Saturday, November 8, 2025
HomeScrollAajke | জাস্টিস গাঙ্গুলি কো গুসসা কিঁউ আতা হ্যায়?
Aajke

Aajke | জাস্টিস গাঙ্গুলি কো গুসসা কিঁউ আতা হ্যায়?

সিপিএম এর সুরে সুর মিলিয়ে বিজেপি – তৃণমূল সেটিং এর অভিযোগ

এসব গল্পে শোনা। সম্রাট আকবর এমনিতে মহামতি হলেও, তাঁর নাকি পান থেকে চুন খসলেই মেজাজ যেত টং এ চড়ে। নাকি সেই জন্যই, তিনি যখন ছদ্মবেশে শহর ঘুরতে বের হতেন, লোকজনদের সরকারি আমলা কর্মীদের হাল হকিকত দেখতে বের হতেন, তখন সঙ্গে থাকতেন বীরবল, যিনি প্রতি মুহুর্তে মনে করিয়ে দিতেন, আপনি একজন আম আদমির ছদ্মবেশে রয়েছেন জাঁহাপনা, গুসসা থুক দিজিয়ে, রাগ টাকে সামলান, আম আদমির অত রাগ ভালো নয়। ২৪ ঘন্টা যাঁকে জিল্লে এলাহি, জাঁহাপনা, বন্দেগী হুজুর ইত্যাদি শুনেই কাটাতে হয়, তার সামনে এক ফলওলা উঁচুগলায় কথা বললে রাগ তো হবেই, বীরবল নাকি তাঁকে সামলাতেন। তো আমাদের জাস্টিস গাঙ্গুলির সেই হাল হয়েছে।

সকাল থেকে সন্ধে মি লর্ড, মাই বাপ, হুজুর ইত্যাদি শুনে শুনেই এক হামবড়া জীবন কাটাতেন। কখনও লেনিন কখনও সুকান্ত কোট করে বেশ এক বামপন্থী ছবি এঁটে তিনি বাম নেট জগতে এক মহান বিচারকও হয়েছেন, তখনও তাঁর পেট্রলের গন্ধ ভালো লাগতো, এখনও লাগে, কিন্তু সেই অরাটা, সেই আলোক বৃত্তটা তো আর নেই। থাকার কথা নয়, একজন বিচারক তো তাঁর কর্মজীবনে বিচারক, তার পরে তো তিনি আম আদমি। এবার একজন শ্রদ্ধেয়, সর্বজনশ্রদ্ধেয় বিচারক হয়ে উঠতে পারলে তাঁকে মানুষ সমীহ করে বৈকি, জাস্টিস শ্যামল সেনকে বহু আলোচনাসভায় দেখেছি, মানুষের সমীহ কেড়ে নিতে, এমন আরও অনেকে আছেন। কিন্তু জানুয়ারিতে বইমেলায় এস এফ আই এর স্টলে গিয়ে চে গুয়েভারা হাতে ছবি তুলিয়ে মে মাসে পদত্যাগ করেই বিজেপির টিকিটে ভোটে নামলে সেই সমীহ তো পাবার কথা নয়, তিনি একজন আম পলিটেশিয়ান, আর এই রাজ্যে এক ক্ষয়িষ্ণু দলের অকর্মণ্য সাংসদ। কাজেই তাঁকে পাত্তা দেবেই বা কে? আর তাতেই সম্ভবত উনি খচে গেছেন, সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, জাস্টিস গাঙ্গুলি কো গুসসা কিঁউ আতা হ্যায়?

আরও পড়ুন: Aajke | বঙ্গ বিজেপির কমিটি, এক খুড়োর কল, ধেড়িয়ে লাট

তাঁর নাকি এই জালিয়াতি ছেড়ে রাজনীতিতে নামার আসল উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতা থেকে সরানো। তো ওনার সেই মহৎ উদ্দেশ্য পূরণের কী হলো? তিনিই জানিয়েছেন তাঁর সেই ‘নিশানা’র ‘ধারে কাছে’ পর্যন্ত তিনি পৌঁছতে পারেননি। কেন? কে আপনার পাকা ধানে মই দিল? সেটাও তিনিই খলসা করে দিয়েছেন যে এর দায় নাকি কেন্দ্র সরকারের, মানে মোদি – শাহ সরকারের। মানে ওনার একদা মেন্টর বিকাশ ভট্টাচার্য যে সেটিং তত্ত্ব আউড়ে যান, বিজেপি – তৃণমূল সেটিং এর এক আজগুবি তত্ত্ব তিনিও সেটাই, হুবহু সেটাই বললেন। হুজুর, জানি আপনাকে এখন কেউ আর হুজুর বলে সম্বোধন করে না, আমি করছি যদি একটু কান দেন, মানে এই যে কথাটা বলছেন সেটা শান্তিকুঞ্জের খোকাবাবু জানেন? মানে তিনিই তো জান লড়িয়ে আপনাকে নিয়ে গেছেন দিল্লির সংসদ ভবনে, রাজ্যের ৪২ জনের একজন, দেশের ৫৪৩ জনের একজন, সেই খোকাবাবুও কি এই সেটিং এ জড়িত? মানে মমতা বেগম আর খোকাবাবুর সেটিং? কী ভাবে জানলেন?  তিনি সেটাও জানিয়েছেন, তাঁর মাথাতেই যা ঢুকছে না, সেটাও খোলসা করেই বলেছেন, ‘‘কেন যে পশ্চিমবঙ্গের মতো একটা শাসনহীন, প্রশাসনহীন রাজ্যে অন্তত ৩৫৫ ধারা জারি করা হবে না, সেটা তো আমার কাছে একটা বিরাট প্রশ্ন।’’ তাই তো, দেশের নির্বাচন কমিশনের দেখরেখ এ নির্বাচিত এক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারকে আইন শৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে কেন ভেঙে ফেলা হচ্ছে না, সেটা ওনার মাথায় ঢুকছে না। আপনি নিজেই জালিয়াতি ছেড়ে দিয়ে দেশ আর দশের কত বড় উপকার যে করেছেন তা বলে বোঝাতে পারবো না। কারণ সংবিধানের ন্যুনতম ধারণা ছাড়াই একজন কীভাবে বিচারক হয়ে বসেছিলেন সেটাই তো এক মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন। এখানেই থেমে যান নি তিনি, ইডি-সিবি আই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কৈফিয়ৎ দাবি করেছেন। বলেছেন, ‘বড় বড়’ নেতাদের বিরুদ্ধে ‘গুচ্ছ গুচ্ছ’ অভিযোগ থাকলেও তদন্ত বা হেফাজতে নিয়ে জেরা করা সে ভাবে হচ্ছে না। সিবিআই, ইডি-র বেশ কিছু ‘বড়-মেজ কর্তা’ বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মদতপুষ্ট বলেও মনে করেন তিনি। কেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারেননি কেন্দ্রীয় সংস্থার কর্তারা সেই ‘কৈফিয়ৎ’ প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে চাওয়া উচিত বলে মনে করেন বিজেপি সাংসদ। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেষ করেছিলাম, জাস্টিস গাঙ্গুলি এক্কেবারে সিপিএম এর সুরে সুর মিলিয়ে বিজেপি – তৃণমূল সেটিং এর অভিযোগ করেছেন। এই অভিযোগ করার আগেই কি তাঁর পদত্যাগ করা উচিত ছিল?

আসলে হুজুর মাইবাপ আর মি লর্ড শুনে দিন কাটানো একজন আপাতত কর্মহীন, গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে রয়েছেন, একদা বামপন্থী ইমেজ ওলা আপাতত পদ্মফুল ছাপ নিয়ে কি মনোকষ্টে আছেন? নাকি এসব বলে খানিক গুরুত্ব বাড়িয়ে অন্তত একটা সিকি মন্ত্রী হবার বাসনাতেই এত অনর্গল বাজে বকা? তিনি এটাও আপাতত বুঝতেই পারছেন না বা এটাও তাঁর কাছে এক গভীর প্রশ্ন যে বিজেপি কি সত্যিই তৃণমূলকে সরানো যায়? আমি বলি কি এসব বড় বড় কথা বলার আগে পদত্যাগ করুন, সাংসদ পদটা ছাড়ুন, তকমা তুলে আবার বিপ্লবী হবার কাজে মন দিন, কিন্তু ভুলেও ঐ ৩৫৫ ধারা জারি বা রাষ্ট্রপতি শাসনের কথা মাথাতেও আনবেন না, আপনার মনিবদের জিজ্ঞেষ করে নেবেন সে পথে বিপদ আরও অনেক বেশি, আপনাদেরই এক হুলোর ডায়লগটা মাথায় রাখবেন, “পাবলিকের মার, ক্যাওড়াতলা পার।“

Read More

Latest News