ওয়েব ডেস্ক: দেশজুড়ে মাকড়সার জ্বালের মতো ছড়িয়ে পড়েছে ডিজিটাল অ্যারেস্টের (Digital Arrest) ঘটনা! এবার প্রতারকদের ফাঁদে পা দিলেন প্রাক্তন এক ব্যাঙ্ককর্মী (Retired Banker)। দিল্লির ওই বাসিন্দার থেকে ২৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারকরা। ভুয়ো পুলিশ আধিকারিক, সিবিআই আধিকারিকের (CBI) পরিচয় দিয়ে টানা একমাস ধরে ওই ব্যাক্তিকে ডিজিটাল অ্যারেস্ট (Digital Arrest) করে প্রতারকরা।
প্রাক্তন ওই ব্যাঙ্ককর্মীর নাম নরেশ মালহোত্রা। তিনি দিল্লির বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। গত ৪ অগাস্ট একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন আসে ওই ব্যাক্তির ফোনে। ফোনের ওপারে থাকা মহিলা নিজেকে এক টেলিকম সংস্থার আধিকারিক বলে পরিচয় দেয়। ফোনে তাঁকে জানানো হয়, নরেশের ফোন নম্বর ব্যবহার করে নানান বেআইনি কাজ চলছে। তারপরই ফোন আসতে শুরু করে অন্যান্য প্রতারকদের। তাঁর ফোনে ফোন করে এক প্রতারক নিজেকে মুম্বই পুলিশের এক আধিকারিক বলে দাবি করেন। আবার ইডি ও সিবিআই আধিকারিকের পরিচয় দিয়েও তাঁর সঙ্গে একাধিক প্রতারক যোগাযোগ করে।
আরও পড়ুন: ‘শুভ মহালয়া’ পশ্চিমবঙ্গবাসীকে বাংলায় শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী মোদির
টানা একমাস ধরে ওই ব্যাক্তি ডিজিটাল অ্যারেস্ট এর শিকার হন। তাঁকে মানসিক চাপে রেখে বন্দি করে রাখে প্রতারকরা। এমনকি নিজের পরিবার ও অন্য কারোর কাছে এই নিয়ে যাতে তিনি মুখ না খোলেন সেই জন্য তাঁকে ভিডিও কলিং করে বারবার হুমকি দেয় প্রতারকরা। সব জেনেও তাই মুখ বন্ধ করে রাখতে হয়েছিল তাঁকে। নরেশ বাধ্য হয়ে কোটাক মাহিন্দ্রা, এইচডিএফসি এবং কানাড়া ব্যাঙ্ক এই সমস্ত ভুয়ো অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করেন। শেষমেশ প্রতারকরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করলে মালহোত্রার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট একেবারে ফাঁকা হয়ে যায়।
ভয় ও মানসিক চাপে জর্জরিত হয়ে প্রথমে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে না পারলেও পরে সাহস জুগিয়ে তিনি ন্যাশনাল সাইবারক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালের মাধ্যমে অভিযোগ জানান। ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিল্লি পুলিশের ইন্টেলিজেন্স ফিউশন অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক অপারেশনস ইউনিট। পুলিশের তদন্তে জানা যায়, একাধিক অ্যাকাউন্ট ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জায়গা থেকে তোলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশ ১২ কোটি ১১ লক্ষ টাকা ফ্রিজ করতে সক্ষম হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার হয়েছে প্রতারণার নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে। দিল্লি পুলিশের সাইবার ইউনিট ইতিমধ্যেই ডিজিটাল চিহ্ন অনুসরণ করছে এবং ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বাকি অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
দেখুন অন্য খবর