ওয়েব ডেস্ক: অপরাধ ছিল ইহুদি হওয়া। জার্মানির হিটলার বাহিনীর হাতে শেষ হয়ে গিয়েছিল অ্যানা ফ্রাঙ্কের পরিবার। মাত্র ১৬ বছরে মৃত্যু হয় অ্যানার। যার কাহিনী ‘দ্য ডায়েরি অফ ইয়ং গার্ল’ ঝড় তোলে সারা বিশ্বে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মান সেনার হানা থেকে রক্ষা পেতে বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিল অ্যানা। সেখানেই প্রতি মুহূর্তের কাহিনী ডায়েরির পাতায় লিখত। ডায়েরির পাতায় এঁকে দিত মৃত্যুর হাতছানির সব কটি ক্ষণ। তাঁর মৃত্যুর পর সামনে আসে সেই ডায়েরি। ঘটনাচক্রে এবার ইহুদি রাষ্ট্র ইজরায়েলের হাতেই মাত্র ১১ বছরের ইয়াকিন হামাদের (Yaqeen Hammad) মৃত্যু হল। গত ২৩ মে গাজার আলবারাকায় ইজরায়েলের বিমান হানায় ওই একরত্তির প্রাণ যায়। বিশ্ব যাকে বলছে দ্বিতীয় অ্যানা ফ্রাঙ্ক। সে গাজায় ইজরায়েলের সেনার হামলার প্রতিদিনের তথ্য তুলে ধরত সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানকার মানুষের অসহায়তার কথা ফুটিয়ে তুলত। ১ লক্ষেরও বেশি ফলোয়ার ছিল তার। মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরেও তাঁকে নিয়ে সরগম আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
গাজায় ভয়ঙ্কর পরিবেশে থেকেও ইয়াকিন হাসির সুন্দর সুন্দর ভিডিও পোস্ট করত। একটি ভিডিও ক্যাপশনে সে লিখেছিল, গাজার শিশুদের হাসির চেয়ে সুন্দর কি আর কিছু আছে? দুই হাত দেখিয়ে সুন্দর ইমোজি দিয়ে হাসি মুখে তার ছবি পোস্ট করেছিল। সে হয়তো জানত না এটাই তার শেষ পোস্ট। একটি ভিডিওতে চারিপাশে গাজার শিশুদের নিয়ে সে ভিডিও পোস্ট করে। তাতে লেখা ছিল, ওরা যাতে যুদ্ধ ভুলে থাকে সেজন্য একটু আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করছি। গাজায় গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ। কাঠে কীভাবে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করা যায় সেই ভিডিও বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছিল ওই শিশু কন্যা। তার ওই পোস্টে হাজারে হাজারে কমেন্ট, লাইক পড়ত বিশ্বজুড়ে।
আরও পড়ুন: ভারত ও পাকিস্তানের সংঘর্ষ বিরতিকে স্বাগত জানালেন পোপ লিও
ইয়াকিনের মৃত্যুতে একজন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য লিখেছেন। তাঁর লেখা, তুই ছোট্ট অ্যানা ফ্রাঙ্ক হয়েই রয়ে গেলি। তোর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন। কিন্তু, তোকে উদ্ধার করতে কেউ যায়নি। হয়তো তোকে নিয়ে ভবিষ্যতকে গল্প শোনাবে বলে। ২০১৩ সালে জন্মানো ইয়াকিনের শহর দেইর আল বালাতে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকেই বোমা ফেলছে ইজরায়েল। একজন লিখেছে, গাজায় শুধু বোমা, গুলিতে শিশুরা মরছে তাই নয়। খাবারের অভাবে। শুশ্রুষার অভাবে বাবা-মায়ের চোখের সামনে নির্মমভাবে কাতরাতে কাতরাতে শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। শুধুই আতঙ্ক। হামাস ও ইজরায়েলি সেনার লড়াইয়ে বলি কচিকাঁচারাও।
দেখুন অন্য খবর: