ওয়েব ডেস্ক: বিজেপি স্লোগান ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’। এই স্লোগান কাজে এল না হরিয়ানায় (Haryana)। বিজেপি শাসিত এ রাজ্যে কন্যাসন্তানের জন্মহার কমেছে। এই রাজ্যে জন্মহারে দেখা গিয়েছে, প্রতি এক হাজার পুত্র সন্তানের জন্ম হলে, কন্যা সন্তানের জন্ম হচ্ছে ৯১০ জন (Haryana Sex Ratio 910 Girls per 1,000 Boys Born )। মেয়ের জন্মের অনুপাত রেকর্ড বলছে ২০২৩ সালের তুলনায় সেই হার কমেছে ২০২৪ সালে। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা ছিল ৯১৬। রিপোর্ট বলছে গত আট বছরে সর্বনিম্ন হার। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার কথা বলছে, সেখানেই বিজেপি শাসিত রাজ্যে এই চিত্র উদ্বেগের।
হরিয়ানায় অতীতে কন্যা সন্তানের জন্মের হার ৮০০-র কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ উদ্যোগের হাত ধরে হরিয়ানার চিত্র অনেক বদলে গিয়েছে। পরবর্তীতে বদল ঘটেছে মেয়েদের জন্মের হারে। রিপোর্ট বলছে, জন্মের হার ১০ বা তার বেশি কমেছে যা উদ্বেগজনক। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তৈরি অস্থায়ী তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে 516,402 শিশুর জন্ম হয়েছিল, যার মধ্যে 270,354 (মোট 52.35 শতাংশ) ছিল ছেলে এবং 246,048 (47.64 শতাংশ) মেয়ে। এক বছরে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা 24,306 কম।
তথ্য অনুসারে, 2024 সালে হরিয়ানায় সর্বাধিক সংখ্যক (57,961) বাচ্চা জন্ম নিয়ে ছিল। সে রাজ্যের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলির মধ্যে একটি নূহ জেলায়। সে নুহ-তে সব থেকে কম কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছে। রাজ্যের 22টি জেলার মধ্যে শুধুমাত্র যমুনানগর (936) এবং সিরসা (936) সন্তানের জন্ম নিয়েছিল, তার মধ্যে কন্যা সন্তান জন্ম হার কম।
2024 সালে নয়টি জেলা যমুনানগর, সিরসা, কারনাল, ভিওয়ানি, হিসার, কুরুক্ষেত্র, মহেন্দ্রগড়, সোনিপাত এবং রোহতক, 2023 সালের তুলনায় 2024 সালে কম কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছিল। এক্ষেত্রে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ করে গর্ভপাতের আশঙ্কার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রশাসন। হরিয়ানা সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি 2015 সালে”বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও (BBBP)” প্রচারাভিযান শুরু করার পর রাজ্যটি লিঙ্গ অনুপাতের উল্লেখযোগ্য উন্নতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। যা আগের তুলনায় সামান্য উন্নত হয়েছে। কিন্তু বিগত বছরে সেই সংখ্যা ফের কমেছে। এক্ষেত্রে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ করে গর্ভপাতের আশঙ্কার কারণহতে পারে। উল্লেখ্য “কন্যা ভ্রূণহত্যা ও পরীক্ষা করার জন্য বিগত দশ বছরে পিএনডিটি আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে 1,200 টিরও বেশি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অসমের খনিতে ঢুকে পড়ে জল! ঘটনায় নিহত তিন, নিখোঁজ বহু
বিজেপি শাসিত হরিয়ানার শিক্ষাব্যবস্থার শোচনীয় হাল।অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের ইউনিফাইড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন প্লাস রিপোর্টে ভয়ঙ্কর তথ্য সামনে এসেছে। হরিয়ানায় ৭০০-র বেশি স্কুলে মহিলা শৌচালয় নেই। আবার ১২০০-রও বেশি স্কুলে পুরুষদের জন্য কোনও শৌচালয় নেই। কেন্দ্রীয় রিপোর্ট অনুসারে, রাজ্যে মোট ২৩ হাজার ৫১৭টি স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে ৭৬৭ টি স্কুলে মহিলা শৌচালয় নেই। ১,২৬৩টি স্কুলে পুরুষদের জন্য শৌচালয় নেই। হরিয়ানার ১৪৬টি স্কুলে এখনও বিদ্যুৎ নেই। রাজ্যের প্রায় ৩৩ শতাংশ স্কুলেই ইন্টারনেটের ব্যবস্থা নেই। কিন্তু ৯৭ শতাংশ স্কুলেই রয়েছে কম্পিউটার।
অন্য খবর দেখুন