলোর জন্যই আমরা হেরে যেতে পারি। এবারে দিলীপ ঘোষও সেই রাস্তায় হাঁটলেন। অনুপ্রবেশ, যা কিনা এই মূহুর্তে অমিত শাহ, মোদিজির ভাষণের অন্যতম ইস্যু। গোটা বিহারের নির্বাচনে ‘ঘুসপেটিয়া ঘুসপেটিয়া’ শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, কিন্তু তার তো একটা অন্য কারণ ছিল। এখানে ‘ঘুসপেটিয়া’ কাদের বলা হচ্ছে? বিশেষ করে এক বিরাট হিন্দু নমশুদ্র মানুষজন এই সেদিন পর্যন্ত এসেছেন এই বাংলাতে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মুসলমানেদের অনুপ্রবেশ আজকের নয়, তা বহু বহু দশক আগের কথা, তাঁরা মূলত দেশ ছেড়ে যাননি, আর তাঁদের আত্মীয় স্বজনেরা বিভিন্ন সময়ে এই বাংলাতে এসেছেন মূলত কাজের জন্য, পেটের জন্য। কিন্তু সেই আসা ক্রমশ কমেছে, বেড়েছে হিন্দু দলিতদের এই বাংলাতে আসা। দু’টোই কারণ, নিজেদের আরেকটু সুরক্ষিত রাখার এক চেষ্টা, আর রোজগারের ব্যবস্থা। কাজেই সেই তাঁরাই সেই ছাকনিতে আটকে যাবেন, যদি সত্যিই অনুপ্রবেশকে একটা ইস্যু হিসেবে সামনে রাখা হয়। এই এসআইআর-এর বাজারে সেটা আরও পরিস্কার। সমস্ত আশঙ্কা এখন কিন্তু হিন্দু মতুয়া, দলিত, অন্ত্যজদের পাড়ায়। এই ভুল স্লোগানের ফলে সেই তাঁরা, যাঁরা ক’দিন আগেও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে গিয়েছেন, তাঁরা আজ চিন্তিত তাঁদের নাগরিকত্ব নিয়ে। আর এই অবস্থাটা বুঝেই কোর্স কারেকশনে নেমেছেন দিলীপ ঘোষ। অনুপ্রবেশের দায় তিনি ঠেলে দিচ্ছেন বিএসএফ-এর দিকে, যার দায়িত্ব অমিত শাহের।

হ্যাঁ, সরাসরি প্রশ্ন তো উঠবেই, যদি লক্ষ লক্ষ অনুপ্রবেশ হয়েই থাকে, তাহলে বিএসএফ কী করছিল? কার গাফিলতিতে এই অনুপ্রবেশ হল? এসব প্রশ্ন তোলার পরে অবশ্যই দিলু ঘোষ অন্য নেতাদের মতো পিছু হটে যাননি, বলেছেন, “যা প্রাকটিক্যাল তাই বলেছি, ওরা টাকা খেয়ে এসব করেছে”। কিন্তু জাস্টিস গাঙ্গুলী বা দিলু ঘোষের এসব কথাগুলো বিরোধী শিবিরের অস্ত্র হয়ে উঠছে। চুরির প্রশ্ন উঠলেই জাস্টিস গাঙ্গুলীর কথা উঠবেই, তাহলে সিবিআই বা ইডি করছিল টা কী? যদি অনুপ্রবেশের প্রশ্ন তোলা হয়, তাহলে প্রশ্ন উঠবেই, বিএসএফ কী করছিল? আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, জাস্টিস গাঙ্গুলী বললেন ইডি, সিবিআই বাংলার আর্থিক অপরাধীদের ধরছে না। দিলীপ ঘোষ বলছেন, বিএসএফ পয়সা খেয়েই অনুপ্রবেশে সাহায্য করছে। দুই বিজেপি নেতাই একধরণের সেম সাইড গোল দিতে নেমেছেন। আপনাদের কী মনে হচ্ছে?

শুরু হয়ে গিয়েছে বঙ্গ নির্বাচন সার্কাস। হ্যাঁ, সার্কাসে রোমাঞ্চকর খেলা থাকে, অসম্ভব স্কিলের খেলা থাকে, সরু দড়ির ওপর দিয়ে হাঁটাহাঁটিও থাকে, জান হাতে করে মরণ কূঁয়োয় বাইক চালানোও থাকে, তেমনিই জোকারদের স্থুল ভাঁড়ামোও থাকে। এ বঙ্গের নির্বাচনী সার্কাসে বিজেপি পক্ষের জোকারেরা নেমে পড়েছেন, এখন অপেক্ষা সরকার পক্ষের জোকারদের, না সেখানেও তো কোনও কমতি নেই।

দেখুন ভিডিও:

Read More

Latest News