ওয়েব ডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) গুনা জেলায় এক কৃষককে নৃশংসভাবে হত্যার (Farmer Murder) ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। পশ্চিমবঙ্গ কিষাণ ক্ষেত মজদুর তৃণমূল কংগ্রেসের (West Bengal Kishan Khet Majdur Trinamool Congress) উদ্যোগে বৃহস্পতিবার কলকাতায় শুরু প্রতিবাদ (Protest) ও ধিক্কার। বিক্ষোভ সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সমাজকর্মী সুমন চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার, শ্রীকান্ত মহাতো-সহ একাধিক নেতা-কর্মী।
সভায় বক্তারা এক সুরে সকলেই বিজেপি (BJP) সরকারকে কৃষকবিরোধী, জনবিরোধী ও ‘তানাশাহি’ বলে আখ্যা দেন। সুমন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আজকের ভারতে কেউই নিরাপদ নয়। বিশেষ করে কৃষকরা। মধ্যপ্রদেশের ঘটনায় আমরা দেখলাম, এক বিজেপি নেতা কীভাবে রামস্বরূপ নাগর নামে এক কৃষককে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করলেন। এ কেমন রাজত্ব? এ কেমন ‘ডবল ইঞ্জিন সরকার’? বর্বরতার চূড়ান্ত উদাহরণ।”
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডের ধৃত সঞ্জয় রায়ের বোনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের
অন্যদিকে পূর্ণেন্দু বসু বলেনন, “গত ২৬ নভেম্বর গুনা জেলার ফতেগড় এলাকায় কৃষক রামস্বরূপকে হত্যা করা হয়েছে। কারণ, তিনি তাঁর জমি জোর করে কম দামে বিক্রি করতে রাজি হননি। অভিযুক্ত মহেন্দ্র নাগর, যিনি স্থানীয় বিজেপি নেতা, তিনি গাড়ি চালিয়ে তাঁকে পিষে দেন। এই রাজত্বে কৃষকরা প্রতিদিন আত্মহত্যা করছে, জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ঠিক যেমন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, আজও সেই লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।”
জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “দেশজুড়ে এখন ভয় ছড়ানো হচ্ছে, এসআইআরের নামে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে। কৃষকরা, সাধারণ মানুষ, কেউই নিরাপদ নয়। কিন্তু মানুষ জানে কীভাবে প্রতিবাদ করতে হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময় মানুষের পাশে আছেন, থাকবেনও।”
শ্রীকান্ত মহাতোর কথায়, “বিজেপি এখন হত্যালীলার রাজনীতি করছে। আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষকে একত্রিত করব, প্রতিবাদ সংগঠিত করব। ব্রিটিশদের মতো দমননীতি চলছে, এর বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হবে।”
দোলা সেন তীব্র আক্রমণ করেন কেন্দ্রকে। তিনি বলেন, “এ দেশ এখন মোদি রাজত্বে বসবাস করছে, যেখানে হত্যাকারীরা মুক্তভাবে ঘুরে বেড়ায়। ‘মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’—এই স্লোগানের আড়ালে চলছে হত্যা ও অত্যাচার।” তিনি আরও বলেন, “মানুষ ৩০৩ থেকে ২৪০-এ নামিয়েছে, এবার ১৫০-র নিচে নামাবে। মানুষই শেষ কথা বলে।”
উল্লেখ্য, গত রবিবার মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলার ফতেগড় থানার অন্তর্গত এক গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কৃষক রামস্বরূপ নাগরকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। অভিযোগ, বিজেপি নেতা মহেন্দ্র নাগর ও তাঁর সহযোগীরা প্রথমে লাঠি-রড দিয়ে প্রহার করে, তারপর মৃতদেহের উপর গাড়ি চালিয়ে দেন। রামস্বরূপের স্ত্রী ও নাবালিকা কন্যাকে হেনস্থার অভিযোগও উঠেছে। ইতিমধ্যেই খুনের মামলা দায়ের হলেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
দেখুন আরও খবর:







