ওয়েব ডেস্ক: গ্রীষ্মের শুরুতে স্বর্গ যেন নেমে আসে কাশ্মীরের বুকে। আর সেই নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়েছিলেন পর্যটকরা। কেউ হানিমুনে, কেউ আবার সপরিবারে ছুটি কাটাতে। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কেউই আর ফিরলেন না বাড়ি। জঙ্গিদের চালানো এলোপাতাড়ি গুলিতে কয়েক মিনিটের মধ্যে রক্তাক্ত শ্মশানপুরীতে পরিণত হল পহেলগাঁও (Pahalgam Terror Attack)। কিন্তু কারা চালাল এই হামলা? অবশেষে সামনে এল সেই তথ্য।
জানা গিয়েছে, পহেলগাঁওয়ের বৈসারন ভ্যালির রিসর্টে অতর্কিত হামলা চালায় জঙ্গি সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা TRF (The Resistance Front)। জঙ্গি হানায় বিদেশি পর্যটক সহ ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘লস্কর-ই-তইবা’র (Lashkar-e-Taiba) ছত্রছায়ায় থাকা সংগঠন TRF হামলা চালানোর আগে এই এলাকায় প্রায় সাতদিন ধরে রেইকি করে। এপ্রিলে পর্যটনের ভরা মরশুমে যখন ডাল লেক, গুলমার্গ, সোনমার্গ, পহেলগাঁওয়ে পর্যটকের ঢল নেমেছে, তখনই এই ‘রিসর্ট জেহাদ’-এর ছক কষা হয়।
আরও পড়ুন: রক্তাক্ত পহেলগাঁও, ভারতের পাশে দাঁড়াল ইজরায়েল ও আমেরিকা
সূত্রের খবর, হামলার দিন জলপাই রঙের পোশাক পরে ঘোড়ায় চেপে ৬-৭ জন জঙ্গি রিসর্টে প্রবেশ করে। তারা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে আচমকা ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড গুলি চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ধর্মীয় পরিচয় যাচাই করে ‘টার্গেট কিলিং’ চালায় হামলাকারীরা। ইতিমধ্যে এই জঘন্য ঘটনার দায় স্বীকার করেছে TRF। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই জঙ্গি সংগঠন বহুদিন ধরেই কাশ্মীরে সক্রিয়। ২০১৯ সালে ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর, উপত্যকায় অস্থিরতা বাড়ে। ঠিক সেই সময় পাকিস্তানের আইএসআই-এর প্রত্যক্ষ মদতে TRF গঠিত হয়।
মূলত ‘লস্কর-ই-তইবা’, ‘তেহরিক-ই-মিলাত ইসলামিয়া’ এবং ‘ঘাজনাভি হিন্দে’র মতো জেহাদি সংগঠনের কার্যকলাপ বাস্তবায়নে TRF একটি ছায়া সংগঠনের ভূমিকা নেয়। সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছে সাজিদ জাট, সাজ্জাদ গুল ও সালিম রেহমানি। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই সংগঠন নিজেদের প্রচার ও নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স পাকিস্তানকে সন্ত্রাসে মদতের অভিযোগে ধূসর তালিকাভুক্ত করেছিল। ২০২২ সালে সেই তালিকা থেকে নাম সরাতে পাকিস্তান কৌশলে TRF-এর মতো ছদ্ম সংগঠনকে সামনে এনে জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।
দেখুন আরও খবর: