Monday, August 25, 2025
HomeScrollহাড়হিম করা ট্যাংরা কাণ্ডে নাবালককে পাঠানো হল সরকারি হোমে

হাড়হিম করা ট্যাংরা কাণ্ডে নাবালককে পাঠানো হল সরকারি হোমে

ওয়েবডেস্ক: ট্যাংরা কাণ্ডে (Tangra Case) নাবালক (Minor) ছেলেকে নিজের কাছে রাখতে রাজি হল না, পরিবারের কেউই। ফলে তার ঠাঁই হল সরকারি হোমে (Government Home)। শিশু কল্যাণ কমিটির উদ্যোগে ও নাবালকের বাবা প্রণয় দে’র সম্মতিক্রমেই তাঁকে হোমে পাঠানো হয়েছে। এদিকে এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রণয় দে (Pranay Dey)। বাবার সঙ্গে এতদিন হাসপাতালেই ছিল নাবালক।

উল্লেখ্য, ট্যাংরা কাণ্ড কলকাতা শহরের হাড়হিম করা ঘটনাগুলির মধ্যে অন্যতম। নিজের পরিবারের দুই বউয়ের হাতের শিরা খুন সহ নাবালিকাকে হত্যা। এর মধ্যে বেঁচে যায় এক নাবালক, তাকেই পাঠানো হল হোমে। তার পরেও অভিযুক্তদের আত্মঘাতী হওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও সেটি ফলপ্রসূ হয়নি।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ‘প্ল‌্যান এ’ অনুযায়ী ট্যাংরার দে বাড়ির ছোট ছেলে প্রসূনের স্ত্রী রোমি পায়েস রান্না করেন। ওই পায়েস নিয়ে প্রসূন আর রোমি তিনতলার উপরে ঠাকুরঘরে যান। সেখানে ঠাকুরের সামনে পায়েসে বিষ মেশান প্রসূন। দুজনে ঠাকুরের কাছে ক্ষমাও চান। বড় ছেলে প্রণয় দের স্ত্রী সুদেষ্ণা তাঁর স্বামী ও ছেলে প্রতীপকে পায়েস খেতে দেন। রোমি দেন তাঁর স্বামী প্রসূন ও মেয়ে প্রিয়ংবদাকে। কিন্তু তাদের সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। বিষ মেশানো পায়েস খেয়ে কারুর মৃত্যু হয়নি। তারা ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার কথা ভাবেন।

আরও পড়ুন: মিলল ছাড়পত্র! কবে চালু হচ্ছে এসপ্ল্যানেড-শিয়ালদহ রুটে মেট্রো?

কিন্তু দুই স্ত্রী সেই সিদ্ধান্তে রাজি হননি। তখন হাতের শিরা কেটে আত্মহত‌্যার পরিকল্পনা করা হয়, এই বিষয়ে একে অপরকে সাহায্য করবেন বলেও ঠিক হয়। ঘুমন্ত প্রিয়ংবদার নাক ও মুখে বালিশ চেপে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। কারখানার চামড়া কাটা বড় ছুরি দিয়ে আত্মহত‌্যার পরিকল্পনা করা হলেও প্রণয় রাজি হননি। তাই প্রসূন কাগজ কাটার ছুরি নিয়ে আসেন। রোমির হাতের শিরা কেটে দেন প্রসূণ। যন্ত্রণায় রোমি চিৎকার করে উঠলে তাঁর মুখে প্রসূন বালিশ চাপা দেন। রোমির চিৎকারে প্রণয়ের স্ত্রী সুদেষ্ণা এসে হতবুদ্ধি হয়ে যান। প্রসূন সুদেষ্ণাকে একইভাবে হত্যা করেন। নাবালক ভাইপো প্রতীপকেও খুনের চেষ্টা করেন প্রসূন, কিন্তু নিয়মিত যোগাসন করার কারণে অনেকক্ষণ শ্বাসরোধ আটকে মৃত্যুর ভান করে পড়ে থাকে সে। বেঁচে যায় প্রতীপ।

১৯ ফেব্রুয়ারি ইএম বাইপাসে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে ট্যাংরার অটল শূর রোডে একটি বাড়ি থেকে পুলিশ তিন জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। তিনজনকে মেরে গাড়ি নিয়ে আত্মহত্যা করতে বেরিয়েছিলেন প্রণয়, প্রসূন এবং প্রণয়ের কিশোর ছেলে। কিন্তু সেটি ফলপ্রসূ হয়নি।

অভিষিক্তা মোড়ের কাছে পিলারে গাড়িটি সজোরে ধাক্কা লাগে, তিনজনকেই ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। পরে পরে তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় এন আর এসে। হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পরে প্রসূনকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় প্রসূনের স্বীকারোক্তি, প্রথমে নিজের মেয়ে, তার পরে স্ত্রী এবং শেষে বৌদিকে খুন করে, নিজেদের আত্মহত্যার পরিকল্পনা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, খুব বিলাসিতার মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করতেন দে পরিবার। পরে ঋণের দায়ে ডুবে গিয়েছিলেন। প্রতিদিন প্রায় পাওনাদারদের হাঁকডাক শোনা যেত। সেই দায়ে থেকে বাঁচতেই এই পরিণতি।

দেখুন অন্য খবর:

Read More

Latest News