শিলিগুড়ি: টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। ভেসে গিয়েছে একাধিক এলাকা। আতঙ্কিত স্থানীয়রা। দুর্যোগ কাটিয়ে অবশেষে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে ফিরছে স্বস্তি। রবিবারের পর থেকে আকাশ প্রায় পরিষ্কার, নতুন করে আর ধসের খবরও নেই। নদীগুলির জলস্তরও অনেকটাই নেমে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। পাহাড় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে, তবে দুর্যোগের ক্ষত রয়েছে এখনও গভীর। দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দুর্গতদের আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দার্জিলিং ও ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকায় ধস ও বন্যা পরিস্থিতির জেরে চরম দুর্ভোগে স্থানীয় বাসিন্দারা। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার মিরিক পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ১৫ দিনের মধ্যে মিরিকের দুধিয়ায় সেতু (Construction Mirik Bridge) তৈরি করে দেওয়া হবে, আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার একরাতের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও ডুয়ার্স। কার্শিয়াং, কালিম্পং ও মিরিক সহ একাধিক এলাকায় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু বাড়ি, প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৭ জন। মিরিকেই সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রবল বৃষ্টিতে বালাসন, তিস্তা ও মহানন্দা নদীর জল ফুলে ওঠায় ভাঙনের মুখে পড়ে নদীপাড়ের গ্রামগুলি। বালাসন নদীর জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে যায় শিলিগুড়ি-মিরিক সংযোগকারী দুধিয়ার লোহার সেতু। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় সোমবার উত্তরবঙ্গে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। মুখ্যমন্ত্রী হাসিমারা ও নাগরাকাটার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। মঙ্গলবার তিনি দুধিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ধসে মৃত ১৬ জনের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দেন।
আরও পড়ুন: ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পাহাড়, দুর্গতদের পাশে মুখ্যমন্ত্রী
এই বন্যা পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সেখানে গিয়টে দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করে ক্ষতিপূরণও দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার উত্তরকন্যাতেই রাত্রিবাস করবেন তিনি। বুধবার দুপুরে কলকাতা ফেরার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। মৃতদের পরিবারকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য এবং পরিবারের এক জনকে হোমগার্ডের চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘টাকা জীবনের বিকল্প নয়। কিন্তু আমরা চাই, এই কঠিন সময়ে যেন কেউ মুখাপেক্ষী হয়ে না থাকেন। তাই সরকারের তরফ থেকে এটুকু সহযোগিতা করা আমাদের সামাজিক কর্তব্য। দুর্যোগে ভেঙে যাওয়া অন্যান্য সেতুগুলিও নতুন করে নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মিরিককে ‘সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা’ বলে চিহ্নিত করে দ্রুত পুনর্বাসন ও পরিকাঠামো নির্মাণের নির্দেশও দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘যে সেতুগুলি ভেঙেছে, সেগুলি ছোট। আমাদের মিরিক সেতু নির্মাণ করতে হবে।’
দেখুন ভিডিও