ওয়েব ডেস্ক: শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে (Bangladesh) কট্টরপন্থীদের শক্তি বৃদ্ধি হয়েছে। পাকিস্তানের (Pakistan) প্রভাব বাড়ছে। চীনও (China) তলে তলে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে। ভারত বিদ্বেষী শক্তি মাথাচাড়া দিয়েছে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারই মধ্যে আকস্মিকই যুদ্ধের মহড়া সারল বাংলাদেশ। ইউনুস নিজে সেই মহড়া খতিয়ে দেখলেন। শুধু তাই নয়, সেখানে মহড়ার পর ইউনুস সার্বভৌম ও স্বাধীনতার প্রশ্নে সামরকি প্রস্তুতির কথা বলে কী বার্তা দিলেন তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি সীমান্ত রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এটা কি ভারতকে কোনও বার্তা দিতে চাওয়া হল? ভারত বিদ্বেষী মনোভাব প্রকাশ করে বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্তাদের একাংশের পক্ষ থেকে সবাইকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে সংক্রান্ত বার্তা সামনে এসেছে। রবিবার দুপুরে রাজবাড়ি ট্রেনিং এরিয়ায় খাপুড়া ও চররামনগর এলাকায় ওই মহড়া হয়। রাজবাড়ি থেকে নদীয়া-মুর্শিদাবাদ জেলায় বাংলাদেশ সীমান্ত খুব দূরে নয়। সেখানে বাংলাদেশের তিন বাহিনীর প্রধান হাজির ছিলেন। ইউনুস বলেন, মহড়া থেকেই বাস্তবের প্রস্তুতি। প্রকৃত যুদ্ধে যাতে আমরা সফলভাবে জয়ী হতে পারি। যে কোনও মুহূর্তে প্রয়োজনে পূর্ণ সাহস ও প্রস্তুতি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়।
সম্প্রতি সীমান্তে তুরস্ক থেকে কেনা ড্রোন মোতায়েন করেছে বাংলাদেশের সেনা। আধুনিকমানের ওই ড্রোন থেকে হামলা করাও সম্ভব। ওই ঘটনার পরই বাংলাদেশ সরকারের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। এবার এই মহড়ার ঘটনাকে স্বাভাবিক চোখে দেখতে নারাজ অনেকে। বাংলাদেশ সরকার এখনও পর্যন্ত এমন কোনও মন্তব্য করেনি যা থেকে ভারত বিরোধী কোনও বড় পদক্ষেপ করতে চলেছে তারা। তবে এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। কোথাও কোথাও হাসির রোল উঠেছে। বাংলাদেশ ভারতীয় শক্তির কাছে নস্যি বলে মন্তব্যও শোনা গিয়েছে। অনেকে একাত্তরের যুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতের সেনার লড়াইয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। কেউ কেউ বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে উপকার মনে না রাখায় অকৃতজ্ঞ , উপকারীর ক্ষতির চিন্তা করায় কৃতঘ্নর মতো শব্ধবন্ধেরও ব্যবহার করেছে। তবে বিষয়টির গুরুত্ব অন্য জায়গায়, কারণ পাকিস্তান বাংলাদেশকে সামনে রেখে খেলতে পারে। তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত ভারতের বিদেশমন্ত্রক কোনও বক্তব্য পেশ করেনি। তবে সাপ্তাহিক প্রেস বিবৃতিতে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল কোনও মন্তব্যে করেন কি না সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: ‘ষড়যন্ত্র’ ও ‘চক্রান্ত’ করছে ইউনুস সরকার! বড় দাবি বিএনপি নেতার
সম্প্রতি বাংলাদেশ ঘুরে এসেছেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রি। রবিবারই হলদি নদীর আন্তর্জাতিক জলসীমানায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৮৫ জন মৎস্যজীবী বিনিময় হয়েছে। তবে তারই মধ্যে ৫০ জন বিচারক ও জুডিশিয়াল অফিসারকে ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে আসার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে ইউনুস প্রশাসন। ফলে ভারত সম্পর্কে ইউনুস সরকারের মনোভাব স্পষ্ট নয়। তাই এই মহড়া নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। তবে মায়ানমার সীমান্তেও টালমাটাল অবস্থা বাংলাদেশের। বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার দখল নিয়েছে। হাজারে হাজারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটছে বাংলাদেশে। ফলে ঠিক কী কারণে এই মহড়া, তা নিয়ে নানা গুঞ্জন।
দেখুন অন্য খবর: