ওয়েবডেস্ক- পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) কাটোয়ায় (Katwa) এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। যেখানে এক বাংলাদেশি যুবক (Bangladeshi Youth) তার জেঠু ও জেঠিমাকে বাবা-মা সাজিয়ে জাল নথি (Fake Documents) তৈরি করে পাসপোর্ট (Illegal passport scam) বানিয়ে কুয়েতে (kuwait) চলে গেছে।
১০ বছর আগে ঘটে যাওয়া এই ঘটনাটি সম্প্রতি পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করার পর জেলা গোয়েন্দাদের তদন্তে ধরা পড়েছে। এই ঘটনা প্রশাসনের জাল পাসপোর্ট চক্রের বিরুদ্ধে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানা গেছে, কাটোয়া-১ ব্লকের খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের একাইহাটে বসবাসকারী প্রমথ বাগচি ও তার স্ত্রী প্রান্তি বাগচি’র বাড়িতে ১০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে বেড়াতে আসে প্রমথবাবুর দাদার ছেলে, ভাইপো সাওন বাগচি। এরপরই সাওন কৌশলে প্রমথবাবুকে নিজের বাবা এবং প্রান্তিদেবীকে নিজের মা সাজিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে। ২০১৬ সালে সেই জাল নথি ব্যবহার করে সে পাসপোর্ট তৈরি করে এবং সোজা কুয়েতে পাড়ি দেয়।
আরও পড়ুন- আতঙ্কের দামোদর, নদী ভাঙনে ভয় কাঁপছে ভাসনা গ্রামের বাসিন্দারা
সাওন বাগচি যখন তার পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করে, তখনই পূর্ব বর্ধমান জেলা গোয়েন্দা বিভাগ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে জানা যায়, সাওনের আসল বাবা-মা প্রশান্ত বাগচি ও মনিকা বাগচি এখনও বাংলাদেশে থাকেন এবং সাওন নিজেও বাংলাদেশেরই বাসিন্দা। খাজুরডিহি পঞ্চায়েত থেকেও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে যে সাওন কোনোভাবেই কাটোয়ার একাইহাটের বাসিন্দা নয়। এই বিষয়টি সামনে আসার পর গোয়েন্দা অফিসাররা স্তম্ভিত হয়ে পড়েছেন।
প্রমথ বাগচি জানিয়েছেন, তার ভাইপো সাওন যে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে, তা তারা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। তারা খেটে খাওয়া মানুষ, এবং এই ধরনের অবৈধ কার্যকলাপের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন। প্রমথবাবুর ৪ ভাইয়ের মধ্যে প্রশান্ত বাগচি সহ একজন এখনও বাংলাদেশে থাকেন এবং সেখানেই ভোট দেন। প্রমথবাবু ছোটবেলা থেকেই ভারতে বসবাস করেন।
গোয়েন্দা বিভাগের একজন অফিসার জানিয়েছেন, তারা তদন্ত করে পাসপোর্ট বিভাগে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন এবং জেলা পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিভাবে এমন জাল নথি ব্যবহার করে পাসপোর্ট তৈরি হল, তা নিয়ে গভীরভাবে তদন্ত চলছে। এই ঘটনা কাটোয়ার পানুহাট এবং একাইহাট এলাকায় পূর্বে পাওয়া বেশ কিছু ভুয়ো ভোটারের ঘটনার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ, যারা বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে এসে ভোটার তালিকায় নাম তুলে আবার উধাও হয়ে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, তারা দুই দেশেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করে।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে, কিভাবে এই ধরনের জাল নথি তৈরি হচ্ছে এবং কারা এর পেছনে মদত দিচ্ছে। কিভাবে এই অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে এসে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে এই ধরনের অবৈধ কাজ করছে, তা তদন্ত করে বের করার দাবি উঠেছে।
দেখুন আরও খবর-