ওয়েবডেস্ক- ক্যানসার চিকিৎসায় (Cancer Treatment) দিশা দেখাল জাপানের (Japan) গেছো ব্যাঙ (Tree Frog) । এমনটাই দাবি চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের (Medical scientist)। গবেষণায় জানা গেছে, এই ধরনের প্রজাতির ব্যাঙের অন্ত্রে থাকা এক বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া ইঁদুরের শরীরে টিউমারকে সম্পূর্ণ নিমূর্ল করতে সক্ষম হয়েছে। জাপানের অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষকরা জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়ায় প্রাণীদের শরীরে কোনও গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দেখা মেলেনি। ফলে অনেকটাই আশাবাদী হচ্ছেন গবেষকরা।
মূলত সরীসৃপ ও উভচর প্রাণীদের মধ্যে ক্যানসারের প্রবণতা অত্যন্ত কম থাকে। এই বিষয়টিকে গবেষণার অঙ্গ হিসেবে দেখেই ব্যাঙ, গিরগিটি, ও টিকটিকির মতো প্রাণীদের থেকে মোট ৪৫টি ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন সংগ্রহ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৯টি স্ট্রেন টিউমারে বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষমতা দেখালেও ইওয়িংজেলা আমেরিকানা (E. americana) নামক ব্যাকটেরিয়াটি সবচেয়ে চমকপ্রদ ফল দেয়।
Bacteria in Japanese tree frogs can eliminate colorectal tumors and prevent cancer recurrence.
Scientists at the Japan Advanced Institute of Science and Technology (JAIST) have discovered a promising new anti-cancer agent from an unexpected place: the gut microbiome of the… pic.twitter.com/CexvK6BMZs
— Massimo (@Rainmaker1973) December 25, 2025
দেখা গেছে, ব্যাকটেরিয়ার মাত্র একটি ডোজ প্রয়োগেই আশাপ্রদ কাজ দেয়, ইঁদুরে টিউমার সম্পূর্ণ রূপে নির্মূল হয়ে গেছে। ৩০ দিন পরেও ওই ইঁদুরের শরীরে ফের ক্যানসারের কোষ ঢোকানো হয়, কিন্তু নতুন করে কোনও টিউমার তৈরি হয়নি।
গবেষণায় দেখা গেছে, ইওয়িংজেলা আমেরিকানা দ্বিমুখী পদ্ধতিতে ক্যানসারের মোকাবিলা করে। এটি সরাসরি টিউমার কোষের ওপর আক্রমণ চালানোর সাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে টি-সেল, বি-সেল এবং নিউট্রোফিলের মতো শরীরের প্রাকৃতিক যোদ্ধাদের অ্যাকটিভ করে তোলে এই ব্যাকটেরিয়া।
আরও পড়ুন- সৌদির তুষারপাতে অশনি সংকেত! কেন সতর্ক হতে হবে ভারতকে?
গবেষণা অনুযায়ী, ক্যানসার টিউমার যেখানে অক্সিজেনের অভাব থাকে, সেই প্রতিকূল পরিবেশেও এই ব্যাকটেরিয়া টিকে থাকতে পারে, যা প্রচলিত কেমোথেরাপির ক্ষেত্রে অনেক সময় সম্ভব হয় না। পশুদের ওপর চালানো এই পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে বর্তমান অনেক নামী ক্যানসার চিকিৎসার চেয়েও এই পদ্ধতি বেশি কার্যকর।
ডক্সোরুবিসিন নামক কেমোথেরাপির ওষুধের তুলনায় এই ব্যাকটেরিয়া অনেক দ্রুততার সঙ্গে কাজ করেছে। টিউমারও সংকুচিত করা সম্ভব হয়েছে। তবে মানুষের শরীরে এই চিকিৎসা শুরুর আগে, আরও দীর্ঘ গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। মানবদেহে এই ব্যাকটেরিয়ার কোনও সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে দেখছেন গবেষকরা।
বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা প্রমাণ করল, প্রকৃতির বুকেই লুকিয়ে আছে ক্যানসারের মতো মারণ রোগের নিরাময়, জীয়নকাঠি। এটি আবিষ্কার ফলপ্রসূ হলে ক্যানসার রোগ নিরাময় এক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক নতুন বিপ্লব আনবে। ব্যাকটেরিয়াকে অন্য নানা ধরণের ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে তৈরি করা এবং মানবদেহের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই এখন বিজ্ঞানীদের প্রধান লক্ষ্য।







