কলকাতা: ওয়াকফ সংশোধনী আইন (WAQF Act) নিয়ে উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)। সাম্প্রতিক অশান্তির জেরে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ গঠন করেছে ন’জনের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)। নেতৃত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ)। এছাড়াও রয়েছেন কাউন্টার ইনসারজেন্সি ফোর্স (CIF) ও সিআইডি (CID)-র দুই ডিএসপি, চার জন সিআইডি ইন্সপেক্টর, ট্রাফিক পুলিশের এক ইন্সপেক্টর এবং সুন্দরবন পুলিশ জেলার সাইবার ক্রাইম থানার ইনচার্জ।
ইতিপূর্বে ওয়াকফ বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল চলাকালীন অশান্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ, জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান ইত্যাদি অঞ্চল। এখনও পর্যন্ত ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছে একই পরিবারের দুজন। আহত বহু মানুষ। নষ্ট হয়েছে প্রচুর সম্পত্তি। হিংসার ঘটনার পর নিরাপত্তার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের অনুরোধে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিএসএফ-এর ৯ কোম্পানি, প্রায় ৯০০ জওয়ান মোতায়েন করেছে, যার মধ্যে ৩০০ স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত।
আরও পড়ুন: জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী
রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল ঘুরে এসেছেন। বিভিন্ন জেলা থেকে ২৩ জন প্রশিক্ষিত পুলিশ আধিকারিককে পাঠানো হয়েছে মুর্শিদাবাদে। হিংসান সংক্রান্ত ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ১৫০ জন। সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান ও আশপাশের এলাকায় মোতায়েন রয়েছে রাজ্য পুলিশ, সিআরপিএফ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর যৌথ দল।
বুধবার দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সুপ্রতিম সরকার এক সাক্ষাৎকারে জানান, “এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। মানুষ নিরাপদে আছেন। এলাকায় চলেছে ফ্ল্যাগ মার্চ ও নিয়মিত টহল। গুজবে কান না দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। চালু হয়েছে কন্ট্রোল রুম, যে কোনও সমস্যায় নাগরিকরা যোগাযোগ করতে পারেন।”
উল্লেখ্য, অশান্তির আবহেও ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট। প্রশাসনের তরফ থেকে উৎসাহ পেয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। শান্তি রক্ষায় মাঠে নেমেছে রাজনৈতিক প্রতিনিধিরাও। ঘটনার পিছনে কোনও গভীর ষড়যন্ত্র আছে কিনা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। তদন্তের স্বার্থে জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জের ঘটনাগুলিকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে এগোচ্ছে সিট।
এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া বার্তা দিয়ে বলেছেন, “প্রতিবাদ হতেই পারে, কিন্তু আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় প্রশাসন সজাগ রয়েছে। শান্তি রক্ষায় পুলিশের ওপর ভরসা রাখুন।”
প্রসঙ্গত, সামশেরগঞ্জের পরিস্থিতি খানিক স্বাভাবিক হওয়ার পর জেলার বাকি অংশে সাময়িক ভাবে চালু হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। এই অবস্থায় একাধিক জায়গায় ১৬৩ ধারা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
দেখুন আরও খবর: