ভোপাল: চারদিন পরেই ছিল বিয়ে। সেই বিয়ের আগেই নিজের মেয়েকে গুলি করে খুন বাবার। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার খুড়তুতো ভাই বোনের উপর আরও দুটি গুলি করে। মধ্যপ্রদেশের (Madhyapradesh) গোয়ালিয়রে (Gwalior) হাড়হিম (Murder) করা ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২০ বছরের তনু গুর্জরের (Tanu Gurjar) । ঘটনায় মেয়ের বাবাকে অস্ত্র সমেত গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বন্দুক নিয়ে পলাতক ভাই।
জানা গেছে, বাড়ি থেকে বিয়ের ঠিক হয়েছিল তনু গুর্জরের। কিন্তু তনুর এই বিয়েতে মত ছিল না। কারণ তনুর বিক্রম ওরফে ভিকি বলে একটি ছেলেকে ভালোবাসতেন। ভিকি উত্তরপ্রদেশের (uttarpradesh) বাসিন্দা। প্রথমে তনুর এই সম্পর্ক মেয়ে নেয় তার পরিবার, কিন্তু পরেই বেঁকে বসে। অন্য যুবকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় তনুর।
আরও পড়ুন: মহাকুম্ভে পুণ্যস্নানে নেমে মৃত্যু প্রাক্তন মেয়রের
এদিকে বিয়ের ঠিক আগেই তনু সকলের সামনে জানিয়ে দেয়, এই বিয়ে তাঁকে জোর করে দেওয়া হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ৫২ সেকেন্ডের ভিডিয়ো পোস্ট করে তনু। সেখানে তিনি তাঁর বাবা মহেশ গুর্জরের নাম নিয়ে বলেন, তার এই বিয়েতে মত নেই। তাঁকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর উপর পরিবারের লোকেরা নির্যাতন চালায়। তনু বলতে থাকে, ‘আমি ভিকিকে বিয়ে করতে চাই। আমার পরিবার প্রথমে মেনে নিলেও পরে প্রত্যাখ্যান করে। তারা আমাকে প্রতিদিন মারধর করে খুনের হুমকি দেয়। যদি আমার সঙ্গে কিছু হয়ে যায়, আমার কিছু হলে দায়ী থাকবে আমার পরিবার।”
জানা গেছে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ভিকি মাওয়াইয়ের সঙ্গে তনু বিগত ৬ বছর ধরে সম্পর্ক ছিল।
ভিডিয়ো দেখার পরেই পুলিশ সুপার ধর্মেন্দ্র সিং তৎক্ষণাৎ তনুর বাড়িতে যায়। সেই সময় বাড়িতে পঞ্চায়েত বসিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করা হচ্ছিল।
মঙ্গলবার রাত ৯ টা নাগাদ গোলা কা মন্দির এলাকায় এই সালিশি সভা বসে। উপস্থিত ছিলেন তনু ও তার বাবা মহেশ গুর্জর। মেয়ের ভিডিয়ো দেখার পরে রাগে মাত্রা ছাড়ান মহেশ। দেশি পিস্তল বের করে তনুকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার কাকার ছেলে রাহুল তার দিকে লক্ষ্য করে আরও দুটি গুলি চালায়। ঘটনায় মৃত্যু হয় তনু গুর্জরের।
জানা গেছে, বাড়িতে নিত্যদিন ঝামেলার কারণে তনু বাড়িতে থাকতে চাইত না। কোনও সরকারি হোমে থাকার চেষ্টা করছিল সে। কিন্তু তার বাবা মহেশ গুর্জর, তনুকে আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, তার সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলতে। সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তার পরেই পঞ্চায়েত ও পুলিশের সামনে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটায় মহেশ। জানা গেছে, প্রথমে মহেশ ও পরে রাহুল তনুর দিকে আরও দুটি গুলি করে। একটা লাগে তনুর কপালের মাঝখানে অপরটি লাগে তার ঘাড়ে। মহেশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাহুলকে খুঁজছে পুলিশ। পুলিশ তনুর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টও পর্যালোচনা করছে।
দেখুন অন্য খবর: