ওয়েব ডেস্ক: ১২ জুন ভারতের ইতিহাসের পাতায় যেন এক অভিশপ্ত দিন। আমেদাবাদের (Ahmedabad) মেঘানিনগরে (Meghaninagar) মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা। আকাশে ওড়ার কিছু পরেই ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭। বিমানটি জনপদে আছড়ে পড়ায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বিজে মেডিক্যাল কলেজের (B. J. Medical College) একটি ছাত্র আবাসন। চারিদিকে দেশলাই বাক্সের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে বিমানের (Air India Flight) একাধিক অংশ। ছোট ছোট টুকরোতে পরিণত হয় যাত্রীবাহী বিমানটি। গোটা এলাকা গ্রাস করে নেয় কালো ধোঁয়া। জানা গিয়েছে, যাত্রী, বিমানচালক ও কর্মী মিলিয়ে মোট ২৪২ জনকে নিয়ে লন্ডনের (London) উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল বিমানটি।
বিমানে ছিলেন গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি (Vijay Rupani)। বিমানের একজন যাত্রী বাদে বাকি ২৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানিও। এখনও এনডি আরএফ-এর (NDRF) তরফে উদ্ধারকার্য (Rescue Operation) জারি আছে। এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা আগে ঘটেছে কি না তা মনে করতে পারছেন কেউই। তবে গতকালের বিমান দুর্ঘটনা উস্কে দিচ্ছে এক পুরনো স্মৃতি। মনে করে দিচ্ছে ২১ বছর আগের এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার কথা। সেই দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছিল একাধিক প্রাণ। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন কম বয়সী এক জনপ্রিয় অভিনেত্রী (Famous Actress)।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার জেরে ভাইজান,অক্ষয় কুমার কি সিদ্ধান্ত নিলেন!
কে ছিলেন সেই অভিনেত্রী?
দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে এক পরিচিত নাম অভিনেত্রী ‘সৌন্দর্য’ (Soundarya)। তিনি তামিল (Tamil), তেলুগু (Telegu), হিন্দি (Hindi), কন্নড় এবং মালয়লাম ভাষার বহু ছবিতে অভিনয় করেছেন। মূলধারার হিন্দিভাষী দর্শকরা তাঁকে প্রথম চেনেন ‘সূর্যবংশম’ (Sooryavansham) ছবির মাধ্যমে, যেখানে তিনি অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে ‘রাধা ঠাকুর’ (Radha Thakur) চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এটি তাঁর বলিউডে (Bollywood) প্রথম কাজ ছিল। আজও এই সিনেমাটি বিভিন্ন চ্যানেল বা ইউটিউবে (Youtube) দেখা যায়।
অকালমৃত্যু এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায়
সৌন্দর্যের (Actress Soundarya) কেরিয়ার ছিল প্রায় দেড় দশকের, যেখানে তিনি ১০০ এর বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ২০০৩ সালে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং এক বছরের মধ্যেই রাজনীতির (Politics) ময়দানে পা রাখেন। তিনি বিজেপি ও তেলুগু দেশম পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন। একটি রাজনৈতিক সভায় যোগ দিতে করিমনগরের উদ্দেশে রওনা দেন একটি চার সিটের প্রাইভেট বিমানে (Four Seater Private Air) করে। তাঁর ভাইও সেই ফ্লাইটে (Flight) ছিলেন। ২০০৪ সালের ১৭ এপ্রিল সকালবেলা বেঙ্গালুরু থেকে বিমানটি রওনা দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানে আগুন ধরে যায়। মাত্র ১০০ ফুট উচ্চতায় থাকতেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং মুহূর্তের মধ্যে বিমানটি ভেঙে পড়ে। চারজন আরোহীর কেউই বাঁচতে পারেননি।
জানা যায়, সৌন্দর্য সেই সময় গর্ভবতী (Pregnent) ছিলেন এবং অভিনয় থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ভাবছিলেন। তাঁর অনুরাগীরা (Followers) আজও তাঁর অভিনীত সিনেমাগুলি দেখে স্মৃতিচারণ করেন। এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় হারিয়ে যায় এক অসামান্য প্রতিভা। গতকাল বৃহস্পতিবার আমেদাবাদে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর বিমান দুর্ঘটনা অনেককেই মনে করিয়ে দিয়েছে সৌন্দর্যের সেই দুঃখজনক বিদায়ের কথা।
দেখুন অন্য খবর