ওয়েব ডেস্ক: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (World War II) সময় ‘ফ্রেঞ্চ রেজিস্টেন্স’ আন্দোলনে অসামান্য ভূমিকার জন্য ইন্দো-ব্রিটিশ আন্ডারকভার এজেন্ট নূর ইনায়াত খানকে (Noor Inayat Khan) সম্মান জানাল ফ্রান্স (France)। ‘ফিগারস অব দ্য রেজিস্ট্যান্স’ শিরোনামে ফ্রান্সের ডাকবিভাগ যে বিশেষ স্মারক ডাকটিকিটের (Postage Stamp) সিরিজ প্রকাশ করেছে, সেখানে একমাত্র ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী হিসেবে স্থান পেলেন নূর। উল্লেখযোগ্যভাবে তিনি ভারতের মাইসোর সম্রাট টিপু সুলতানের এক বংশধর।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ফ্রান্সের এই বিশেষ স্ট্যাম্পসেট প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বেছে নেওয়া হয়েছে সেই সব বীর-নারী ও পুরুষদের, যারা নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে ফরাসি প্রতিরোধ যুদ্ধে অসীম সাহস নিয়ে লড়েছিলেন। নূরের স্মারক স্ট্যাম্পটি তৈরি করা হয়েছে তাঁর ব্রিটিশ উইমেনস অক্সিলিয়ারি এয়ার ফোর্সের ইউনিফর্ম পরিহিত একটি ছবির খোদাই থেকে।
আরও পড়ুন: দালাই লামার ‘সুস্থতা’ই এখন বেজিংয়ের মাথাব্যথা! দাবি তিব্বতিদের
নূর ইনায়াত খানের জীবনী ‘Spy Princess: The Life of Noor Inayat Khan’–এর লেখিকা শ্রাবনী বসু এই সম্মানকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, নুর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি প্যারিসে বেড়ে উঠেছিলেন, পরে ইংল্যান্ডে যুদ্ধ প্রচেষ্টায় যোগ দেন। ফ্রান্স তাঁর স্মৃতিকে এভাবে শ্রদ্ধা জানানো সত্যিই অসাধারণ। সেই সঙ্গে তিনি ভারতকেও নুরের নামে ডাকটিকিট প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, নূর-উন্নিসা ইনায়াত খান ১৯১৪ সালে মস্কোয় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন ভারতীয় সুফি সঙ্গীতজ্ঞ, আর মা ছিলেন মার্কিন নাগরিক। নূরের শৈশব ও বেড়ে ওঠা লন্ডনে। পরে তিনি পড়াশোনা শেষ করেন প্যারিসে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রান্সে নাৎসি হামলা হলে নূরের পরিবার ইংল্যান্ডে আশ্রয় নেয়। এরপর তিনি যোগ দেন ব্রিটিশ উইমেনস অক্সিলিয়ারি এয়ার ফোর্সে। ১৯৪৩ সালে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা তাঁকে বেছে নেয় আন্ডারকভার এজেন্ট হিসেবে। সেবছরই প্রথম মহিলা রেডিও অপারেটর হিসেবে তাঁকে ফ্রান্সে পাঠানো হয়। তবে কিছুদিনের মধ্যেই শত্রুর হাতে ধরা পড়েন নূর এবং ১৯৪৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর নির্যাতনের পর মাত্র ৩০ বছর বয়সে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
দেখুন আরও খবর:







