লখনউ: নৃশংস হত্যাকাণ্ড (Murder) ! প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে খুন করল স্ত্রী। খুনের পর দেহের ১৫টি টুকরো করা হয়। এখানেই শেষ নয়, দেহ ড্রামে ভরে সিমেন্ট দিয়ে তার মুখ এঁটে দেওয়া হল ভালো করে। হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মেরঠে। মৃত স্বামী ছিলেন মার্চেন্ট নেভি অফিসার (Merchant Navy Officer)। স্ত্রী ও তার প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সৌরভ রাজপুত (Saurabh Rajput) । ২০১৬ সালে সৌরভের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে হয় মুস্কান রস্তোগীর (Muskan Rastogi) । স্ত্রীর সঙ্গে বেশি করে সময় কাটাবেন বলে নেভি অফিসারের চাকরি ছেড়ে দেন সৌরভ। ছেলের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি পরিবার। কেন চাকরি ছাড়লেন সেই নিয়ে অশান্তি শুরু হয় পরিবারে। অশান্তি মাত্রা ছাড়ালে স্ত্রী মুস্কানকে নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করে সৌরভ।
আরও পড়ুন: গরমকালে পুলিশ কনস্টেবলদের ডিউটি আওয়ার বেঁধে দিলেন নগরপাল
২০১৯ সালে ভাড়াবাড়িতে জন্মায় সৌরভ ও মুস্কানের প্রথম সন্তান। স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে ভালই দিন কাটছিল সৌরভের। কিন্তু পরকীয়াতে জড়িয়ে পড়ে মুস্কান। হঠাৎ করে সৌরভ জানতে পারেন, মুস্কান তার বন্ধু সাহিলের (Sahil) সঙ্গে প্রেম করছেন। সৌরভ ও মুস্কানের সম্পর্কে তিক্ততা শুরু হয়। স্বামী-স্ত্রী আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেন। শেষমেশ যদিও কন্যার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পথে যাননি সৌরভ।
২০২৩ সালে ফের মার্চেন্ট নেভিতে যোগ দেন সৌরভ। কাজের সূত্রে দেশ ছাড়তে হয় তাঁকে। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি সৌরভ-মুস্কানের কন্যা ছ’বছরে পা দেয়। মেয়ের জন্মদিনের জন্য বাড়ি ফেরেন সৌরভ। এর মধ্যে মুস্কান ও সাহিলের ঘনিষ্ঠতা আরও কয়েকধাপ এগিয়ে গেছে।
পুলিশের কাছে মুস্কান ও সাহিলের স্বীকারোক্তি, সৌরভ বাড়ি ফিরলে তাঁকে খুন করবে বলে পরিকল্পনা করে তারা। গত ৪ মার্চ সৌরভের খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় তারা। সৌরভ সেই খাবার খেয়ে গভীর ঘুমের মধ্যে চলে যায়। তখনই তাঁকে ছুরি দিয়ে খুন করে সাহিল। বন্ধু এবং স্ত্রী মিলে ১৫ টুকরো করেন মার্চেন্ট নেভি অফিসার সাহিলের দেহ। সেই মাংসগুলো ফেলে দেয় একটি ড্রামে। তারপর ড্রামের মুখ সিমেন্ট দিয়ে বন্ধ করে দেয় তারা।
কয়েক দিন ধরে সৌরভকে দেখতে না পেয়ে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হতে তারা মুস্কানকে জিজ্ঞাসা করেন। প্রথমে মুস্কান বলে, সৌরভ পাহাড়ে ঘুরতে গেছে, কয়েক দিন পরে তাঁরাও যাবেন। এর পর মানালি চলে যান মুস্কান এবং সাহিল। সৌরভের ফোনটি নিজের কাছে রাখেন তারা। সকলের চোখে ধুলো দিতে সৌরভের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পাহাড়ের ছবি পোস্ট করতে থাকে তারা। কিন্তু ছেলের কোনও খোঁজ না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন সৌরভের বাবা-মা।
পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে মুস্কানকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তদন্তকারীদের সন্দেহ হতেই তারা সৌরভের বন্ধু সাহিলকে ডেকে পাঠান। পুলিশের টানা জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়েন দু’জন। তারা কিভাবে খুন করেছে সেই কথা জানান তারা। মুস্কান ও সাহিলকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ, তাদের আদালতে তোলা হবে।
দেখুন অন্য খবর: