ওয়েবডেস্ক- রাশিয়া ও ইউক্রেনের (Russia-Ukraine) মধ্যে অচলাবস্থা অব্যাহত। গত তিন বছর ধরে চলছে এই যুদ্ধ। বার বার যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা হলেও দুই দেশে শান্তি ফিরে আসেনি। ফের শান্তি চুক্তির আলোচনায় বসছে দুই দেশ। তুরস্কের (Turkey) ইস্তাম্বুলে (Istanbul) এই আলোচনা হওয়ার কথা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Russian President Vladimir Putin) তুরস্কে পৌঁছে গেছেন।
ইস্তানম্বুলে এদিকে যে সময় এই শান্তি বৈঠক তার দেশেই ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। সামরিক বিমানগুলির উপর নিখুঁত হামলা চালানো হয়েছে। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৪০টির বেশি রুশ সামরিক বিমান। এই আবহে শান্তি বৈঠকে হলেও এখনও যুদ্ধ বন্ধের পথে দুই পক্ষ এখনও বহু দূরে অবস্থান করছে। উল্টে যুদ্ধ আরও জোরালো রূপ ধারণ করছে।
শান্তি আলোচনার (Peace Talks) প্রাক্কালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (Ukrainian President Volodymyr Zelensky) সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, তাদের প্রধান তিনটি দাবি রয়েছেন। এক পূর্ণ ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতি, ২) বন্দিদের মুক্তি ও ৩) অপহৃত শিশুদের ফেরত। অপর দিকে রাশিয়ার দাবি, সংঘাতের মূল কারণ সমাধান করতে চায়।
এর মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সীমিত করা, ন্যাটোতে যোগদান বন্ধ করা সহ বড় ধরনের অঞ্চল হস্তান্তর। তবে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা এসব দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং রাশিয়ার হামলাকে ঔপনিবেশিক আগ্রাসন বলেই উল্লেখ করছে। এদিকে, রাশিয়া দাবি করেছে- যুদ্ধ থামাতে হলে ইউক্রেনকে পশ্চিমা সামরিক সহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে এবং কিছু অঞ্চল ছাড় দিতে হবে।
আরও পড়ুন- জো বাইডেনের ক্লোন ছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট? বিস্ফোরক দাবি ট্রাম্পের
ইউরোপের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে বড় সংঘাত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তিন বছর পর উভয় দেশের কর্মকর্তারা ইস্তানবুলে এক নতুন শান্তি আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে রাশিয়া ও ইউক্রেন প্রথমবারের মতো সরাসরি এই শান্তি আলোচনা বসতে চলেছে। এই বৈঠক হবে বসফরাসের তীরে অবস্থিত ওসমানীয় আমলের চিরাগান প্যালেস নামের পাঁচ তারকা হোটেল। আলোচনার সূচনা হবে স্থানীয় সময় দুপুর ১টায়।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন ভ্লাদিমির মেদিনস্কি। যিনি ২০২২ সালে ব্যর্থ আলোচনাগুলোরও নেতৃত্বে ছিলেন। ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন জার্মানি, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের কূটনৈতিক উপদেষ্টারা।
আলোচনা শুরুর আগেই ইউক্রেনের দাবি, তারা রাশিরায় ভিতরে হাজার কিলোমিটার দূরের বিমান ঘাঁটিতে এক পরিকল্পিত অভিযান চালিয়েছি। সেই অভিযানে ৪০টি কৌশলগত বোমারু বিমান ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার। অপরদিকে যুদ্ধ থামানোর ইঙ্গিত নেই কোনও পক্ষেরই। ইতিমধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর-পূর্ব সুমি অঞ্চলে বাফার জোন গঠনের আদেশ দিয়েছেন। খারকিভে সোমবার রুশ ব্যালিস্টিক হামলায় অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন সাত বছর বয়সী শিশু রয়েছে।
প্রসঙ্গত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকা ধ্বংস হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের ভিটেমাটি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
দেখুন ভিডিও-