ওয়েব ডেস্ক: ২৭ বছর পর দিল্লিতে (Delhi) ক্ষমতায় বিজেপি (BJP)। ঝাড়ুর বিদায়। মসনদে পদ্ম। রাজধানীতে ডাবল ইঞ্জিন সরকার জয়ের স্টেশনের দোরগোড়ায়। চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে আসীন হওয়া হল না আপ (AAP) সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal)। তিনি নিজে হারলেন, পতন হল আপের। ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন দল গড়ে দ্রুত দিল্লিতে ক্ষমতায় আসা আপের মিথ ভাঙল। খোদ দিল্লির দরবারে জয় পেয়ে চওড়া হল নরেন্দ্র মোদির কাঁধ। আপের চেয়ে দ্বিগুণ আসনে এগিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি। আপ, কংগ্রেস জোট না হওয়ায় খেসারত দিল দুই দলই। কংগ্রেস শূন্যই। শনিবার বেলা ১টা পর্যন্ত প্রকাশ হওয়া নির্বাচনী ফল অনুযায়ী ৭০ আসনের বিধানসভায় ৪৭টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। সরকার গঠনের জন্য ম্যাজিক ফিগারের চেয়ে অনেক বেশি আসনে এগিয়ে বিজেপি। ২৩টি আসনে এগিয়ে আপ। হেরে গিয়েছেন আপ সরকারের উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীস সিসোদিয়াও। তবে জয় পেয়ে মুখ রক্ষা করেছেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মারলেনা। শনিবার ফল প্রকাশের শুরু থেকেই পিছিয়ে আপ। কিন্তু বেলা যত গড়িয়েছে দিল্লির বাতাসে পদ্মের হাওয়া তত জোরে বয়েছে। তারই মধ্যে আপ ও কংগ্রেস জোট না হওয়াকে দোষারোপের পালা শুরু হয়েছে। যা বিজেপিকে সুবিধা করে দিয়েছে বলে ইন্ডিয়া জোটের অনেকে মত প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। জম্মু কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা তো খুল্লমখুল্লা কটাক্ষ ছুঁড়ে বলেন, লড়তে রহো আপস মে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন হয়। ভোট পরবর্তী বুথ ফেরত সমীক্ষাতে বিজেপিকে এগিয়ে রাখা হয়েছিল বেশিরভাগ সমীক্ষায়। তবে কয়েকটি সমীক্ষায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েরও ইঙ্গিত দেয়। যদিও ভোট পূর্ববর্তী সমীক্ষায় আপ এগিয়ে ছিল বেশিরভাগ সমীক্ষায়। তবে কি কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটে ১২ লক্ষ আয়করে ছাড় বিজেপিকে এই সাফল্য এনে দিল? না কি দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের মতো কেজরিওয়ালের পার্টির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অস্ত্রই কাজে এল, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। আন্না হাজারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে সাধারণ আমলা অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লি দখল করেছিলেন। সেই দুর্নীতির অস্ত্রই তাঁকে ঘায়েল করল বলে মনে করছেন অনেকে। আবগারি দুর্নীতিতে কেজরিওয়াল ছাড়াও জেলে গিয়েছিলেন প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া সহ একাধিক আপ মন্ত্রী। হেরে গিয়েছেন দুই প্রাক্তন মন্ত্রীই। হেরেছেন সত্যেন্দ্র জৈন। এছাড়াও কেজরিওয়ালের বাসভবন শিসমহলের বিলাসবহুল সজ্জায় ৫০ কোটি টাকার বেশি খরচ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিজেপি জয় পেলে শিসমহল জনতার জন্য উন্মুক্ত করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: হেরে গেলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, পিছিয়ে অতিশীও
সাধারণ মানুষের অর্থাৎ আম আদমির কথা বলা রাজনীতির বাইরের এক ঝাঁক গুণী মানুষের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল আপ দিল্লিবাসীর মন জয় করে নিয়েছিল। কিন্তু পরে যোগেন্দ্র যাদব, প্রশান্ত ভূষণ, কুমার বিশ্বাসের মতো বিদ্বজ্জনরা সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। আগেই দূরত্ব তৈরি করেছিলেন আন্না। অন্যদিকে ২০১৪ সালে দেশে গেরুয়া ঝড় বইয়ে ক্ষমতায় আসা নরেন্দ্র মোদি খোদ রাজধানীতে কল্কে পাননি এতদিন। তাঁর সেই বৃত্ত পূর্ণ হল। আগামী বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে যা বাড়তি অক্সিজেন দিল নীতিশ নাইডুতে ভর করে তৃতীয়বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসা বিজেপিকে।
দেখুন অন্য খবর: