কলকাতা: অষ্টমীর রাত থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। নবমীর সাড়া সকাল আকাশের মুখ ভার ছিল, দুপুরে ভাসিয়েছে কলকাতা। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে যখন পান্ডাল হপিংয়ে মগ্ন। তখন কলকাতা সহ একাধিক জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি আবহাওয়া দফতরের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জরুরি বৈঠক করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। পুজোর মধ্যেই নিম্নচাপের অশনি সংকেত। তাই আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে জরুরি ভিত্তিতে কলকাতা পুরসভায় বৈঠক করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বৈঠকে হাজির ছিলেন পুর কমিশনার ধবল জৈন, পুরসভার সচিব স্বপন কুমার কুন্ডু সহ সমস্ত বিভাগীয় ডি জি থেকে নিয়ে পুর আধিকারিকরা। বৈঠক শেষে মেয়র জানান যে আগামীকাল থেকে কলকাতার বিভিন্ন গঙ্গা ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন শুরু হচ্ছে। আবার নিম্নচাপে জেরে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি। দশমীতে ভারী বৃষ্টির (Rainfall Happens Dashami) আশঙ্কা, পরিস্থিতি সামাল দিতে ‘অভিজ্ঞতা’ কাজে লাগাবেন, জানালেন ফিরহাদ।
ফিরহাদের দাবি যদিও নিম্নচাপ অন্ধ্র প্রদেশ ও ওড়িশার দিকে অভিমুখ ঘুরিয়ে যাচ্ছে। তার দাবি গতসপ্তাহে ব্যাপক বৃষ্টি জেরে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation)। তাই এবার আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে পাম্প মোতায়ন, পাম্পিং স্টেশন গুলিকে সক্রিয় রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। মেয়র বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তিনি আরও জানান, যে সমস্ত জায়গায় জল বেরোতে সমস্যা হবে সেখানে সাকশন মেশিন ব্যবহার করা হবে বলে জানালেন মেয়র। তবে শহরের নাগরিক ও পুজো কমিটির কাছে তার বিশেষ বার্তা দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
এদিন তিনি শহরবাসীদের উদ্যেশ্য জানান ভারী বৃষ্টি সময় বিপদ এড়াতে যদি কোনও ইলেকট্রিক বক্স থাকলে। সেটা CESC কে দিয়ে যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হোক। বা সাধারণ মানুষের বাড়িগুলিতে ছোট ছোট টুইনিলাইট থাকলে সেসব যাতে বন্ধ রাখেন সেই আবেদন জানালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মেয়রের আবেদন যে আগামীকাল ভোর ৫ টা থেকে ভারী থেকে আতিভারি বৃষ্টির সতর্কতা বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ফলে পুজো কমিটি উদ্যোতাদের কাছে তার আবেদন যদি মণ্ডপের ভিতরে বা আশেপাশে প্লাস্টিক বা বোতল পড়ে থাকলে সেটা সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করে দিতে । যাতে বৃষ্টি হবে সেটা ভেসে নিকাশি ব্যবস্থা কে বিঘ্নিত না ঘটায়।
আরও পড়ুন: নবমীতে কলকাতায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি!
মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, যে সাধারণ বৃষ্টি হলে চিন্তা থাকে না। তবে যদি মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হলে একটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে জানালেন তিনি। মেয়রের আশ্বাস যদি কোথায় জল জমে তাহলে সেটা বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। তবে যদি হাইটাইড থাকলে তখন যেহুতু লক গেট বন্ধ থাকে। তখন হয় তো জল বেরোতে সময় লাগতে পারে বলে সাফ জানিয়ে দিলেন মেয়র। মেয়র জানান যে CESC সঙ্গে সরকারি স্তরে কথাবার্তা হয়েছে। যাতে গত সপ্তাহের মত দুর্ঘটনা না ঘটে। মেয়র এদিন জানান যে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য প্রতেকটি ঘটে কলকাতা পুরসভার আধিকারিকরা উপস্থিত থাকবেন, পোর্ট ট্রাস্ট লোক থাকবেন এবং কলকাতা পুলিশ ও মোতায়ন থাকবে। তবে যদি ভারী বৃষ্টি হলে তখন যাতে পুলিশ সতর্কতা অবলম্বন করে প্রতিমা নিরঞ্জন কাজে বন্ধ করে দেন সেই বার্তা দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তার দাবি আতিভারী বৃষ্টির সময় যাতে প্রতিমা বিসর্জনের সময় কোনও রকমের দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য সতর্ক থাকতে বার্তা দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
হাওয়া অফিস জানিয়েছিল, ভাসতে পারে দক্ষিণবঙ্গ, অশনি সঙ্কেত ছিল কলকাতার (Kolkata) জন্যও। সেই পূর্বাভাসই মিলে যায় এদিন। নবমীর দুপুরে হঠাৎ প্রবল বৃষ্টি নামে শহরের একাধিক এলাকায়। আজ বাকি দিন এবং দশমীতে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। হাওয়ার গতি ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত ছুঁতে পারে বলেও সতর্ক করেছে হাওয়া অফিস।
অন্য খবর দেখুন